চরম দারিদ্রে বন্ধ বাধর্ক্য ভাতা
হ্যামিল্টনের স্মৃতি আঁকড়ে দিন কাটছে শুকদেবের
য়স একশো পেরিয়ে গিয়েছে। বাকশক্তি হারিয়ে শয্যাশায়ী। এ হেন একজন মানুষের বার্ধক্যভাতা বন্ধ আট মাস। পরিবারের লোকের অভিযোগ, গত সাত বছর বার্ধক্যভাতা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎই সেই ভাতা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভাতার জন্য প্রশাসনের কাছে দরবার করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ঘটনাটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গোসাবার আরামপুরের কাটাখালি এলাকার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটাখালির বাসিন্দা শতায়ু শুকদেব রায় ১৯০১ সাল থেকে স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিলটনের দুটি বোড় ‘ডাক চিপ’ ও ‘হাউস বোড়’ (ছোট স্টিমার)-এর দেখভাল করতেন। হ্যামিলটন ট্রাস্টে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করতেন তিনি। পরিবার সূত্রেই জানা গেল, ১৯৩২ সালের ৩০ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন স্যার ড্যানিয়েল হ্যামিলটনের আমন্ত্রণে গোসাবায় এসেছিলেন তাঁর পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় দেখতে, সেই সময় শুকদেব রায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ডাক চিপ বোড়ে গোসাবায় পৌঁছে দিয়েছিলেন।
অশীতিপর শুকদেব রায়। —নিজস্ব চিত্র।
গোসাবার বিদ্যা নদীর ধারে সামান্য জমির উপরে মাটির বাড়ি। বর্তমানে শুকদেববাবুর পরিবারে স্ত্রী প্রমীলা রায়, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। ছোট ছেলে আগেই মারা গিয়েছে। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। ছেলেরা দিনমজুরের কাজ করে কোনও রকমে সংসার চালান। প্রমীলাদেবী জানান, গত আয়লার সময় সব কিছু ভেসে গিয়েছে। যে হ্যামিলটন ট্রাস্টে উনি কাজ করতেন তার কাগজপত্রও সব ভেসে গিয়েছে। তাঁর কথায়, “বড় অভাবের সংসার। পরিবারে ছেলেদের তেমন রোজগার নেই। কোনওমতে দিন চলে। তার উপর ওদের বাবা ভীষণ অসুস্থ। কথা বলার শক্তিও হারিয়ে ফেলেছেন। উঠতে-বসতে পারেন না। চিকিৎসা করানোর টাকা নেই। তবু বার্ধক্যভাতা বাবদ কিছু টাকা পাওয়া যেত। কিন্তু সেও গত আট মাস ধরে বন্ধ। কেন তা জানি না। ওই টাকাটা পেলে কিছুটা সুরাহা হত।”
গোসাবার বিডিও সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “উনি বাধর্ক্যভাতা পাচ্ছিলেন। হঠাৎ তা বন্ধ হল কেন জানি না। এমনটা হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। প্রতি বছর বেনিফিশিয়ারিদের একটা তালিকা তৈরি হয়, তাঁরা বেঁচে আছেন না মারা গিয়েছেন তা জানার জন্য। সে ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখতে হবে। আশা করছি, ওই পরিবারের টাকা পেতে কোনও সমস্যা হবে না।”
জমিজমা বলতে শুকদেববাবুর কিছুই নেই। গোসাবার বিদ্যানদীর ধারে সামান্য জমির উপরে মাটির বাড়ি। প্রমীলাদেবী জানান, গত আয়লার সময় সব কিছু ভেসে গিয়েছে। শুকদেববাবু যে হ্যামিলটন ট্রাস্টে কাজ করতেন সেই সব কাগজপত্রও সব ভেসে গিয়েছে। প্রমীলাদেবীদের আক্ষেপ, হ্যামিলটন সাহেবের ও রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত ট্রাস্টের একজন কর্মী কোনও সরকারি সাহায্য না-পেয়েই মৃত্যুর দিন গুনছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.