রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার পরে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিলেন ইন্টার্ন ও জুনিয়র ডাক্তারেরা। বুধবার দুপুরের ঘটনা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে জামালপুরের আঝাপুরের কাছে একটি চার চাকার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে পড়ে গেলে এক বেসরকারি অডিট সংস্থার তিন কর্মী গুরুতর আহত হন। তাঁরা সিঙ্গুর থেকে বর্ধমানের দিকে আসছিলেন। তাঁদের আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু অনেকক্ষণ বিনা চিকিৎসায় তাঁদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। আর এক রোগিনী, সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা আরিতা বিবিও পেটের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। তাঁকেও একই ভাবে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বিক্ষোভ দানা বাধে। |
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এর পরে বর্ধমান শহরের বাথানপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের চালক আসিক শেখ জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে এই নিয়ে চিৎকার শুরু করেন। তাঁর মা রোশনি বিবির অভিযোগ, এর জেরে কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার তাঁকে জরুরি বিভাগের একটি ঘরে আটকে রেখে বেদম মারধর করেন। আসিককে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন আরিতা বিবির আত্মীয় সমুদ্রগড়ের বাসিন্দা রসিদুল শেখ। সংবাদমাধ্যম গেলে জুনিয়র ডাক্তারেরা তাঁদেরও তাড়া করেন বলে অভিযোগ। পরে খবর পেয়ে বাথানপাড়া থেকে এক দল যুবককে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রোশনি বিবি। তারা জরুরি বিভাগ ঘিরে ফেলে। ইতিমধ্যেই র্যাফ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযোগ, তারা নির্বিচারে লাঠি চার্জ করে। আসিককে গ্রেফতার করা হয়। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে অভিযোগ করা হয়, আসিক শেখ মদ্যপ অবস্থায় রড নিয়ে তাদের আক্রমণ করেছেন। তার আঘাতে এক জন জুনিয়র চোয়ালের হাড় ভেঙে গিয়েছে। আরও কয়েক জন ডাক্তার আহত হন।”
এর পরেই নিরাপত্তার দাবিতে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তার ও ইন্টার্নরা। হাসপাতালের সুপার অসিতবরণ সামন্ত বলেন, “রোগীর আত্মীয়দের মারে আমাদের তিন ইন্টার্ন আহত হয়ে হাসপাতালে ভতির্র্ হয়েছেন। এর পরে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক ব্যর্থ হয়। তাঁরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।” গত বছর মার্চেও রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই ঘটনার ছবি তুলতে গেলে সংবাদমাধ্যমের কয়েক জন আলোকচিত্রীকে মারধর করা ও ক্যামেরা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁদের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতেও এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। |