কখনও চড়া রোদ। কখনও নিকষ কালো মেঘ। পথের ধারে খেলার পুতুল, পাঁপড়, জিলিপিসব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার ছিল রথের মেলার আদর্শ পরিবেশ। গঙ্গার পূর্বপাড় মায়াপুরে এবং পশ্চিম পাড় নবদ্বীপ দু’জায়গাতেই উল্টোরথে ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ।
ইস্কনের মায়াপুর চন্দ্রোদয় মন্দিরের অস্থায়ী মাসির বাড়ি থেকে তিনটি পৃথক রথে জগন্নাথ, বড়ভদ্র আর সুভদ্রা বৃহস্পতিবার বিকেলে ফিরেছেন পাঁচ কিলোমিটার দূরের রাজাপুরের মন্দিরে। শোভাযাত্রায় ছিলেন কয়েক হাজার স্থানীয় এবং বিদেশি ভক্ত।
ছবিটা অন্য রকম গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে। ইস্কনের উল্টোরথের যাত্রায় যেখানে সাড়ম্বর ঐশ্চর্যের চোখ ধাঁধানো উপস্থিতি। সেখানে নবদ্বীপের সম্বল কেবল ঐতিহ্য। |
ইতিহাসের ভুলে যাওয়া পথে উল্টো রথের যাত্রায় এক ডজনেরও বেশি শতাব্দী প্রাচীন রথ। রাজসিক উপাচারের বদলে এখানে দীন ভক্তের হৃদয় অর্ঘ্য। মহার্ঘ ঝলমলে পোশাকের বদলে বিগ্রহের কেবল পুষ্পমাল্যের সাজনবদ্বীপের উল্টোরথ যাত্রার সুরটিকে বেঁধেছে।
তবে নবদ্বীপের সব রথই যে এখন সচল এমন কিন্তু নয়। সময় বহু রথের চাকায় এঁটে দিয়েছে গতিহীনতার শৃঙ্খল। থেমে গিয়েছে সেই সব রথের যাত্রা। যেমনলক্ষণ সেনের প্রধানমন্ত্রী হলায়ুধের অধস্তন পঞ্চম পুরুষ ছিলেন জগন্নাথ গোস্বামী। তাঁর প্রবর্তিত সুবিখ্যাত বাসুদেবের রথের চাকা থেমে গিয়েছে। লোকাভাব ও অর্থাভাবের কাছে নতি স্বীকার করে বৌবাজারে উৎসবের দিনে বাসুদেব অঙ্গনে একা নিথর দাঁড়িয়ে থাকেন রথহীন বাসুদেব। আবার সোয়া এক শতাব্দী থেমে থাকার পরে নতুন করে যাত্রা শুরু করেছে শচীনন্দন বাবাজীর রথ। বাংলাদেশের চট্টাগ্রামে ওই রথের যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে নবদ্বীপে এসে পৌঁছায়। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পরে পথে নেমেছে গিরিধারী আশ্রমের ওই রথ। |