থানায়-থানায় বিক্ষোভ বামেদের
বারবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ জানিয়ে কাজ হয়নি। এ বার তাই থানায় গিয়ে পুলিশকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বামেরা। সন্ত্রাসের প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়া থানায় বিক্ষোভ দেখান পশ্চিম ন্যাকড়া বুথের বাম সমর্থকরা। পুরোভাগে ছিলেন মহিলারা। তবে কারও হাতে দলীয় পতাকা ছিল না। এ দিনই রামনগর থানায় বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম।
বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ পাঁশকুড়ার পশ্চিম ন্যাকড়া বুথের সিপিএম প্রার্থী শেখ কামুজ্জামালের বাড়িতে একদল তৃণমূলকর্মী ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। ওই গ্রামের তৃণমূল প্রার্থী হানিফ মহম্মদ হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ সিপিএমের। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পাঁশকুড়া থানায় এসে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মী-সমর্থকেরা। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশি আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধ হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা পশ্চিম ন্যাকড়া গ্রামে ফিরে গিয়ে কিছুক্ষণ ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, ভোটের কয়েকদিন আগে দলের পাঁশকুড়া উত্তর লোকাল কমিটির অফিস ভাঙচুর করেছিলেন তৃণমূলের লোকেরা। ভোটের পরও স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী ও কর্মীরা বাম সমর্থকদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। যদিও অভিযুক্ত তৃণমূল প্রার্থী হানিফ মহম্মদের দাবি, “সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে কোনও হামলা হয়নি। সিপিএম আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াতে চাইছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে ময়নার বাকচা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আড়ংকিয়ারানা গ্রামের সিপিএম সমর্থক শেখ সেহরাব আলির বাড়িতে আগুন লাগানো ও পাশেই শেখ সিরাজ আলির বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ময়নার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মুজিবর রহমানের অভিযোগ, “ভোটের দিন বাকচায় একাধিক বুথে বিরোধীদের পোলিং এজেন্ট বসতে দেয়নি তৃণমূল কর্মীরা। একতরফা ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। ভোটের পরেও সন্ত্রাস চলছে সমানে।”
তমলুক জেলা হাসপাতালে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
ময়নার ব্লক তৃণমূল কার্যকরী সভাপতি সুব্রত মালাকার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘চণ্ডীয়া নদীর চর এলাকায় সরকারি খাস জমিতে ভোটের আগের দিন সিপিএম সমর্থকরা অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে বাড়ি তৈরি করে। এই বিষয়ে পুলিশকে আগেই অভিযোগ জানানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নিজেরা ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে ও ভাঙচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
এ দিকে, পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার রামনগর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। পরে থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। বিক্ষোভের আগে প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়কের নেতৃত্বে চৌদ্দমাইল থেকে রামনগর পর্যন্ত মিছিল হয়। সিপিএমের বক্তব্য, তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২২টি অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ একটিও মামলা দায়ের করেনি। অথচ তৃণমূলের একটি অভিযোগের ভিত্তিতেই রামনগর থানার পুলিশ প্রাক্তন বিধায়ক স্বদেশ নায়ক-সহ ২২ জন সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
সন্ত্রাস প্রতিকারে পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেসও। নন্দীগ্রামের মহম্মদপুরে আহত কংগ্রেস সমর্থকদের দেখতে বৃহস্পতিবার দুপুরে তমলুক জেলা হাসপাতালে আসে প্রদেশ কংগ্রেস সহ-সভাপতি দেবব্রত বসু ও সাধারণ সম্পাদিকা মায়া ঘোষের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল। জেলা হাসপাতালে ভর্তি সাহিন আলি শাহ ও তাঁর মা আমিরন বিবির কাছ থেকে তাঁরা শোনেন, তৃণমূলের লোকেরা কী ভাবে হামলা চালিয়েছিল সেদিন। এরপর প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা দুপুর ২টো নাগাদ পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনিক অফিসে গিয়ে জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি’র সঙ্গে দেখা করতে চান। কিন্তু জেলাশাসক নিজে তাঁদের সঙ্গে দেখা না করে অতিরিক্ত জেলাশাসকের (সাধারণ) সঙ্গে দেখা করার পরামর্শ দিলে প্রতিনিধিদল অফিস থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব পুলিশ সুপারের অফিসে এসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.