বেহাল নিকাশি, বর্ষায় চলা মুশকিল পানাগড়ে
বৃষ্টি হলেই একাকার হয়ে যায় নর্দমা আর রাস্তা। নোংরা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয় কাঁকসার পানাগড়ের রেলপাড় এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের কাছে বারবার দরবার করেও কোনও ফল হয়নি।
পানাগড়ের সারদা পল্লি, কমলপুকুর, অনুরাগপুর, রেল কলোনি, ট্যাঙ্কি তলা প্রভৃতি এলাকায় প্রায় হাজার দশেক মানুষের বাস। দিনের পর দিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাড়িও। কিন্তু নিকাশি ব্যবস্থার উপরে কোনও নজর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তাঁরা জানান, বছরভর বাড়ির বর্জ্য জল জমে রাস্তার ধারের নালায়। সেই জলে মাছি ভন ভন করে। আর মশার উপদ্রবে তো আছেই। তবে বছরের অন্যান্য সময় কোনও রকমে নোংরা জল এড়িয়ে যাতায়াত করা গেলেও বৃষ্টি হলে বাড়ি থেকে বেরোনোই মুশকিল হয়ে পড়ে। কারণ তখন আর জল পেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা থাকে না, অগত্যা নোংরা জল মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হয় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
অপরিষ্কার নর্দমা।
তাঁরা জানান, পুরুষেরা কোনও রকমে পেরিয়ে গেলেও মহিলা বা শিশুদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। তবে পাকা নদর্মা যে একেবারে করা হয়নি তা নয়। কিন্তু তা সাফ করার কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় না বলে অভিযোগএলাকাবাসীর। স্থানীয় বাসিন্দা তথা একটি ক্লাবের কার্যকরী সভাপতি প্রকাশ রায় বলেন, “রেল গেট পেরিয়ে পানাগড়-সিলামপুর রাস্তার ধারে পূর্বদিকে একটি পাকা নর্দমা বানানো হয়েছিল। কিন্তু সেটি অপরিকল্পিত ভাবে বানানো হওয়ায় জল বয়ে না গিয়ে জমে থাকে।” এলাকারই পল্লব বসু, রাম মণ্ডলেরা বলেন, বাইরে থেকে দেখে অনেকেই পানাগড়কে পুর এলাকা বলে মনে করেন। কিন্তু এলাকায় এলেই তাঁরা বুঝে যান, এটি আসলে গ্রাম। তাঁরা জানান, এলাকায় একটি মজা জলাশয় আছে। তার জলতল ও নর্দমার জলতল এক হওয়ায় বর্ষায় সমস্যা আরও বাড়ে। জলাশয়ে জল বাড়লে নর্দমাও জলে ভরে যায়।” এই নোংরা জলের দুর্গন্ধে দরজা জানালাও খোলা রাখা যায় না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
বাসিন্দাদেরই একাংশ জানান, একে তো নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল, তার উপরে ডাস্টবিন না থাকায় অনেকেই বাড়ির বর্জ্য ফেলে দেন নালায়। ফলে সমস্যা আরও জটিল হয়। বৃষ্টির জল বয়ে যেতে পারে না। ঢুকে পড়ে আশপাশের বাড়ির উঠোনে। এলাকায় একটি নার্সিংহোম রয়েছে। বর্ষায় রোগীরাও সমস্যায় পড়েন। বিপাকে পড়েন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নার্সিংহোমের এক কর্মী বলেন, “বছরের পর বছর ধরে এক পরিস্থিতি। আগে আমরা বেশ কয়েকবার পঞ্চায়েতের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। হতাশ হয়ে থেমে গিয়েছি।” তিনি জানান, নাসির্ংহোমের পাশেই মজা নর্দমা। ভিতরে রোগীরাও দুর্গন্ধের জন্য কষ্ট পান। এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী তথা তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বছরের পর বছর কাজ না করে পঞ্চায়েত চালিয়েছে সিপিএম। কোনও পরিকল্পনা না করে খেয়াল খুশি মতো নর্দমা বানিয়ে দিয়েছে। তারই খেসারত দিতে হচ্ছে পানাগড়ের রেলপাড়ের বাসিন্দাদের।”
বছরভর জল জমে থাকে এভাবেই।
তবে পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান সিপিএমের শেখ সামসুজ্জোহা’র দাবি, “রেলপাড় এলাকায় ২১ লক্ষ টাকা খরচ করে পাকা নর্দমা বানানো হয়েছে। তিনি বলেন, “নর্দমা পরিস্কারের চারটি পরিকল্পনা অনুমোদন করে দিয়েছিল পঞ্চায়েত। একশো দিনের প্রকল্পে কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন চলে আসায় তা থমকে গিয়েছে। তবে নতুন বোর্ড কবে হবে সেজন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। কারণ একশো দিনের কাজ বন্ধ রাখার কোনও নিয়ম নেই।” তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েতে তাঁরা ক্ষমতায় থাকলেও শেষদিকে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বাধায় কোনও কাজ করতে পারেননি। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

—নিজস্ব চিত্র।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.