দুষ্কৃতীরা জানে, যোধপুর পার্ক এলাকায় তারাই রাজা
রাস্তার ধারে হাত বিশেক দূরে দূরে এক-একটা জটলা। সেই জটলায় নিশ্চিন্তে বসে তাসের জুয়া চালাচ্ছে চার-পাঁচ জন যুবক। জটলায় রাস্তার গাড়ি আটকে গেলেও কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই তাদের। আর রাত একটু বাড়তেই ওই জটলায় চলে এল চোলাইয়ের পাউচ। দিব্যি রাস্তায় বসেই সস্তায় নেশা।
মঙ্গলবার রাতে লেক থানা এলাকার রহিম ওস্তাগর রোড ও তার সংলগ্ন গোবিন্দপুর রোডের ছবি। শনিবার রাতে যেখানে আক্রান্ত হয়েছিলেন ফরাসি তরুণ-তরুণী। সেই ঘটনার প্রায় তিন রাত পরেও ওই পাড়ার ছবিটা একই রকম।
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এই এলাকার এক দিকে যোধপুর পার্ক ও লেক গার্ডেন্সের মতো অভিজাত পাড়া। অন্য দিকে রবীন্দ্র সরোবর বা ঢাকুরিয়া লেক, যার পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে বালিগঞ্জ-বজবজ রেললাইন। লেক ও রেললাইনের মাঝের অংশে প্রচুর গাছপালা, ঝোপঝাড় আর ফাঁকা জমি। দুষ্কৃতীদের গা-ঢাকা দেওয়ার জন্য যা আদর্শ। লেক ও রেললাইন সংলগ্ন ওই এলাকায় আলোর ব্যবস্থা অপ্রতুল। রাতের অন্ধকারে কাউকে খুন করে লাশ গায়েব করতে হলে এর চেয়ে ভাল জায়গা কমই মিলবে। লেকের ঝোপঝাড়ে বোমা-বন্দুক লুকিয়ে রাখাটাও এখানকার পুরনো দস্তুর।
এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরেই এই এলাকা অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। কখনও খোলা রাস্তায় জুয়া-মদের আড্ডা, কখনও বা সামান্য ঝগড়াতেও ভোজালি থেকে ওয়ান শটার বেরিয়ে আসে। শুধু তা-ই নয়, ভরসন্ধ্যাতেও জুয়ার জটলা থেকে পথচলতি মহিলাদের উদ্দেশে কটূক্তি উড়ে আসাটাও নতুন নয়। রাত আরও একটু গভীর হলে মস্তানদের মধ্যে সংঘর্ষ বা পাড়ার লব্জে ‘অ্যাকশন’-ও এখানকার নিত্যদিনের ঘটনা। এবং সেই সব সংঘর্ষে প্রায়ই গুলি চলে, বোমা পড়ে। এখানে সামান্য গণ্ডগোলেই বেরিয়ে পড়ে ছুরি-চাকু বা পিস্তল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অধিকাংশ সংঘর্ষের ঘটনারই পুলিশে অভিযোগ দায়ের হয় না। কারণ, সংঘর্ষে জড়িত প্রায় সবারই পুলিশের খাতায় বহু বার নাম উঠে গিয়েছে।
ওই পাড়ার ছবিটা আরও স্পষ্ট হয় এক যুবকের অভিজ্ঞতা থেকে। সপ্তাহ কয়েক আগে গাড়ি নিয়ে সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। জটলায় গাড়ি আটকে গেলে কয়েক বার হর্ন দিয়েছিলেন। এর পরেই এলাকার দুষ্কৃতীরা তার উপরে চড়াও হয়। শেষ পর্যন্ত ওই যুবকই ক্ষমা চেয়ে রেহাই পান।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশি টহলও প্রায় নেই বললেই চলে। সেই সুযোগেই এখানে দুষ্কৃতীদের এত বাড়বাড়ন্ত। যদিও কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মোটরবাইক ও জিপে টহল চলে। আসামাজিক কাজকর্মের খবর পেলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”
পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায় কিছুটা রেল-পুলিশের উপরেও বর্তায়। এ বিষয়ে শিয়ালদহের রেল-পুলিশ সুপার উৎপল নস্কর বলেন, “লাইনের ধার বরাবর নজরদারি চালানোর মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। তবে এ বিষয়ে নজর দেওয়া হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.