‘তৃণমূলের নেতারা বিশ্বাসঘাতক, স্বেচ্ছাচারী।’ এই ভাষাতেই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি লতিফুদ্দিন বিশ্বাস এবং তৃণমূলের মহকুমা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সহ সংখ্যালঘু সেলের একাধিক কমিটির পদাধিকারী জিয়ারৎ আলি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে দলের দুই কর্মীর বিদ্রোহো স্বভাবতই অস্বস্তিতে তৃণমূল।
সুতি-১ ও ২ ব্লকে ওই দুই নেতা পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮৭টি আসনে তাদের অনুগতদের নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূল প্রার্থীদের ‘জামানত জব্দ’ করানোরও ডাক দিয়েছেন প্রকাশ্যে। লতিফুদ্দিন বিশ্বাস জেলাপরিষদে নির্দল হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েও শেষ পর্যন্ত প্রত্যাহার করে নেন। জিয়ারৎ নিজে সুতি-১ ব্লকের ১৮ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির আসন থেকে নির্দল হিসেবে লড়াই করছেন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে। জিয়ারতের অভিযোগ, “কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রার্থী বাছাই হয়েছে। জেলা ও রাজ্য স্তরের নেতাদের জানিয়েও কোনও ফল হয়নি। তাই বাধ্য হয়েছি ২৯টি পঞ্চায়েতের আসনে নির্দল হিসেবে বঞ্চিত অনুগতদের দাঁড় করাতে।”
জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি লতিফুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “নির্দল হিসেবে আমার অনুগতরা ৪৭টি গ্রামপঞ্চায়েত ও ১১টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনে লড়ছে। কয়েক জন নেতার বেইমানির জন্যই সুতিতে তৃণমূল অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে।”
দলের পদে থেকে এই বিদ্রোহ কি বেমানান নয়?
জিয়ারৎ বলেন, “দলে কে কাকে তাড়ায়? তাড়িয়ে দিলে তার জবাব দেব। কিন্তু দল থেকে পদত্যাগ করব না।” লতিফুদ্দিনের কথায়, “বহিষ্কার করলে আলাদা কথা। কিন্তু নিজে দল থেকে বেরিয়ে যাব না।”
সুতির দলীয় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক তৃণমূলের রাজ্য কমিটির সদস্য শেখ ফুরকান বলেন, “দলীয় প্রতীকে যারা দাঁড়িয়েছেন, তাঁরাই তৃণমূল। যারা বিদ্রোহ করছেন ভোট মিটলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সুতির তৃণমূল সভাপতি সুভাষ লালা বলেন, “বিক্ষুব্ধরা কিছু ভোট কাটবে ঠিকই, তবে সুতিতে একটিতেও জিতে খাতা খুলতে পারবে না তারা।” মন্ত্রী সুব্রত সাহা বলেন, “নির্দল দাঁড়িয়ে দলীয় প্রার্থীদের বেকায়দায় ফেলতে চাইছেন যারা, তারা দলের ভাল চান না। বিক্ষুব্ধরাও শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবে না।” |