সিপিএম ছেড়ে কংগ্রেস, তৃণমূলে
একদা সহকর্মীরা ভোটে যুযুধান
হাজি কেতাবুদ্দিন। হামিদুর রহমান বিশ্বাস। এসারুদ্দিন মণ্ডল।
তিন জনই সুজাপুর বিধানসভার কেন্দ্রের প্রাক্তন সিপিএমের প্রার্থী। তিন জনই পরাজিত। কেউ রুবি নূরের বিরুদ্ধে হেরেছেন, কেউ মৌসম নূরের বিরুদ্ধে আবার কেউ বা আবু নাসের খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে হেরেছেন। তিন জনই এবার কালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের মালদহ জেলা পরিষদের ৩৫ নম্বর আসনে প্রার্থী হয়েছেন। এক সময়ের এই তিন সর্তীথ এখন প্রতিদ্বন্দ্বী। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নন। সুজাপুর, গয়েশবাড়ি, বামনগ্রাম, মোসিমপুর, জালালপুর এলাকায় তাই পুরোদমে প্রচার করছেন তিন জনই।
এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদে ৩৫ নম্বর আসনে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন হাজি কেতাবুদ্দিন। কংগ্রেস প্রার্থী হামিদুর রহমান বিশ্বাস ও তৃণমূল প্রার্থী এসারুদ্দিন মণ্ডল।
হাজি কেতাবুদ্দিন। হামিদুর রহমান বিশ্বাস। এসারুদ্দিন মণ্ডল।
গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে সুজাপুরের সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক প্লাস্টিক ব্যবসায়ী হাজি কেতাবুদ্দিন এ আসনেই ১২ হাজারের বেশি ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ বার নিবার্চনে প্রাক্তন দুই সতীর্থ যথেষ্ট বেগ দিচ্ছেন তাঁকে। তিনি বলেছেন, “দল যখন হামিদুর রহমান বিশ্বাস ও এসারুদ্দিন মণ্ডলকে সুজাপুর বিধানসভা নিবার্চনে প্রার্থী করেছিল তখন জেতাতে চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। আমিও দু’বার বিধানসভা নিবার্চনে দাঁড়িয়ে জিততে পারিনি। এখন দলের এক সময়ের সহকর্মীর বিরুদ্ধে প্রচার করতে হচ্ছে।” তারঁ অভিযোগ, “ওঁরা বিশ্বাসঘাতক। ক্ষমতার লোভে দল ছেড়েছে। রাজ্যে শান্তি ফেরাতে, নারী নিযার্তন বন্ধে মানুষ সিপিএমের পাশে থাকবে।”
২০০৬ সালে কংগ্রেস প্রার্থী গনি খান চৌধুরীর বোন রুবি নূরের বিরুদ্ধে সিপিএম প্রার্থী ছিলেন হামিদূর রহমান বিশ্বাস। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক ৩০ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। এরপর ২০০৯ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৫ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে কংগ্রেস প্রার্থী হামিদুর রহমান বিশ্বাস বলেন, “আমি অন্তর থেকে বরাবর কংগ্রেস সমর্থক ছিলাম। কয়েকটি বিষয়ে অভিমানে একসময়ে সিপিএমে যোগ দিয়েছিলাম। পরে দেখলাম সিপিএমের বিভিন্ন গোষ্ঠী আমাকে মেনে নিতে পারছে না। সে কারণে ফের কংগ্রেসে ফিরে আসি। সুজাপুর বরাবরই কংগ্রেসের ঘাঁটি। গনি খান চৌধুরীর নামেই নির্বাচন হয়। বরকতদা (গনি খান চৌধুরী) যে ভাবে মানুষের জন্য কাজ করেছেন আমিও সে ভাবেই সুজাপুরের মানুষের কাজ করতে চাই।” এসারুদ্দিন মণ্ডল এ বার ওই আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী। ২০০৯ সালে সুজাপুর উপনিবার্চনে গনিখান চৌধুরীর ভাই আবু নাসের খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। আবু হাসেম খান চৌধুরী সম্প্রতি কংগ্রেসে যোগ দিলেও চলতি বছরে তৃণমূল কংগ্রেসের সুজাপুর অঞ্চল সভাপতির সহরুল বিশ্বাসের উপর হামলার অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হন। তার পরেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ও জেলা পরিষদের প্রার্থী হন। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছিল। সুজাপুরে যে সমস্ত মানুষ আমাকে ভালোবাসে তাঁদের কথাতেই আমি সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। সুজাপুরের জন্য কংগ্রেস কিংবা সিপিএম কেউই কাজ করেনি।”
এই অবস্থায় এ বার পঞ্চায়েতের ভোটে যিনি জিতুন না কেন, সুজাপুর সিপিএমের কর্মীরা এখন থেকে বলতে শুরু করেছেন, ওই আসনে সিপিএমের ঘরের ছেলেই জিতূবে। যদিও দলের নিচুতলার এই দাবি মেনে নিতে নারাজ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র। তিনি এ দিন এই প্রসঙ্গে বলেন, “হামিদুর রহমান বিশ্বাস ও এসারুদ্দিন এক সময়ে আমাদের দলের প্রার্থী ছিলেন ঠিক। তবে এখন লড়াইয়ের ময়দানে ওরা শত্রু শিবিরের লোক।”

ফিরলেন উদয়ন গুহ
প্রায় এক মাসের মাথায় জেলায় ফিরলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ। ১৫ জুন দিনহাটার খট্টিমারিতে বামেদের সঙ্গে সংঘর্ষে রতন বর্মন নামে এক তৃণমূল সমর্থক খুন হন। দলীয় সূত্রের দাবি, ওই দিন ঘটনার আগেই তিনি কলকাতা রওনা হন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা রুজু করে পুলিশ। তার পর থেকে উদয়নবাবু আর জেলায় ঢোকেননি। বুধবার রাতে প্রায় এক মাসের মাথায় তিনি কোচবিহারে ফেরেন। পুলিশ সূত্রের খবর, বিধায়কের জেলায় ফেরার খবর পাওয়ার পরেই তার গতিনিধি নজরে রাখতে দিনহাটা থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশের পদস্থ কর্তারা। উদয়নবাবু বলেন, “পুলিশ চাইলে গ্রেফতার করুক। তবে ওই খুনের ঘটনায় পুরোপুরি ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল জানান, তদন্তের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অফিসাররা দেখছেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য উদয়নবাবুর গ্রেফতারের দাবি থেকে সরছেন না বলে জানিয়েছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.