চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকার বিদেশি লগ্নি প্রস্তাব পাততাড়ি গোটানোয় এ বার সরাসরি উদ্বেগ প্রকাশ করল কেন্দ্র। মেনে নিল, দেশের ভাবমূর্তির উপর তা বড় ধাক্কা। আদৌ ভাল বিজ্ঞাপন নয় ভবিষ্যতে বিদেশি বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রেও। লাল ফিতের ফাঁস আলগা করে লগ্নির প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, সরল ও দ্রুত করতে না-পারলে, এই সমস্যা থেকে যে নিস্তার মিলবে না, তা-ও স্পষ্ট কবুল করল তারা।
ওড়িশায় আর্সেলর-মিত্তল এবং কর্নাটকে পস্কোর ইস্পাত প্রকল্প খারিজ হওয়া প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রী প্রফুল্ল পটেল বলেন, “দুই সংস্থার এ ভাবে প্রকল্প-পরিকল্পনা থেকে সরে দাঁড়ানো আদৌ ভাল লক্ষণ নয়। এতে ভুল বার্তা যাবে দেশ-বিদেশের শিল্পমহলের কাছে। মনে হবে, বড় মাপের কল-কারখানা তৈরির পথে
|
প্রফুল্ল পটেল |
নিশ্চয়ই অনেক বাধা আছে এই দেশে।”
ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে আত্মসমীক্ষারও ডাক দিয়েছেন পটেল। তাঁর কথায়, “আমাদের আইন, প্রশাসন এবং লগ্নির বিভিন্ন নিয়ম-কানুন দ্রুত এবং স্বচ্ছ না-হলে, এ দেশে টাকা ঢালতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন না বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। তাই বাকি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লগ্নির প্রক্রিয়া সরল করতেই হবে। সেই সঙ্গে সারা দেশের আত্ম-বিশ্লেষণে বসা প্রয়োজন। দেখা জরুরি, অর্থনীতির চাকায় গতি ফেরাতে বা আরও বেশি কাজের সুযোগ তৈরি করার জন্য কী করতে পারি আমরা?”
পটেল ইস্পাত শিল্পে জোড়া প্রকল্প খারিজ নিয়ে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, এ দিন নিজেদের গতকালের অবস্থানেই অনড় থেকেছে ওড়িশা সরকার। তাদের দাবি, এর ফলে রাজ্যে কোনও মতেই ব্যাহত হবে না শিল্পায়নের প্রক্রিয়া। তা ছাড়া, প্রকল্প নিয়ে আর্সেলর-মিত্তল যে গত দু’বছর ধরেই টালবাহানা করছিল, তা-ও ফের মনে করিয়ে দিয়েছে তারা। যদিও এ নিয়ে ওড়িশা সরকারকে বিঁধতে ছাড়েনি ওই রাজ্যের দুই বিরোধী দল বিজেপি ও কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, বিদেশি লগ্নি আসার পথ প্রশস্ত করতে মঙ্গলবার একগুচ্ছ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু তার চব্বিশ ঘণ্টা পেরোতে-না-পেরোতেই ওড়িশায় ৫০ হাজার কোটির কারখানা তৈরির পরিকল্পনা খারিজ করার কথা জানায় বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত নির্মাতা আর্সেলর-মিত্তল। তাদের অভিযোগ ছিল, জমি এবং আকরিক লোহার খনি না-পাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত। আবার তার ঠিক আগের দিনই আকরিক লোহার সংস্থান না-হওয়ায় কর্নাটকে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত প্রকল্প গোটানোর কথা জানিয়েছিল বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ ইস্পাত নির্মাতা পস্কো। এই দুই কারণেই এ দিন পটেলের এই উদ্বেগ। |