প্রতীক বদলে ভোটে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী
গেরুয়া-সাদা-সবুজ ফ্লেক্সে হাত জোড় করে প্রার্থীর ছবি। ফ্লেক্সের ওপরের দিকে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি। তবে, প্রতীক চিহ্ন ‘পিক আপ ভ্যান’। দলের প্রতীক ‘ঘাসফুল’ না পেয়ে ‘পিকআপ ভ্যান’ চিহ্নে ভোটে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতির পুত্র। প্রার্থী নিজে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলার সহ সভাপতি। কোনও রাখ-ঢাক না করে প্রচার ব্যানার-ফ্লেক্সে নিজেকে ‘বিক্ষুব্ধ তৃণমূল’ প্রার্থী বলেও পরিচয় দিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটে দলের টিকিট পাওয়া নিয়ে শাসক দলের অন্দরের ক্ষোভ প্রকাশ্যে রাজগঞ্জ ব্লকে। রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কুকুরজান ‘বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল প্রার্থীর পোস্টার-ফ্লেক্সে ছয়লাপ। তবে পিছিয়ে নেই তৃণমূলের সরকারি চিহ্ন ‘ঘাসফুল’ নিয়ে ভোটে লড়া প্রার্থীও। তিনিও তাঁর সমর্থনে এলাকা জুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁর পোস্টার-ব্যানারেও মমতার ছবি। দুই-তৃণমূলের লড়াইয়ে বিব্রত দলের জেলা নেতারা।
এই সেই ব্যানার। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থী বাছাই করতে দলের একাংশ নেতার নামে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ চালানোর অভিযোগ তুলে রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কুকুরজান ২২ নম্বর আসন থেকে প্রার্থী হন মোতাহার হোসেন। তিনি নিজে দলের যুব সংগঠনের জেলার সহ সভাপতি, মোতাহেরর বাবা মোশারফ হোসেন তৃণমূলের রাজগঞ্জ ব্লক সভাপতি। এ বারে তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুকুরজান থেকে দলের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। বাবা মোশারফও ব্লকের প্রার্থী বাছাই কমিটিতে ছিলেন। যদিও দলের একাংশের অভিযোগ, কমিটির এক শীর্ষনেতার হস্তক্ষেপে মোতাহার বাদ পড়েন। সেই টিকিট দেওয়া হয় দলের যুব নেতা লক্ষ্যমোহন রায়কে।
কুকুরজান এলাকার দলের একাংশ নেতা কর্মীদের অভিযোগ, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই বহিরাগত প্রার্থীকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশের নির্বাচনী ক্ষেত্রের বাসিন্দা কোনও প্রার্থীকে তাঁদের মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে দাবি করে মোতাহার হোসেনকে প্রার্থী করা হয়েছে বলে একাংশ তৃণমূল সমর্থক দাবি করেছেন। মোতাহারবাবু বলেন, “এলাকার কর্মী ও সাধারণ বাসিন্দাদের চাপেই ভোটে প্রার্থী হয়েছি। বহিরাগত একজনকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তে দলের ক্ষতি হতো। সেই ক্ষতি আটকাতেই প্রার্থী হয়েছি।” দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো এবং নিজের প্রচারে দলনেত্রীর ছবি ব্যবহার করায় ‘শোকজ’ করা হয়েছে মোতাহার হোসেনকে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দোপাধ্যায় আমার নেত্রী। তাঁর অনুপ্রেণাতেই রাজনীতি করছি, তাঁর আদর্শকে রেখেই লড়াই করছি। আর লড়াকু নেত্রীর শিষ্য বলে নিজেকে বিক্ষুব্ধ বলতে ক্ষতি নেই। দল আমাকে শোকজ করেছিল, তার উত্তর পাঠিয়েছি।” মোতাহারের বাবা দলের ব্লক সভাপতি মোশারফবাবু দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে দাবি করলেও ছেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায় তাঁর নেই বলে জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “মোতাহার আমার ছেলে হলেও, ওঁকে সমর্থন করছি না। আর ওঁর বিরুদ্ধে আমার ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও এক্তিয়ার নেই। ও যুব সংগঠনের জেলা নেতা, তাই যুব তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি।” জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শুভ্রজিত্‌ কর বলেন, “রাজগঞ্জে একটা ক্ষোভ বিক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে পদক্ষেপ হবে। দল বিরোধী কাজ বরদাস্ত হবে না।”
রাজগঞ্জের বিধায়ক তথা ব্লকের প্রার্থী বাছাই কমিটির সদস্য বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “দলে আলোচনা করছি। ওর বিরুদ্ধে দল বিরোধী কাজের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” তবেতৃণমূল কংগ্রেসের সরকারি প্রার্থী লক্ষ্যমোহনবাবু এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “দল আমার পাশেই রয়েছে। আর বহিরাগতটা কোনও যুক্তি হতে পারে না। কারণ আমি রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকারই বাসিন্দা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.