আমানতের টাকা ফেরত দিতে দেরি করছে আর্থিক সংস্থা, এই অভিযোগে বুধবার কাঁকসার পানাগড়ে ও দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে দু’টি বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন আমানতকারীরা। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভ চলার পরে পুলিশি মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে পানাগড়ের রোজ ভ্যালি সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এক দল আমানতকারী। তাঁদের দাবি, চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে আমানত ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাঁরা সে প্রতিশ্রুতি রাখেননি বলে অভিযোগ। আমানতকারীদের বক্তব্য, সারদা কাণ্ডের সময় তাঁরা আমানত ফেরতের দাবি জানিয়েছিলেন। তখন রোজ ভ্যালির কর্মীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নিয়ে একটি চিরকুটে ১০ জুলাই দেখা করতে বলে লিখে দেন তাঁদের। বুধবার বেশ কয়েকজন আমানতকারী এসে টাকা ফেরতের দাবি জানান। তাঁদেরই একজন রওসানা বেগম বলেন, “রমজানের মাস। খরচ বেড়েছে। টাকার খুব দরকার। ওরা তিন চারদিন ধরে ফিরিয়ে দিচ্ছে।” সংস্থার অফিসের কর্মীদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতেও জড়িয়ে পড়েন কয়েকজন আমানতকারী। পরে কাঁকসা থানা থেকে পুলিশ আসে। থানায় রোজভ্যালি কর্তৃপক্ষ এবং আমানতকারী, এই দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। রোজ ভ্যালির পানাগড় শাখার আধিকারিক স্বরূপ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। এরপরে বিক্ষোভ উঠে যায়।
এ দিনই একই দাবিতে দুর্গাপুরের একটি মলে বর্ধমান সানমার্গ সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ দেখান কয়েকজন আমানতকারী। অভিযোগ, এ দিন একদল এজেন্ট তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমানতকারীদের বক্তব্য, সারদা কাণ্ডের পর থেকে আতঙ্কে ভুগছেন তাঁরা। আগেও টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। আমানতকারী বর্ণালী কুণ্ডু, আলপনা সিংহদের অভিযোগ, “বার বার কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আমরা আর ভরসা পাচ্ছি না। তাই আমানত তুলে নিতে চাইছি।” আর এক আমানতকারী সোমনাথ রুজ জানান, তিনি ওই সংস্থায় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা আমানত রেখেছেন। তা ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদনে কর্ণপাত করছেন না। রাতে তিনি সিটি সেন্টার ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। সংস্থার আধিকারিক গোপাল দেবনাথ জানান, একমাত্র মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেই আমানত ফেরত দেওয়া হয় তাঁদের সংস্থায়। পুলিশ জানায়, অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
এর আগেও বর্ধমান সানমার্গ অফিসে আমানতকারীরা একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ২৬ এপ্রিল বেশ কিছু আমানতকারী টাকা ফেরতের দাবি জানালে সংস্থার আধিকারিকেরা তাঁদের বুঝিয়ে নিরস্ত করেন। পরে ফের ১০ মে ওই মলেই সংস্থার অফিসে জড়ো হন বেশ কিছু আমানতকারী। অভিযোগ ছিল, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও টাকা ফেরত দেয়নি সংস্থা। কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। সে দিনই একই অভিযোগে অন্ডাল থেকে এজেন্ট ও আমানতকারীদের একটি দল বিকেলে বর্ধমান সানমার্গের কবিগুরু এলাকার রানি রাসমনি রোডের অফিসে হানা দেয়। সংস্থার অফিসেও ভাঙচুর চালায় তারা।
|