|
|
|
|
দুর্ঘটনায় তিন বন্ধুর মৃত্যু, জখম আরও ৩ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বর্ধমান ও আরামবাগ |
দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তিন বন্ধুর। তাঁদের নাম শুভঙ্কর রায় (২৫), পিন্টু মালিক (২৬), বসন মান্ডি (৩০)। প্রত্যেকেই আরামবাগের মনসাতলার বাসিন্দা। পেশায় শ্রমিকের কাজ করতেন। রায়নার মীরেপোঁতা বাজারের কাছে বুধবার গভীর রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’জন বন্ধু একটি চার চাকা গাড়িতে করে ফিরছিলেন। অনুমান করা হয়েছে তাঁরা রথের মেলা দেখতে গিয়েছিলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ সেহারা বাজার ও মোগলমারির মাঝে উল্টো দিক থেকে আসা একটি মাল-বোঝাই ট্রেলারের সঙ্গে তাদের গাড়িটির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। তিন জনকে আহত অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ট্রেলারটিকে আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসি পলাতক। |
|
শোকার্ত পরিবার। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র। |
ফিরতে ভোর হতে পারে জানিয়ে অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শুভঙ্কর। বৃহস্পতিবার সকালে বুল্টি রায় নামের ওই বধূ খবর পান, দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন স্বামী। শুভঙ্করের বন্ধু বসন ও পিন্টুর মৃত্যুর খবরও তত ক্ষণে পৌঁছেছে। নবকুমার মুদি, তার ভাই সুকুমার ও পঞ্চা মালিক নামে আরও তিন বন্ধু এখনও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কেউ কথা বলার অবস্থায় নেই। বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, তিন তরতাজা যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় মুহ্যমান মনসাতলা। বুল্টি বেহঁশ অবস্থায় এলোমেলো কথা বলছেন। প্রতিবেশী মহিলারা তাকে সামলানোর চেষ্টা করছিলেন। শুভঙ্করের মা কল্পনা রায় দেওয়ালে মাথা ঠুকছিলেন। শুভঙ্কর-পিন্টুরা বর্ধমানের দিকে কেন যাচ্ছিলেন, তা পরিবারগুলির কারওরই জানা নেই। পিন্টুর মেয়ের বয়স এক বছর। তাঁর স্ত্রী-মাও কথা বলার অবস্থায় নেই। বাবা রূপকুমার মালিক বললেন, “রাত ১০টার পরে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় শুধু বলেছিল, আসছি। ভাবলাম কোথায় রথের মেলায় যাচ্ছে। কিংবা কোনও বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছে। সকালে খবর পেলাম সে নেই।” নদী বাঁধের ধারে বাড়ি অবিবাহিত বসন মান্ডির। দাদা কানাই মান্ডি বলেন, “ভাই কাউকে কিছু বলে যায়নি। রাতে ও ঘুমাতেই ভালবাসত। কাল কেন রাতদুপুরে বর্ধমানের দিকে যাচ্ছিল তা আমাদের মাথায় কিছুতেই ঢুকছে না।” |
|
|
|
|
|