দলছুট নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূলের এক দল কর্মী-সমর্থকের সংঘর্ষে জেরে ১ মহিলা সহ ৯ জন জখম হয়েছেন। ধূপগুড়ির পূর্ব মাগুরমারি গ্রামে বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কয়েক দফায় ওই সংঘর্ষ হয়। জখম এক তৃণমূল কর্মীকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দুপক্ষের ৬২ জনের নামে ধূপগুড়ি থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে। পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাঁরা এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসে থাকলেও এই পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করছেন। ধূপগুড়ি থানার আই সি যুগল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে ধৃতদের আদালতে তোলা হয়েছে।”
মাগুরমারি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৫/১২২ নম্বর অংশের বাসিন্দারা জানান, গত পাঁচ বছর ধরে এলাকা তৃণমূলের দখলে ছিল। পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে কিছু তৃণমূল সমর্থক দল ছেড়ে দেন। সত্যেন্দ্রনাথ রায় নামে প্রাক্তন তৃণমূল কর্মী নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ান। বুধবার রাতে বেশ কিছু তৃণমূল সমর্থক নির্দলের নির্বাচনী কার্যালয়ে চড়াও হয়ে ঘর ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
রাতে তাঁরা নির্দল সমর্থক একটি বাড়িতে চড়াও হয়ে এক মহিলা সহ দুজনকে মারধর করেন বলে নির্দল প্রার্থীর দাবি। ওই ঘটনার জেরে রাতে দুই পক্ষের মধ্যে এক দফা সংঘর্ষ হয়। দু’দলের লোকজন লাঠি সোটা নিয়ে হামলা চালায়। গ্রামে পুলিশ পৌঁছলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তৃণমূলের অবশ্য দাবি, ওই অংশ সিপিএম প্রার্থী দাঁড় না করিয়ে নির্দলের হয়ে প্রচার করছে। তাঁরা তৃণমূলের পোষ্টার ছিঁড়ছে। বুধবার রাতে পোষ্টার ছিঁড়তে বাধা দেওয়া হলে নির্দল প্রার্থীর হয়ে সিপিএম-এর লোকজন তাঁদের ৩ কর্মীকে মারধর করে বলে অভিযোগ। তাঁদের সকলকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আজিজুল হক নামে এক জনকে জলপাইগুড়ি রেফার করা হয়। বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষ বাঁধে। সেখানে দু’জন জখম হয় বলে দলছুট তৃণমূলের অভিযোগ।
নির্দল প্রার্থী সত্যেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “গত বার পর্যন্ত আমি এবং আমার অনুগামীরা তৃণমূল করেছি। পঞ্চায়েতের কাজকর্মে আমরা আপত্তি তুলি। সকলে মিলে নাগরিক মঞ্চ তৈরি করা হলে আমাকে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করানো হয়। হারার ভয়ে এখন তৃণমূলের লোকজন আমাদের আক্রমণ করছেন। ৩৬ জনের নামে আমরা হামলার অভিযোগ করেছি।”
জলপাইগুড়ি জেলা যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল নেতা গুড্ডু সিংহ অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “সিপিএম প্রার্থী না দাঁড় করিয়ে নির্দলের প্রার্থীর হয়ে আমাদের লোকজনের উপর বারবার হামলা চালাচ্ছে। আমাদের কর্মীদের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজে ওই এলাকার লোকজন সন্তুষ্ট।” সিপিএম-এর ধূপগুড়ি জোনাল কমিটির নেতা মানিক চক্রবর্তী বিস্মিত। তাঁর মন্তব্য, “ওই ঘটনায় কেন আমাদের দলের নাম যোগ করা হচ্ছে তা বুঝতে পারছি না। ক্ষুব্ধ তৃণমূলের লোকজন নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে। এই নিয়ে বিবাদ।” |