কামানের সঙ্গে গোলাবারুদ
মালসাট-প্যাকেজ
হা চমকপ্রদ ঘটনাটি ঘটেছিল চোদ্দো বছর আগে, এই শহরেই। অনেকে বলেন, তদানীন্তন স্যাঁকা পাউরুটির মতো বাংলা সাহিত্যকে ঝুঁটি ধরে নাড়িয়ে দিয়েছিল ফ্যাতাড়ুদের সেই প্রথম ল্যান্ডিং। আর ল্যান্ডমাইনটি ফাটল কাঙাল মালসাট উপন্যাসে। দশ বছর পরে নবারুণ ভট্টাচার্যের উপন্যাস অবলম্বনে সুমন মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কাঙাল মালসাট’-এর মুক্তির সূত্রে বাঙালির ছবিঘরে ঘটতে চলেছে অভিনবত্বের বিস্ফোরণ। সেন্সরের কাঁচি খেয়েছে বিতর্কিত এই সিনেমা। কিন্তু ফ্যাতাড়ুদের ঠেকায় কে? অতএব মধুজা মুখোপাধ্যায় তৈরি করে ফেলেছেন কাঙাল মালসাট গ্রাফিক নভেল। প্রকাশিত হবে সেটি, সঙ্গে থাকবে সিনেমার চিত্রনাট্য, যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণের দৃশ্য-সহ সব কাঁচি-খাওয়া-এবং-না-খাওয়া সংলাপই পড়তে পাওয়া যাবে। বইয়ের সঙ্গে বিনামূল্যে দেওয়া হবে সেন্সর্ড সংলাপের অডিয়ো, ‘দণ্ডবায়স’ কবীর সুমনের কণ্ঠে ছবির একমাত্র গানটিও। বিশিষ্ট সেই কামান থেকে শুরু করে বিবিধ গোলাবারুদ সকলই এই গ্রাফিক নভেলে হাজির। বাংলা সাহিত্যের এই নূতনটি পাতার পরে পাতা চুপি চুপি উড়ে এসে ঢুকেছিল কড়চার মেলবক্সে।
তার নির্মাতা মধুজা বলছেন, “নিছক উপন্যাসটার চিত্ররূপ দিইনি। উপন্যাস, সিনেমা, দিনের পরে দিন কালীঘাট অঞ্চলে আমার তোলা ছবি সব মিলিয়ে গত প্রায় দু’বছর ধরে কাজটা করছিলাম। উপন্যাসের ঘটনাগত বিন্যাসটাও প্রয়োজনে বদলেছি। চোক্তার পরিবারের চরিত্রগুলোকে সব ক্ষেত্রে আঁকিনি, সিনেমার স্থিরচিত্র ব্যবহার করেছি। ঔপন্যাসিকের যে জমাট লেখার ধরন, বর্ণনার যে প্রায় মহাকাব্যিক উদাসীনতা, সরাসরি ব্যবহার করেছি সেই অংশগুলো। সেখানেই এটা নতুন বলে আমার মনে হয়। জার্মান শিল্পী ওটো নাকেলের ‘আ নভেল ইন পিকচার্স’ অনুপ্রাণিত করেছে আমাকে।” পরিপূর্ণ মালসাট-প্যাকেজের প্রকাশক ‘সপ্তর্ষি’র পক্ষে সৌরভ মুখোপাধ্যায় বলছেন, “শুধু গ্রাফিক নভেল নয়, সিডি ও চিত্রনাট্য মিলিয়ে পনেরো দিন আগে পরিকল্পনাটা গ্রহণ করি। এক সময় প্রেক্ষাগৃহেই সিনেমার পুস্তিকা বিক্রি হত। সেই ধারাটাই আবার ফিরিয়ে আনতে চেয়েছি নতুন আঙ্গিকে।” সুমন মুখোপাধ্যায় বলছেন, “উপন্যাসটা যেমন অভিনব, সিনেমাকে ঘিরে বাংলায় গ্রাফিক নভেলের জন্ম হল এটাও অভিনব। তাই আমরা চেয়েছিলাম পুরোটা এক সঙ্গে হোক।” ২ অগস্ট প্রিয়া-য় এই সিনেমার প্রিমিয়ার শোতেই পাওয়া যাবে সীমিত সংস্করণ মালসাট-প্যাকেজ। সঙ্গে কড়চাতেই আত্মপ্রকাশ করল গ্রাফিক নভেলের প্রচ্ছদ-পৃষ্ঠা (বাঁ দিকে) ও ভিতরের একটি পৃষ্ঠা (ডান দিকে)।

নীতি ও ন্যায্যতা
‘বাঙালি পাঠকরা বইটি পড়বেন, পরীক্ষানিরীক্ষা করবেন, এই আশা নিয়ে বইটি প্রকাশ করতে পেরে নিজেকে খুবই ভাগ্যবান বলে মনে করছি। সে আশা ধোপে টিকবে কি না, তা নিয়েও আমার আগ্রহের ও উৎকণ্ঠার অভাব নেই।’ সদ্য প্রকাশিত নীতি ও ন্যায্যতা-র (আনন্দ) সম্পর্কে লিখেছেন অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। এটি তাঁর দি আইডিয়া অব জাস্টিস গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ। জাস্টিস বা ন্যায্যতার ধারণা ও প্রয়োগ বিষয়ে চার বছর আগে প্রকাশিত গ্রন্থটি ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হয়েছে, অনেকগুলি ভাষায় অনূদিতও। বাংলা সংস্করণটি আক্ষরিক অর্থেই দশে মিলে কাজ করার একটি দৃষ্টান্ত অষ্টাদশ অধ্যায়ের বইটি অনুবাদ করেছেন দশ জন। এই সংস্করণের অন্যতম সম্পাদক কুমার রাণার কথায়, ‘এই বহুত্ব আমাদের কাজটাকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে’। ১৯ জুলাই কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে এই বই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে। অন্য দিকে, শহরে আজ সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক প্রকাশ ঘটবে ভারতীয় অর্থনীতি ও সমাজ বিষয়ে জঁ দ্রেজ ও অমর্ত্য সেনের নতুন বই অ্যান আনসার্ট্ন গ্লোরি-রও (অ্যালেন লেন/ পেঙ্গুইন)। বিদ্যোৎসাহী বলে (এখনও) পরিচিত মহানগরের পক্ষে সপ্তাহটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞান-সাংবাদিক
১৯৬৮। চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন হরগোবিন্দ খোরানা। ভারতেই জন্ম, শিক্ষাদীক্ষাও প্রায় সবটাই এখানে, তাঁর এ হেন শিরোপায় গর্বিত সারা দেশ। ফ্রন্ট পেজ স্টোরি হবে আনন্দবাজারে। কিন্তু লিখবে কে? নোবেল কমিটির বার্তাটি যেন সাংকেতিক। জেনেটিক কোড। প্রোটিন সিন্থেসিস। কে পাঠকদের বোঝাবে এ সব? দায়িত্ব বর্তায় এক জনের কাঁধে। যিনি রিপোর্টার নন, কিন্তু ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে গিয়েছিলেন আমেরিকায়। আর পাঠ নিয়েছিলেন বিজ্ঞান সাংবাদিকতায়। গৌরকিশোর ঘোষের হুকুম শুনে মানুষটি প্রথমে কিঞ্চিৎ ভীত। মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময়। ইন্টারনেট নেই, নেই উইকিপিডিয়া। তুই পারবি, বলে সাহস জোগান গৌরদা। এবং বেরিয়ে পড়েন লেখক। এই শহরে জীববিজ্ঞানীদের দরজায় দরজায় ঘুরে প্রায় দৌড়ে অফিসে ফিরে এক-এক পাতা লেখেন, আর তা প্রেসে যায়। তিনি সমরজিৎ কর, বাংলায় বিজ্ঞান সাংবাদিকতার পথিকৃৎ। ‘দেশ’-এ দশকের পর দশক যাঁর লেখায় বাঙালি জেনেছে বিশ্ববিজ্ঞানের হেঁশেলের খবর। সম্প্রতি প্রয়াত হলেন তিনি। শিক্ষকতা ছেড়ে সাংবাদিকতার নেশায় যোগ দেন যে সংস্থায়, সেই ইন্ডিয়ান সায়েন্স নিউজ অ্যাসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে আজ তাঁর স্মরণসভা। বসু বিজ্ঞান মন্দিরে, বিকেল ৪টেয়।

কবি অনুরাগিণী
শুরুতে কাদম্বরী দেবী। পরে রানি মহলানবিশ, ইন্দিরা দেবী, আরও অনেকে। রবীন্দ্রনাথের রচনার আড়ালে রয়ে গিয়েছেন কত অনুরাগিণী। অক্ষয় চৌধুরী টমাস মুরের মেলোডিজ আবৃত্তি করে শোনাতেন, রবীন্দ্রনাথ ইংল্যান্ডে গিয়ে শিখলেন তার সুর, লুসি স্কটের কাছে। কবির স্মৃতি লুসির আমৃত্যু সঙ্গী। ‘নৌকাডুবি’ পড়ে বালিকা রাণু ‘রবিবাবু’কে চিঠি লিখত। কবির অনুরাগিণীদের নিয়ে ‘গল্ফ গ্রীন শ্রুতিকথা’ ১৬ জুলাই সন্ধে সাড়ে ছ’টায় শিশির মঞ্চে প্রযোজনা করছে শ্রুতিনাটক ‘কবি অনুরাগিণী’। অন্য দিকে ইন্দুমতী সভাগৃহে ২০ জুলাই সন্ধে ছ’টায় অনুষ্ঠান ‘রবি ঠাকুর: মা ও আমি’। মা যদি হন রবীন্দ্রানুরাগী, তবে মা ও মেয়ের অনুভবের জগতে এক অলক্ষ সেতু রচনা করে দেন রবীন্দ্রনাথই। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী কয়েক জন মেয়ে জানাবেন তাঁদের জীবনে মায়ের অবদান। রবীন্দ্রনাথকে অবলম্বন করেই গান ও কথায় শ্রদ্ধার্ঘ্য, আয়োজনে ‘অন্বেষা’।

ফ্রয়েডের চোখে
বিশ শতকের গোড়ায় সিগমুন্ড ফ্রয়েড মনঃসমীক্ষণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ধর্মকে বোঝার চেষ্টা করেছিলেন। তারই ফসল দ্য ফিউচার অব অ্যান ইলিউশন (১৯২৭)। পাশ্চাত্য সারস্বত সমাজে বহু চর্চিত বইটি এ বার বাংলায় অনুবাদ করলেন কালীপদ বক্সি (একটি কল্পসৃষ্টির ভবিষ্যৎ, এবং মুশায়েরা), তিন দশক আশুতোষ কলেজে দর্শনের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন তিনি, মনঃসমীক্ষণ গবেষণা কেন্দ্র ‘সমীক্ষণী’রও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ম্যাক্সমুলার ভবনে ‘সমীক্ষণী গ্রন্থমালা’র প্রথম বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন অমিয় দেব। ‘সিগমুন্ড ফ্রয়েড-এর ধর্ম সম্পর্কিত চিন্তাভাবনা’ শীর্ষকে বলবেন পুষ্পা মিশ্র, সভাপতি স্বপন চক্রবর্তী।

রবীন্দ্রপত্রাভিধান
রবীন্দ্রনাথের প্রকাশিত-অপ্রকাশিত, গ্রন্থিত-অগ্রন্থিত চিঠিপত্র সবই এ বার গ্রন্থাকারে। মূল বাংলা এবং বঙ্গানুবাদ-সহ মূল ইংরেজি চিঠির এই মহাসংকলনে থাকবে রবীন্দ্রনাথের সমস্ত চিঠি, যার আনুমানিক সংখ্যা ৭০০০। সঙ্গে প্রাপকপরিচিতি, পত্রপ্রসঙ্গ, টীকা ও পরিশিষ্ট। বিপুল এই সংকলন পরিকল্পিত হয়েছে ১৮ খণ্ডে। বিজন ঘোষাল সংকলিত ও সম্পাদিত রবীন্দ্রপত্রাভিধান-এর প্রথম খণ্ডটি প্রকাশিত হবে ১৮ জুলাই পাঁচটায় কলেজ স্ট্রিটে এ মুখার্জির দফতরে পূর্ণেন্দু পত্রী সম্মেলন কক্ষে। থাকবেন শঙ্খ ঘোষ, সুধীর চক্রবর্তী, চিন্ময় গুহ প্রমুখ। বইটির প্রচারে একটি নমুনা-পুস্তিকাও প্রকাশ করেছে প্রকাশক ‘পত্রলেখা’। প্রাপকের নামের বর্ণানুক্রমে সংকলনটি বিন্যস্ত হচ্ছে।

পাত্রম
দেশের নানা প্রান্তের হস্তশিল্প এক ছাদের তলায়। ক্রাফ্টস কাউন্সিলের উদ্যোগে চলছে বিশেষ প্রদর্শনী ‘পাত্রম’। শুধু বাসন নয়, মিলবে গেরস্থালির রকমারি টুকিটাকি। পন্ডিচেরির পটারি, রাজস্থানের ব্লু-পটারি, মেঘালয়ে তৈরি কচুরিপানার ঝুড়ি, বাক্স, তেপায়া টেবিল, মধুবনি চিত্রিত কাঠের ট্রে, খাগড়াই কাঁসার বাসন, মুর্শিদাবাদের কাঁথা ইত্যাদি। আইসিসিআর-এর ‘কমলা’য় ২০ জুলাই পর্যন্ত (১০-৭টা, রবিবার সহ)।

ফরাসি চলচ্চিত্র
টনি গ্যাটলিফ থেকে মহমৎ-সালেহ্ হারুন এমন সব সেরা চলচ্চিত্রকারের ছবি নিয়ে শুরু হচ্ছে ফরাসি চলচ্চিত্রোৎসব। টনি ছবি করেছেন পূর্ব বা মধ্য ইয়োরোপে ব্যক্তিমানুষের সংকট নিয়ে, আর হারুন আফ্রিকার শাদ-এর গৃহযুদ্ধে আক্রান্ত ব্যক্তি বা পরিবারের সমস্যা নিয়ে। ২১-২৩ জুলাই নন্দনে, আলিয়ঁস ফ্রঁস্যাজ-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ। ২১ জুলাই সন্ধে ৬টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে থাকবেন আলিয়ঁস-এর পক্ষে অ্যালিস স্ট্র্যাং এবং চলচ্চিত্রকার শেখর দাশ। অন্য দিকে গোর্কি সদনে ১৮ জুলাই সন্ধে সাড়ে ছ’টায় উদ্যাপন হবে ‘ম্যান্ডেলা ডে’, নেলসন ম্যান্ডেলা’র ৯৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক প্রদর্শনীর আয়োজন। তাঁকে ঘিরে পোস্টার, বই, ফোটোগ্রাফ, জার্নাল, মিউজিক ভিডিয়ো, ডকুমেন্টারি ইত্যাদি, চলবে ৩০ জুলাই পর্যন্ত, প্রতিদিন ৪-৭টা। উদ্যোগে আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাব ও রাশিয়ান সেন্টার অব সায়েন্স অ্যান্ড কালচার।

শ্রুতিনাটকে সাজাহান
শহরে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সার্ধশতজন্মবর্ষও ক্রমে গুরুত্ব পাচ্ছে। ২১ জুলাই পূর্বশ্রী প্রেক্ষাগৃহে ‘প্রতিশ্রুতি’ আয়োজন করেছে শ্রুতিনাটকে ‘সাজাহান’। নামভূমিকায় জগন্নাথ বসু, আওরঙ্গজেব শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। মঞ্চটিও ঐতিহাসিক ভাবে সাজানো হবে। এ দিকে দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও রজনীকান্ত সেন স্মরণে ‘ডাইমেনশন ফোর’-এর আয়োজনে ২৬ জুলাই সন্ধে সাড়ে ছ’টায় রবীন্দ্রসদনে দ্বিজেন্দ্রকবিতা পাঠ করবেন অপর্ণা সেন। গানে নূপুরছন্দা ঘোষ। প্রকাশিত হবে কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায় ও নূপুরছন্দার দ্বিজেন্দ্রগীতি নিয়ে অ্যালবাম ‘পরম্পরা’।

কাঠামোর খোঁজে
দৈনন্দিনের আদলটা পুরোপুরি রেখেও এই লেখক তাঁর রচনায় দিনাতিক্রমী একটা ছন্দ তৈরি করে তুলতে পারেন, অনুভব এবং ধ্যানের জগতের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন তাঁর প্রতিদিনের দেখাশোনার জগৎ। আর এই মিলে-যাওয়াটা তাঁর গদ্যভাষায় এমন একটা স্বতন্ত্র স্বাদ নিয়ে আসে, লেখক হিসেবে যা তাঁকে বিশিষ্ট করে রেখেছে। লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ। তাঁর আর নবনীতা দেবসেনের উপস্থিতিতেই গান কবিতা গল্পপাঠ ও স্মৃতিচারণায় পালিত হবে সুভাষের জন্মদিন। ১৭ জুলাই শরৎ সমিতি সভাগৃহে সন্ধ্যা ৬টায়। এই ব্যতিক্রমী শব্দশিল্পী-র (১৯৪৮--২০১০) নামাঙ্কিত স্মারক বক্তৃতা দেবেন বিশ্বজিৎ রায়: ‘মণ্ডপ: হারানো কাঠামোর খোঁজে’। সুভাষ ঘোষাল স্মৃতি পুরস্কার গ্রহণ করবেন নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী। নিবেদনে সুভাষ ঘোষাল স্মৃতিরক্ষা কমিটি।

স্মরণ
নকশাল আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন, কারাবাসও করতে হয়েছে। ১৯৭৭-এ মুক্তি পেয়ে কলুটোলায় ইউনিভার্সিটির তলায় পুরনো বইয়ের ব্যবসা শুরু করেন স্বপন চক্রবর্তী। এই ব্যবসার সূত্রেই বহু জনের সঙ্গে যোগ, খবর রাখতেন কার কী প্রয়োজন, খুঁজে এনে দিতেন দুর্লভ বই-পত্রিকা। অসুস্থ হয়ে চলে গেলেন হঠাৎই। ১৭ জুলাই বিকেল ৫ টায় থিয়জফিক্যাল সোসাইটি হল-এ তাঁর স্মরণসভা।

সায়নদেব
কলকাতার থিয়েটারের যে জিনিসটার অভাব এখানে সবচেয়ে বেশি বোধ করি সেটা হল প্রবহমানতা, সেখানে নাট্যদলগুলো লাগাতার শো করে, কিন্তু এখানে কোনও নাটকের শো বড়জোর দশটা। ঠিক এ কারণেই কলকাতার জন্যে মনখারাপ লাগে। বলছিলেন বেঙ্গালুরুর নাট্যদল স্মরণিক-এর কর্ণধার সায়নদেব ভট্টাচার্য। প্রাচ্য আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাংলা নাটকের উৎসবে (১৫-২৪ জুলাই) বেলঘরিয়ার কামারহাটি নজরুল মঞ্চে ২০ জুলাই তাঁরা মঞ্চস্থ করবেন সাম্প্রতিক নাটক ‘সদিচ্ছার রঙ বদল’। মহেশ দত্তানি’র নাটক থেকে এটি রূপান্তরে মেঘনাদ ভট্টাচার্য, মুরারি রায়চৌধুরীর সংগীত ও বিলু দত্তের মঞ্চসজ্জা। সদ্য তিরিশ-পেরনো সায়নদেব মেঘনাদের পুত্র, পাঁচ বছর বয়স থেকেই মঞ্চে: ‘বিভাসজেঠুর (চক্রবর্তী) নির্দেশনায় সফদর হাসমির একটি রূপান্তরিত নাটক ‘গিরগিটি’তে অভিনয় করেছিলাম ছেলেবেলায়, মঞ্চে ওটাই আমার প্রথম বড় অভিনয়।’ পড়াশোনার টানে বেঙ্গালুরুতে, এখন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সেখানেই। সোম থেকে শুক্র নিশ্ছিদ্র কর্মযাপনের পর শেষ দু’দিন নাট্য চর্চা। তার সূত্রেই বছর খানেক হল স্মরণিক-এর জন্ম। ‘থিয়েটারের ভিতর দিয়ে কেমন ভাবে মানবিক হয়ে উঠব, সে জীবনদর্শন বাবার নাটক দেখেই শেখা। আর চেষ্টা করছি বাংলা নাটককে যত দূর পারি বিস্তৃত করতে।’ স্বীকারোক্তি সায়নদেবের।


শতবর্ষে বিজ্ঞানী
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার পর সংবর্ধনাসভায় সত্যেন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘আপনিও তো কাঁঠাল খেলেন শেষ পর্যন্ত।’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কথার উত্তরে কল্যাণীর উপাচার্য সুশীলকুমার মুখোপাধ্যায় বললেন, কাঁঠাল তো ভালই, মিষ্টি। তবে আঠাটা বেছে খেতে হয়। ছাত্রদের সঙ্গেও ছিল তাঁর এমন রসবোধের সম্পর্ক। জন্ম জানুয়ারি ১৯১৪, বরিশালে। ১৯৩৬-এ রসায়নে ডিগ্রি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৩৮-এ মাটি নিয়ে গবেষণায় যুক্ত হন ইম্পিরিয়াল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন অধ্যাপনায় ছিলেন ১৯৪৭--’৫৭। এর মাঝে মৃত্তিকা-বিজ্ঞানী সি ই মার্শালের অধীনে কাজ ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি-তে। ইউনেস্কোর তরফে বিজ্ঞান প্রসারে ইন্দোনেশিয়ায় যান ১৯৫৭-য়। তিন বছর পর ফিরে আসেন কাল্টিভেশন অব সায়েন্স-এ। বিয়ে হয় কৃষ্ণকামিনী রোহতগির সঙ্গে। ছাত্রছাত্রীরাই ছিল ওঁদের পরিবার। ১৯৬৮-১৯৭০ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। ১৯৭৬-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন। বসু বিজ্ঞান মন্দিরের নির্দেশকও ছিলেন তিনি। সুশীলবাবুই ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব সয়েল সায়েন্স-এর প্রথম ভারতীয় সাম্মানিক সদস্য। লিখেছেন অনেক, সম্পাদনা করেছেন ইন্ডিয়ান জার্নাল অব হিস্ট্রি অব সায়েন্স এবং এভরিম্যানস সায়েন্স। ২০০৬-এর ১৮ নভেম্বর প্রয়াত হন। ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি উদ্যোগী হয় ওঁর জন্মশতবর্ষ পালনে। সঙ্গে রয়েছে এশিয়াটিক সোসাইটি, রামকৃষ্ণ মিশন ও নানা প্রতিষ্ঠান। মূল অনুষ্ঠান ৩০-৩১ জুলাই, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বসু বিজ্ঞান মন্দিরে। থাকছে স্মারক বক্তৃতা ও জাতীয় আলোচনাচক্র।
   

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.