কিছু এলাকা থেকে জল নামলেও এখনও বহু মানুষ জলবন্দি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায়।
কুমারগ্রাম এবং আলিপুরদুয়ারের ৫টি ত্রাণ শিবিরের আশ্রিত সকলেই বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরেন। কুমারগ্রাম এবং শামুকতলার প্লাবিত এলাকাগুলি থেকেও জল নেমে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে বাজারগাঁও ১ সহ এলাকাতে নতুন করে বেশ কিছু গ্রামে জল ঢুকে পড়ায় মানুষকে অন্যত্র সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। ডালখোলা পুর ও পঞ্চায়েত এলাকারও বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত। গোয়ালপোখরের পাঞ্জিপাড়া, সাহাপুর ২, সাহাপুর ১, ধরমপুর সহ একাধিক অঞ্চল এখনও জলমগ্ন। ইসলামপুর পুরসভা লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকারও ফার্ম কলোনি, অজিতবাস কলোনি সহ বহু এলাকাতে বাসিন্দারা জলবন্দি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ৪০টি মৌজাকে নাগর নদী প্লাবিত করেছে। |
১০ হাজার পরিবার জলবন্দি। প্রায় দু’হাজার হেক্টর কৃষি জমি এখনও জলের তলায়।
অন্য দিকে, দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের সুতইল, বজ্রাপুকুর এলাকায় নদীবাঁধ ভেঙে হুহু করে জল ঢুকে নীচু এলাকা প্লাবিত করেছে। বুধবার রাত থেকে পুনর্ভবা বিপদসীমার প্রায় ২ মিটার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। কাঁটাতোর এলাকায় প্রায় ১৫০ মিটার নদী বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকে যায়। গঙ্গারামপুরের বিডিও সঞ্জয় হাওলাদার বলেন, “এলাকার অন্তত ১০০টি পরিবার জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ৩০টি পরিবারকে বিভিন্ন স্কুলে স্থানান্তর করা হয়েছে।” এ দিন গঙ্গারামপুরের নারায়ণপুর এলাকায় পুর্ণভবা নদীতে স্নান করতে নেমে জলে ডুবে এক বালকের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুব্রত বিশ্বাস (৯)। |
করলা নদীর জলে প্লাবিত জলপাইগুড়ির হাসপাতাল পাড়া। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডুয়ার্স এবং কোচবিহারে এ দিন থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। সঙ্কোশ, ধারসী এবং রায়ডাক নদীর ভাঙনে আলিপুরদুয়ার মহকুমা ক্ষতিগ্রস্ত। কুমারগ্রামের নিমাইপাড়া, রির্টানপাড়া, ধান্দ্রাপাড়া এলাকায় সংকোশ নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত। এ দিন শামুকতলায় ধারসী নদী এবং পূর্ব চকচকা এলাকায় রায়ডাক নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। দেওডাঙা এলাকায় তোর্সা নদী ভাঙন প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কালচিনির মেন্দাবাড়িতে বাসরা নদী, ডিমা নদী ভাঙনে বঞ্চুকামারি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের এলিঙ্গা এলাকায় কুলিক নদীর বাঁধে ফাটল দেখা যাওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাজ্যের পরিষদীয় সচিব তথা জেলার বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও সেচমন্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলেছে।” এদিন তিনি জেলার বিভিন্ন বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ দিন তুফানগঞ্জের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধীও।
|