ভোটের দু’দিন পরেও গোলমাল অব্যাহত জামুড়িয়ায়। বুধবার সকালে দরবারডাঙায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে তৃণমূল সমর্থকেরা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। সেখানে তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের বিরুদ্ধেও। চুরুলিয়ায় অস্ত্র-সহ এক সিপিএম নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিনই সকালে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, আসানসোলের সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী-সহ সিপিএম নেতারা ভোটের সকালে বোমায় নিহত শেখ হাসমতের বাড়ি যান। দল ওই পরিবারের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দেন অমলবাবুরা।
সোমবার ভোটের দিন সকালে জামুড়িয়ার মদনতোড় পঞ্চায়েতের মধুডাঙায় সিপিএম প্রার্থী মানোয়ারা বিবির স্বামী শেখ হাসমত বোমায় নিহত হন। তার কিছুক্ষণের মধ্যে পিটিয়ে-কুপিয়ে খুন করা হয় তৃণমূল কর্মী রাজকুমার কোড়াকে। ভোটের পরেও অশান্তি হয় জামুড়িয়ায়। সত্তর গ্রামে পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধর ও ভাঙচুরের অভিযোগ করে সিপিএম এবং তৃণমূল। সিপিএমের অজয় জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্ত অভিযোগ করেন, দরবারডাঙায় সোমবার রাত ১টা পর্যন্ত ভোট হয়। ৮৪.৫৩ শতাংশ ভোট পড়ে। ভোটের পর থেকেই তৃণমূল সমর্থকেরা বাউড়িপাড়ার লোকদের ভয় দেখাতে থাকে। এ দিন সকালে বাউড়িপাড়ায় তৃণমূল সমর্থকেরা বাড়ি বাড়ি ঢুকে হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এর পরে একটি ক্লাবও ভাঙচুর হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে তৃণমূল সমর্থকেরা সেখান থেকে পালায়। পরে নিজেদের কার্যালয় ভেঙে সিপিএমের কর্মীদের নামে পুলিশের কাছে সন্ত্রাসের অভিযোগ দায়ের করেছে বলে মনোজবাবুর অভিযোগ। |
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ চিচুড়িয়ায় তৃণমূল কর্মীরা সিপিএমের জামুড়িয়া ৩ লোকাল সম্পাদক সুকুমার সাঙ্গুইকে অস্ত্র-সহ পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মনোজবাবুর যদিও দাবি, এ দিন হাঁসডিহায় তৃণমূল কর্মীরা সুকুমারবাবুকে আটকে তাঁর মোটরবাইকের ডিকিতে একটি পাইপগান ও একটি কার্তুজ ঢুকিয়ে দেয়। পরে তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। প্রতিবাদে বিকেলে কেন্দা ফাঁড়িতে আসানসোলের সিপিএমের সাংসদ বংশগোপালবাবুর নেতৃত্বে সার্কেল ইনস্পেক্টরের হাতে একটি দাবিপত্র তুলে দেয় সিপিএম। সাংসদেরও দাবি জানান, মিথ্যা অভিযোগ করছে তৃণমূল। এর জেরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
মঙ্গলবারের পরে বুধবারও গোলমাল হয় সত্তর গ্রামে। সিপিএম সমর্থক কয়েক জন মহিলাকে কাজে যেতে ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে। এ দিন এসিপি (সেন্ট্রাল) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় জামুড়িয়া পুলিশকে নিয়ে সত্তর গ্রামে তৃণমূল ও সিপিএম সমর্থকদের একটি বৈঠকে ডাকেন। সেখানে শৌভনিকবাবু জানান, ঝামেলা হলে কড়া হাতে দমন করা হবে। এলাকা যাতে অশান্ত না হয় সেদিকে লক্ষ রাখার কথা বলেন তিনি। তৃণমূলের জামুড়িয়ার ব্লক নেতা পূর্ণশশী রায় ও তাপস চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, সন্ত্রাস চালাচ্ছে সিপিএম-ই। সিপিএম নেতা মনোজবাবু আবার তৃণমূল কর্মীদের সংযত থাকার পাল্টা আবেদন জানান। |