ঘরছাড়া হয়েও গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু, নিজেই ভোট দিতে যেতে পারলেন না এলাকায়।
পাত্রসায়র ব্লকের বালসি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর আসনে সিপিএম প্রার্থী অনীক শ্যাম বৃহস্পতিবার সারাটা দিন বাঁকুড়ায় কাটালেন। এ দিন দুপুরে মোবাইলে বললেন, “বামিরা গ্রামে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল ইচ্ছে ছিল ভোট দেওয়ার জন্য। কিন্তু, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য আর সাহস করে যেতে পারিনি।”
এক সময় যা ছিল তাদের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি, সেই গোটা পাত্রসায়র ব্লকে এ বার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩৪টি আসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির ২৮টি আসনের মধ্যে সিপিএমের একমাত্র প্রার্থী হলেন অনীক। জেলা পরিষদের একটি আসন বাদ দিলে আর কোনও আসনেই সিপিএম এ বার প্রার্থী দিতে পারেনি। দলের পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সদস্য রঞ্জিত শ্যামের ছেলে এই অনীক। তিনি ডিওয়াইএফের পাত্রসায়র জোনাল কমিটির সভাপতিও। বিধানসভা ভোটের আগে অনীক ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের উপরে অত্যাচারের একাধিক অভিযোগ ছিল। পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। বর্তমানে বাবা-ছেলে জামিনে ছাড়া রয়েছেন। এলাকার আরও অনেক সিপিএম নেতা-কর্মীর মতো তাঁরাও দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া।
গ্রামছাড়া অবস্থাতেই বিষ্ণুপুরে মহকুমাশাসকের অফিসে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছেন অনীক। এ দিন শুধু অনীক একা নন, তাঁর বাবা ও স্ত্রী-ও বামিরা গ্রামে ভোট দিতে যেতে পারেননি। অনীকের বক্তব্য, “পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে ভোট দিতে হয়তো যেতে পারতাম। কিন্তু, তাতে ঝুঁকি ছিল। তাই আমরা আর ভোট দিতে গেলাম না।” তাঁর অভিযোগ, “আমার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভোটারদের ব্যাপক ভয় দেখিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা নব পাল। আমাদের দলের সমর্থক অনেকেই তাই ভোট দিতে যেতে পারেননি।” এই অভিযোগ শুনে তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সহ-সভাপতি নব পালের প্রতিক্রিয়া, “দলের ভেকধারী কিছু নেতার প্ররোচনায় অনীক শ্যাম ভোটে দাঁড়িয়েছেন। গত বিধানসভা ভোটের আগে অনীক ও তাঁর বাবা রঞ্জিত শ্যাম এলাকায় যে সন্ত্রা চালিয়েছেন, তাতে জনরোষ তৈরি হয়েছে। সেই জনরোষের ভয়েই ওঁরা গ্রামে ঢোকার সাহস পাচ্ছেন না।” তাঁর আরও দাবি, শান্তিপূর্ণভাবে ওই এলাকার দু’টি বুথেই ভোট হয়েছে। কাউকে ভয় দেখানো বা হুমকি দেওয়া হয়নি। জেলা পরিষদের পাত্রসায়র উত্তর আসনের সিপিএম প্রার্থী সাধন বাগদি অবশ্য ভোট দিয়েছেন। |