রানির সামনে
দেশের হাল ধরলেন বেল

র্ডসের প্রথম দিন যত গড়াল, ইংরেজ ব্যাটিং ততই জমাট হয়ে দেখা দিল। আবার বেলা শেষে অস্ট্রেলীয় বোলিং সকালের মতোই জেগে উঠে তিনটে গুরুত্বপূর্ণ ‘ব্রেক থ্রু’ ঘটিয়ে পাল্টা লড়াইয়ে ফিরতে পেরেছে। প্রথম ছ’ওভারে ২৮-৩ হয়ে কুঁকড়ে পড়া ইংল্যান্ডের দিনের শেষে স্কোর ২৮৯-৭। কিন্তু শেষ তিন উইকেট হারায় অনিয়মিত অজি স্পিনার স্টিভন স্মিথের প্রথম পাঁচ ওভারে। যাঁর হাতে চা বিরতিরও ঘণ্টাখানেক পর প্রথম বল তুলে দিয়েছিলেন ক্লার্ক।

হ্যারিস: নতুন বলে তিন উইকেট। ছবি: এপি
ইয়ান বেল (১০৯) অ্যাসেজে উপর্যুপরি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন। আর বেলের সেঞ্চুরি-ঘণ্টা বাজলে সেই টেস্ট ইংল্যান্ড হারে না, এই রেকর্ড আগের ম্যাচেও অক্ষুন্ন থাকায় লর্ডসে প্রথম দিন মানসিক ভাবে কিছুটা এগিয়ে থাকছেন কুক-রা। আবার বেল-বেয়ারস্টো (৬৭) ক্রিজে সেলোটেপ হয়ে ওঠা দুই ব্যাটস্যম্যানকেই ফিরিয়ে দিয়ে অজি শিবিরেও গুমোট ভাব কিছুটা কাটিয়ে তুলেছেন স্মিথ (৩-১৮)।
অ্যাসেজের দ্বিতীয় টেস্টের শুরুটাই নাটকীয় আজ। মাঠ আর গ্যালারি দু’জায়গায়ই। ইংল্যান্ড অধিনায়ক কুক পরিষ্কার আবহাওয়ায় ব্যাটিং অনুকূল পরিবেশে টস জেতার পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে রয়্যাল বক্স থেকে দেখতে হল ধড়াধ্ধড় দেশের উইকেট পতন। রয়্যাল বক্সে রানির দু’পাশে ছিলেন ক্রিকেটপাগল প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ড এবং ইংল্যান্ড মেয়ে ক্রিকেট দলের অধিনায়িকা শার্লট এডোয়ার্ডস।
বাইশ গজও শুরুতেই রয়্যাল বক্সের মতোই গরমাগরম। অপসারিত অস্ট্রেলীয় কোচ মিকি আর্থার আদালতে রীতিমতো নথি দিয়ে অস্ট্রেলিয়া দলে ক্লার্ক-ওয়াটসন সম্পর্ককে সাপে-নেউলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রাক্তন কোচকে ‘ভুল’ প্রমাণ করতেই হয়তো অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টেস্টের পঞ্চম ওভারেই ওয়াটসনের হাতে বল তুলে দেন এ দিন।

দ্বিতীয় টেস্ট শুরুর আগে মাঠে হাজির স্বয়ং রানি এলিজাবেথ! দু’দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে
হাত মেলানোর পরে বসে খানিক্ষণ খেলাও দেখে যান রানি। ছবি: রয়টার্স
ওয়াটসনও ক্লার্কের অভাবনীয় ‘ভরসা’র মূল্য দিয়ে দ্বিতীয় বলেই কুকের (১২) দামী উইকেট তুলে নেন। পরের ওভারেই ট্রেন্টব্রিজে ‘ডিআরএস’ বিতর্কিত প্রথম টেস্ট নাটকীয় জেতা ইংল্যান্ডের লর্ডসে স্কোর দাঁড়ায় ২৮-৩। রানির পাশে বসে তখন হাওয়ার্ড হাততালি দিচ্ছেন।
এক ওভারে জোড়া ধাক্কা দেন এক বছরেরও বেশি পর টেস্টে নামা হ্যারিস (৩-৪৩)। তেত্রিশ বছর বয়সি পেসার নানাবিধ চোটে কেরিয়ারের মাত্র ১৩তম টেস্ট খেললেও নিজের চতুর্থ ওভারে চার বলের ব্যবধানে আউট করেন রুট (৬) আর পিটারসেনকে (২)। রুট তাঁর এলবিডব্লিউ আউটে ‘ডিআরএস’ চান। ওই সময় মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো ‘ডিআরএস’ ব্যাপারটা রানিতে বোঝাতে দেখা যায় ইংল্যান্ড মহিলা ক্যাপ্টেন শার্লটকে। এবং লর্ডসের হক-আই রায় দিল, মাঠের আম্পায়ার ধর্মসেনার সিদ্ধান্তই সঠিক।

রানির জন্য এ দিন টেস্ট শুরু হতে মিনিট পনেরো দেরি হল। কুকদের সঙ্গে পরিচয় পর্ব সেরে
রানি প্যাভিলিয়নে ফেরার পর লর্ডসের রীতি মেনে ঘণ্টা বাজিয়ে অ্যাসেজের দ্বিতীয় লড়াইয়ের সূচনা করেন
স্টিভ ওয়। অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি পরে বলেন, “বিরাট সম্মান। দিনটা সারা জীবন মনে থাকবে।” ছবি: এএফপি
তার পর থেকে স্মিথের আবির্ভাব না ঘটা পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের আর কিছু ‘ঠিক’ যায়নি। প্রথমে ট্রটের (৫৮) সঙ্গে ৯৯ রান যোগ করে ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসের ভিত গড়ার পর বেল পঞ্চম উইকেটে বেয়ারস্টোকে নিয়ে ১৪৪ রানের পার্টনারশিপ খেলেন। কাল কুকের প্রেস মিটে মহিলা সাংবাদিক অজ্ঞান হয়ে পড়লে তিনি সুস্থ হলে ইংল্যান্ড অধিনায়ক রসিকতা করেন, “তা হলেই বুঝুন আমার প্রভাব কী!” এ দিন মাঠে কুকের ‘প্রভাব’ ক্লার্কের দলকে অজ্ঞান করতে পারেনি!

অ্যাসেজের ধাক্কায় ডিআরএস নিয়ে সুর নরম
এত দিন ভারতের যুক্তি কেউ শুনতে না চাইলেও অ্যাসেজের প্রথম টেস্টে মাইকেল ক্লার্কের দল ডিআরএসের গুঁতো খাওয়ায় এ বার নড়েচড়ে বসেছে ক্রিকেট বিশ্ব। খোদ আইসিসি যে এ বার ডিআরএস নিয়ে ভারতের আপত্তিকে গুরুত্ব দিতে পারে এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেল আইসিসি চিফ এক্সিকিউটিভ ডেভ রিচার্ডসনের মন্তব্যে। তিনি কার্যত মেনেই নিলেন যে, ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম এখনও নিখুঁত হয়ে উঠতে পারেনি, এত দিন ধরে যা বলে আসছে ভারতীয় বোর্ড। লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টের লাঞ্চের সময় টিভি স্টুডিওয় বসে রিচার্ডসন বলেন, “ভারতের আপত্তির পিছনে যুক্তি আছে। কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক অবশ্যই রয়েছে। সেগুলো শুধরে নিতেই হবে। তা ছাড়া যে কোনও সদস্য দেশই আপত্তি জানাতে পারে। দশের মধ্যে অন্তত সাতটা দেশ যদি কোনও ব্যাপারে একমত হয়, তা হলেই সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব।”
প্রথম টেস্টে যে সাতবার আম্পায়াররা ভুল সিদ্ধান্ত নেন ও তার মধ্যে চারবার তা শুধরে দেওয়া হয়, এই তথ্য আইসিসি-ই জানিয়েছে। এই নিয়ে হঠাৎ বেশ চিন্তিত হয়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তনরা। এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে তাঁর স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, “এখন বুঝতে পারছি, কেন ভারত এর বিরুদ্ধে। এটা (ডিআরএস) কোনও সমস্যার সমাধান নয়, বরং নিজেই একটা বড়সড় সমস্যা হয়ে উঠছে। মাইকেল ক্লার্কের কথা শুনে তো বোঝাই গেল, এটা এখন ক্যাপ্টেনদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।” ভারত যে কথা এত দিন বলে বোঝাতে পারেনি, এখন এক ধাক্কায় তা বুঝতে শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া ও আইসিসি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.