আলিপুরয়ার ও কালচিনির সাতটি আসনে সরাসরি লড়াইয়ে বামফ্রন্টের দুই শরিক। সিপিএম এবং আরএসপি প্রার্থীরা নিজেদের দলের প্রতীক নিয়েই লড়াই করছে ওই আসনগুলিতে। পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই বামফ্রন্টগত ভাবেই লড়াই হচ্ছে বলে একাধিক বার জলপাইগুড়ি জেলা বামফ্রন্টের তরফে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু আসনে নিচুতলায় ঐক্য না হওয়ায় শরিকি কাজিয়া তুঙ্গে। জেলায় সার্বিক বাম ঐক্যের লক্ষ্যে জেলার ব্লক স্তরেও বামফ্রন্ট কমিটি গঠন করে আসন বন্টন প্রক্রিয়া সেরেছে জেলা বামফ্রন্ট। কয়েক দফায় আলোচনার পরেও কালচিনি ও আলিপুরদুয়ারে সমঝোতা সূত্রে না বের হওয়ায় দুই দলই প্রার্থী দিয়েছে বলে খবর। কালচিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি আসনে সরাসরি লড়াই হচ্ছে সিপিএম-আরএসপির। ওই আসনে কংগ্রেস সহ অন্য আঞ্চলিক দলেরও প্রার্থী রয়েছে। চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে ১টি, আলিপুরদুয়ার পরোর পাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের চারটি আসনেও শরিকদের লড়াই হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়া পঞ্চায়েত সমিতিতেও শরিকি লড়াই হচ্ছে আলিপুরদুয়ার মহকুমায়। কালচিনি পঞ্চায়েত সমিতির জঁয়গার একটি আসনেও সিপিএম-আরএসপির লড়াই হচ্ছে। সিপিএমের জলপাইগুড়ির জেলা সম্পাদক তথা জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় সব আসনেই বামফ্রন্টগত ভাবে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে। তবে কিছুু আসনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বাসিন্দাদের আবেগ মর্যাদা দিয়ে আরএসপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছেন। সেই আসনগুলিতে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হচ্ছে।” একই সুরে আরএসপির জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, “কিছু আসনে দুই দলের প্রার্থীরাই লড়ছেন। তবে এখনও বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা চলছে। যদিও ৯৮ শতাংশ আসনে বামফ্রন্টগত প্রার্থী দিয়েছি।”
জেলা নেতাদের ‘বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই’ -এর সুর স্থানীয় নেতাদের গলায় শোনা যায়নি। আরএসপির কালচিনি জোনাল কমিটি সম্পাদক গৌরী সেনগুপ্ত বলেন, “কালচিনি এবং চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের যে আসনগুলি বামফ্রন্টগত ভাবে আমরা পেয়েছিলাম সেখানে সিপিএম প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সিপিএমের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ফল মেলেনি।” কালচিনির গুদাম লাইনের আরএসপির প্রার্থী উমেশ রজব বলেন “শেষ মুহুর্তে সিপিএম দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দাড় করিয়ে দেওয়ায় ঐক্য ধরে রাখা যায়নি।” ওই আসনে সিপিএম প্রার্থী রাজেশ রাউত বলেন, “গতবছর এই আসনে সিপিএম জেতে। আসন আরএসপিকে ছেড়ে দেওয়া কোনও যুক্তি হতে পারে না।” কালচিনির সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক স্বপন দাস বলেন, “আলোচনায় জয়ী আসন ধরে রাখার কথা হয়। আরএসপি কথা রাখেনি।” আলিপুরদুয়ার ১ ব্লক আরএসপি নেতা সুব্রত রায় বলেন, “পরোর পাড় গ্রাম পঞ্চায়েতে ৪টি আসনে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছে। এতে দলীয় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাই আরএসপি রাজনৈতিক ভাবে লড়তে চান।” আরএসপি নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস বলেছেন, “মুখে বাম ঐক্যের কথা বললেও সিপিএম তা মানেনি। কোথাও আবার নির্দলকে সমর্থন করছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। সিপিএমের নেতাদের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা চালানো হচ্ছে।” |