প্রথমে ছিল, ‘ফাইট মেরি ফাইট’। আজ হয়ে উঠল, ‘এন্টারটেনমেন্ট, এন্টারটেনমেন্ট এবং এন্টারটেনমেন্ট’।
অলিম্পিক পদকজয়ী বক্সার মেরি কমকে নিয়ে ছবি প্রযোজনা করছেন সঞ্জয় লীলা বনশালি। মেরির ভূমিকায় থাকছেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। প্রিয়ঙ্কা তাই দু’দিন কাটিয়ে গেলেন ইম্ফলে, মেরির সঙ্গে। কাল মেরির সরকারি আবাসন আর সাই-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ঘুরে দেখে প্রিয়ঙ্কা বলেছিলেন, ছবিতে মেরির জীবনের লড়াইটাই প্রাধান্য পাবে। কিন্তু আজ এক অন্য মেরিকে আবিষ্কার করার সুযোগ পেলেন তিনি। গ্রামের বাড়িতে গোটা দিনটা আজ নাচে-গানে-হুল্লোড়ে কাটল। প্রিয়ঙ্কা এ বার বলছেন, “মেরি যেমন এন্টারটেনিং, ছবিটাও তেমনই এন্টারটেনিং হবে!” |
মেরি কমের বাড়িতে। ছবি: উজ্জ্বল দেব। |
পরিচালক উমং কুমার, প্রিয়ঙ্কা-সহ মোট সাত জনের দলটি ইম্ফল আসে গত কাল। প্রথমে তাঁরা লাঙ্গোল গেম্স ভিলেজে মেরির সরকারি আবাসে যান। পাঁচ বারের বিশ্বজয়ী মেরি, মেরির স্বামী, ওঁদের যমজ সন্তানদের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক সময় কাটান তাঁরা। ঘুরে দেখেন মেরির তৈরি বক্সিং আকাদেমি। এর পর প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে ‘সাই’তে যান মেরি। সেখানে মেরির কোচ এল ইবোমচা সিংহের সঙ্গে কথা বলেন প্রিয়ঙ্কারা। জেনে নেন, মেরির জেদ আর লড়াই করার গল্প। জীবনের চড়াই ভাঙার গল্প।
ইদানীং বলিউডে বায়োপিক বা জীবনী-নির্ভর ছবির চল বেশ বেড়েছে। তার মধ্যে খেলোয়াড়রাও অনেকেই রয়েছেন। চক দে ইন্ডিয়া, পান সিংহ তোমর বা এই মুহূর্তে ভাগ মিলখা ভাগ বক্স অফিসে ভাল সাড়া পাচ্ছে। অনেক ছবিতেই শুধু জীবন-সংগ্রামের একমেটে কাহিনি না বলে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যক্তিজীবনের নানা দিক। ভাগ মিলখা-তে যেমন রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান বান্ধবীর সঙ্গে মিলখার প্রেমকাহিনিও। মেরি কমের জীবনী তৈরি করতে গিয়ে প্রিয়ঙ্কারাও তাই আমোদের উপকরণকে বাদ দিতে চান না। তার জন্য রসদও আজ তাঁরা অনেকটাই জোগাড় করে ফেললেন মেরির গ্রামের বাড়িতে।
আজ সকালেই মেরি-প্রিয়ঙ্কা সদলবলে শহর থেকে ঘণ্টাখানেক দূরে চূড়াচাঁদপুরে, মেরির গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। কাংথেই নামেই গ্রাম। জনসংখ্যা মাত্র ১৪০! মেরির বাবা-মা, ভাই-বোনেদের আলাপ করে উচ্ছ্বসিত প্রিয়ঙ্কা দ্রুত পরে নিলেন কুকি পোশাক। গান ধরলেন মেরি। বাড়ির উঠোনেই প্রিয়ঙ্কাকে কুকি নৃত্যের একটা ছোট্ট তালিম দিয়ে দিলেন তিনি। তত ক্ষণে আশপাশের গ্রাম ভেঙে পড়েছে কমদের বাড়ির চত্বরে। নাচ শেষ করে প্রিয়ঙ্কা বলেন, “দারুণ লাগল। ‘কম’ উপজাতির জীবনযাত্রা, সংস্কৃতি বুঝতে আরও সময় হাতে নিয়ে আসতে হবে। আমার সৌভাগ্য যে মেরির ভূমিকা অভিনয় করতে পারছি।” মইরাং-এ লোকটাক খ্রিস্টান মিশন স্কুল আর সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলও প্রিয়ঙ্কাকে ঘুরিয়ে দেখান মেরি। ওই দু’টি স্কুলেই পড়তেন তিনি। আপ্লুত প্রিয়ঙ্কা তার পরেই ফিরে গেলেন মুম্বই।
শ্যুটিং কবে শুরু হবে? এখনই জানাতে চায়নি ছবির ইউনিট। প্রিয়ঙ্কা শুধু বলেন, “মুক্তি পাবে সম্ভবত পরের বছর। প্রচুর খাটতে হবে। নিতে হবে প্রশিক্ষণ। ফাঁকিবাজির জায়গা নেই।” মেরি নিজেও বেজায় খুশি। বললেন, “প্রিয়ঙ্কা খুব মিশুকে। ওর ভিতরেও একটা কিলার ইন্সটিঙ্কট আছে। আমি নিজে ওকে বক্সিং-এর কায়দা শেখাব।” |