‘অভব্য আচরণ’ স্ত্রীর সঙ্গে, কর্মীকে ঘুষি হাসপাতালে
প্রতিবন্ধী শংসাপত্র নেওয়ার জন্য সোমবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন কেতুগ্রামের এক অন্ধ মহিলা। স্বামীর সামনেই তাঁর ‘শ্লীলতাহানি’ করার অভিযোগে উঠেছে হাসপাতালের সহকারী সুপারের (নন মেডিক্যাল) বিরুদ্ধে। পরে হাসপাতালের মধ্যেই ওই মহিলার স্বামী মেরে সহকারী সুপারের নাক ফাটিয়ে দেন। হাসপাতালে ছুটে আসেন কাটোয়ার ওসি সনৎ দাস-সহ একাধিক কর্মী। সহকারী সুপারকে তুলে এনে পুলিশ গারদে আটকে রাখা হয়। রাত পর্যন্ত কোনও অভিযোগ হয়নি। সহকারী সুপার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সকাল ৮টা নাগাদ কেতুগ্রামের কেজলসা গ্রামের ওই দম্পতি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে প্রতিবন্ধী শংসাপত্র নেওয়ার জন্য আসেন। হাসপাতালের নতুন প্রশাসনিক ভবনের একতলায় ওই শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছিল। জনা ছয়েক প্রতিবন্ধী সেখানে এসেছিলেন। ওই মহিলার স্বামীর অভিযোগ, “আমরা ২-৩ জন পরে ছিলাম। আমাদের কথা শুনে হাসপাতালের ওই কর্মী (সহকারী সুপার নন মেডিক্যাল) বলেন, হাওড়া ডিআরএম দফতর থেকে রেলের ফর্ম নিয়ে আসতে হবে।” তখন তিনি জানান, তাঁরা দিনমজুরি করে সংসার চালান। তাঁদের পক্ষে হাওড়া গিয়ে রেল ভাড়ায় ছাড়ের সুবিধা পাওয়ার ওই ফর্ম আনা সম্ভব নয়। এ কথা শোনার পরে সহকারী সুপার তাঁদের বসতে বলেন। ওই মহিলা পুলিশের সামনে কাটোয়া থানায় অভিযোগ করেন, “সবার শেষে ওই কর্মী আমাদের একটা ঘরের ভেতরে ডাকেন। আমার স্বামী একটু দূরে বসেছিল। ঘরে জানালার সামনে একটা টুলে বসতে দিয়েই ওই কর্মী আমার গায়ে হাত দিয়ে বলেন কোথায় কাটা-ছেঁড়ার দাগ আছে দেখি।” তখনই প্রতিবাদ করেন মহিলার স্বামী। তিনি বলেন, আমরা হাওড়াতেই যাব, আপনি কাগজ লিখে দিন। দম্পতির অভিযোগ, তখন উনি বারবার হাওড়া যেতে নিষেধ করেন। জোর করলে একটা সাদা কাগজে লিখে দেন। মহিলার স্বামীর অভিযোগ, “ওই সাদা কাগজ নিতে আমি অস্বীকার করি। তখন একটা চিরকূট ধরিয়ে বাইরে থেকে কী একটা আনতে বলেন ওই কর্মী। তখন আমার মনে হয়, আমার সামনেই স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দিয়েছে। বাইরে গেলে আরও অসভ্যতা করবে। এই ভাবামাত্রই আমি হাত চালাই।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নাক মুখ ফেটে যাওয়ায় রক্তাক্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই কর্মী। প্রশাসনিক ভবনের কর্মীরা এসে কোজলসা গ্রামের ওই ব্যক্তিকে একটা ঘরে আটকে রাখেন। চেঁচামেচি শুনে হাসপাতালে ভর্তি অন্যান্য রোগীর আত্মীয়েরা এবং মর্গে আসা লোকজন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নেয় এবং বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। বিক্ষোভের মুখে পড়েন হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার তপন সরকার-সহ অন্যান্য চিকিৎসকেরা। কাটোয়ার ওসি সনৎ দাস বলেন, “আমরা হাসপাতালে গিয়ে সহকারী সুপারকে (নন মেডিক্যাল) আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি। ওই মহিলা অভিযোগ জানালে তদন্ত শুরু করব।”
কাটোয়া থানায় যান তাপস সরকার, সন্দীপ পাড়ি, সোমনাথ মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য চিকিৎসকেরাও। তাঁরা ওই মহিলার স্বামীর উপরে মিটমাট করার জন্য ‘চাপ’ দিতে থাকেন। এমনকী বিভিন্ন এলাকার নেতাদের সঙ্গে কথা বলিয়ে অভিযোগ না করার জন্য ‘চাপ’ দিতে থাকেন। তবে রাত পর্যন্ত অভিযোগ করার ব্যাপারে অনড় ছিলেন ওই দম্পতি।
অভিযুক্ত সহকারী সুপারের (নন মেডিক্যাল) বক্তব্য, “আমি কোনও ভাবেই এ কাজ করতে পারিনা। মনে হচ্ছ, আমাকে ফাঁসানোর জন্যই এমন ঘটনা তৈরি করা হল।” কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুপার তপন সরকারেরও অনুমান, কোনও ভাবে চক্রান্ত করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.