বেহাল রাস্তায় নিত্য দুর্ঘটনার জেরে রোজই যানজট হচ্ছে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রাস্তায়। ৪৫ কিলোমিটার পথ যেতে সময় লাগছে প্রায় আড়াই ঘন্টা। তবে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি যাতায়াতের বাস মিললেও ছোট গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবার ৩১(ডি) জাতীয় সড়কে প্রাথমিক মেরামতির জন্য দরপত্র খোলার কথা। জাতীয় সড়ক ৯ ডিভিশনের মুখ্য কার্যনির্বাহী বাস্তুকার নির্মল মন্ডল বলেন, “প্রাথমিকভাবে রাস্তা মেরামতির জন্য ৫ কোটির কাজ শুরু হবে এ মাসে। টেন্ডার জমা পড়েছে।” |
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রাস্তায় যানজট। |
কী অভিজ্ঞতা নিত্যযাত্রীদের?
রোজই বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। বাস নেই তাই অফিস যেতে না পেরে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে অনেককেই। সারিয়ামে চাকরিজীবী জয়ন্তী বিষ্ণু বলেন, “শিলিগুড়ি যাওয়ার সুপার বাস থাকলেও, ছোট গাড়ি গুলি কম যাতায়াত করছে। তাই অফিস যেতে অসুবিধেয় পড়তে হচ্ছে।” বাস না মেলায় ছোট গাড়ি ভাড়া করে অফিসে যেতে হচ্ছে বীণা চক্রবর্তীদের মতো অনেকেই। কারণ বর্ষায় বেহাল হয়ে পড়েছে। তার উপর ট্রাক, ট্রেলারের লম্বা লাইন। তাই জলপাইগুড়ি থেকে যে বাসগুলি শিলিগুড়ি যাচ্ছে সেগুলি দেবনগর, জহুরি, তালমা হয়ে পৌঁছচ্ছে বেলাকোবায়। সেখান থেকে আমবাড়ি দিয়ে ফুলবাড়ি ক্যানেলের রাস্তা হয়ে শিলিগুড়িতে ঢুকছে ঘুরপথে। কয়েকটি সুপার বাস চলছে। তবে সেগুলি সব জায়গায় দাঁড়ায় না। সে জন্য রানিনগর, সারিয়াম, দশদরগা, পানিকৌড়ি, তালমাহাট, বন্ধুনগরের বাসিন্দাদের ছোট বাসের উপব নির্ভর করতে হয়। সেগুলির অধিকাংশ না চলায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
যে সব বাস ঘুরপথে যাচ্ছে সেগুলি শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি যাতায়াতে সময় নিচ্ছে অন্তত আড়াই ঘন্টা। রাস্তার জেরে রোজই খারাপ হয়ে পড়ছে বিভিন্ন গাড়ি। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ির নিত্যযাত্রীদের অনেকেই জানান, এ কয়েকদিন বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে, আর রোদ উঠতেই দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। নিত্যযাত্রী তাপস রায় বলেন, “রোদ উঠতেই কাদা শুকিয়ে দিয়ে ধূলো উঠতে শুরু করেছে। যাতায়াত করতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।” |
জাতীয় সড়ক বেহাল বাগডোগরায়। |
বৃষ্টিতে বেহাল শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি রাস্তাটি। বাস ইউনিয়নের তরফে প্রশাসনকে অনেকবার লিখিত অভিযোগ জানান হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয় নি। তাই রোজই নাজেহাল হতে হচ্ছে যাত্রীদের। বাসের এই দুর্ভোগ এড়াতে অনেকেই ট্রেনেই যাতায়াত শুরু করেছেন। গোটা রাস্তায় তৈরি হয়েছে ছোট ছোট গর্ত। যেন এক একটি পুকুরে পরিণত হয়েছে। রাস্তার এই বেহাল দশার কারণে কমে গিয়েছে বাসের সংখ্যা। তাই রাতের দিকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। রোজ প্রায় প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তবে সাময়িক মেরামতির কাজ শুরু হবে এ মাসেই। তবে রাস্তার কাজের জন্য ৯৭ কোটি টাকার যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তা কেন্দ্রের কাছে পাঠান হবে বলে জানান কার্যনিবার্হী বাস্তুকার নির্মল মণ্ডল। |
বৃহস্পতিবার ছবি দু’টি তুলেছেন সন্দীপ পাল ও বিশ্বরূপ বসাক। |