জেলে শতরূপ
এসএফআই-কে গোল শোধ করতে ফুঁসছে দিল্লি সিপিএম
সেই দিল্লি। সেই বিক্ষোভ। সেই এসএফআই। এবং সেই অস্বস্তি সিপিএমে!
তিন মাস আগে যোজনা ভবনের সামনে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে নিগ্রহের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এসএফআইয়ের। এ বার দিল্লিরই কেরল হাউসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অভিযুক্ত হয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন।
আগের বার বিক্ষোভের কারণ ছিল পশ্চিমবঙ্গে পুলিশি হেফাজতে এসএফআই নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের মৃত্যুর প্রতিবাদ। এ বার বিক্ষোভের কারণ, সৌর-কেলেঙ্কারিতে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডির ইস্তফা দাবি। তফাত রয়েছে আরও একটা জায়গায়। যোজনা ভবনের বিক্ষোভের সময় দলে প্রশ্ন উঠেছিল, ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচিতে সিপিএমের দিল্লি রাজ্য কমিটি কেন নাক গলাতে গেল? আর এ বার গোল শোধ করতে তৎপর হয়েছেন দিল্লির নেতৃত্ব! তাঁদের না-জানিয়ে হঠাৎ এমন জঙ্গি বিক্ষোভ করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে সমস্যা তৈরি করা হল কেন, এই অভিযোগ এনে ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন দিল্লির রাজ্য নেতৃত্ব! বিষয়টি নিয়ে তাঁরা দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করার কথাও ভাবছেন।
ঘটনাচক্রে, এ বারের গোলমালে নাম জড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-নেতা শতরূপ ঘোষের। এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি ভি শিবদাসনের পাশাপাশি বিক্ষোভে ছিলেন সংগঠনের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক শতরূপ। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশকে আক্রমণের অভিযোগ এনেছে দিল্লি পুলিশ। ইতিমধ্যেই এক রাত পুলিশ হাজতে কাটিয়ে পাটিয়ালা হাউস কোর্টের নির্দেশে আপাতত তিহাড় জেলে এই ছাত্র-নেতা। এই সূত্রেই এ বারের ঘটনার সঙ্গেও জড়িয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম। যদিও দলের অন্দরে মূল বিরোধ বেধেছে দিল্লি রাজ্য কমিটি এবং এসএফআইয়ের।
তিন দিনের সর্বভারতীয় ছাত্রী কনভেনশন উপলক্ষে এসএফআই নেতৃত্ব এখন শিমলায়। সেই কনভেনশন শুরুর ঠিক আগের দিন, মঙ্গলবার কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফার দাবিতে দিল্লির কেরল হাউসের সামনে বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল এসএফআই। পুলিশের দাবি, কেরল হাউসে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর করছিলেন বলেই তাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়। বিক্ষোভকারীরা তখন পুলিশকেই আক্রমণ করেন। এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি-সহ কেন্দ্রীয় কমিটির ৭ জন সদস্যকে (ধৃত মোট ৯) গ্রেফতার করার পরে থানায় ছুটে গিয়েছিলেন সিপিএমের এক প্রভাবশালী পলিটব্যুরো সদস্যও। কিন্তু পুলিশ যোজনা ভবনের ঘটনায় যেমন করেছিল, এখানে তার থেকে অনেক শক্ত ভূমিকা নিয়েছে। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, যে ভাবে কতর্ব্যরত পুলিশকর্মীদের আক্রমণ করেছেন বিক্ষোভকারীরা, তার পরে নরম মনোভাব দেখালে বাহিনীর মনোবলই ধাক্কা খাবে।
যে হেতু ঘটনা দিল্লিতে, তাই দলের রাজ্য কমিটির সম্পাদক পুষ্পেন্দ্র গ্রেওয়াল প্রকাশ্যে বিক্ষোভকারীদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। আদালতে তাঁরা হাজির হচ্ছেন, জামিনের জন্য আইনি সওয়ালে সহায়তা করছেন। কিন্তু সিপিএমের অন্দরের খবর, দিল্লি শহরে এ ভাবে তাঁদের না-জানিয়ে এসএফআইয়ের কর্মসূচি এবং তা থেকে গোলমাল হওয়ায় দলে এ বার বিষয়টির হেস্তনেস্ত করতে চাইছেন গ্রেওয়াল। যদিও প্রকাশ্যে দিল্লির নেতৃত্ব এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্যে যেতে নারাজ। আর শিমলা থেকে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সাজানো অভিযোগে আমাদের কমরেডদের জেলে পাঠানো হয়েছে! এর প্রতিবাদে শুক্রবার গোটা দেশেই আমাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি হবে। ওই কেরল হাউসের সামনেই আবার প্রতিবাদ হবে!”
বারে বারে এসএফআইকে জড়িয়ে বিড়ম্বনায় পড়ার কথা অবশ্য অস্বীকার করতে পারছেন না সিপিএম নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “কোথাও একটা সমন্বয়ের অভাব হচ্ছে।” পাশাপাশিই প্রশ্ন উঠেছে শতরূপের ভূমিকা নিয়ে। এ রাজ্যেরই এক নেতার প্রশ্ন, “যোজনা কমিশনের সামনের ঘটনার পরেও শিক্ষা হল না?”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.