শ্বশুরকে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে জামাইয়ের বিরুদ্ধে। রেহাই পাননি শাশুড়িও। আশঙ্কাজনক অবস্থা তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানাচ্ছে, মেয়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অভিযুক্তের শ্বশুর-শাশুড়ি প্রতিবাদ করেছিলেন। তার জেরে শ্বশুরবাড়িতে অভিযুক্ত হামলা চালান। মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ হবিবপুর থানার হেলানডাঙ্গা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতের নাম হাদি হাঁসদা (৪৫)। জখম মহিলার নাম সাইনি সোরেন। পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।”
৩ বছর আগে হবিবপুরে সোদপুর গ্রামের প্রদীপ হেমব্রম হেলানডাঙ্গার সুমি হাঁসদাকে বিয়ে করেন। তাঁদের দুই বছরের মেয়ে রয়েছে। দিনমজুর প্রদীপ ভিন রাজ্যে কাজ করেন। গত সপ্তাহে তিনি গ্রামে ফিরেছেন। প্রদীপ তিন মাস আগে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়ার পর দুই বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে সুমি বাপের বাড়িতে থাকতেন। অভিযুক্ত যুবক গ্রামে ফেরার পর তাঁর পরিবারের লোকজন সুমিদেবীর চরিত্র নিয়ে নানা কথা বলেন। বিষয়টি শুনে ওই দিন শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে প্রদীপ প্রচণ্ড চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেন। সেই সময়ে তিনি শ্বশুর ও শাশুড়ির সামনেই তাঁদের মেয়ে সম্পর্কে নানা কথা বলেন বলে অভিযোগ। তা শুনে সুমিদেবীর বাবা-মা প্রতিবাদ করেন। গ্রামবাসীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। গোলমাল মেটাতে বিকালে গ্রামে সালিশি সভা বসেছিল। সেখানে বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দুই পক্ষই কারও কথা শুনছিলেন না। শেষ পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সুমি বাপের বাড়িতে থেকে যান। প্রদীপও বাড়ি চলে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, রাত দেড়টা নাগাদ শ্বশুরবাড়িতে চড়াও হন প্রদীপ। ঘুমন্ত শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে কুড়ুল দিয়ে দ্রুত কোপাতে থাকেন তিনি। সুমিদেবী জেগে যান। পড়শিরা চলে এলে অভিযুক্ত পালায়।
মালদহ মেডিক্যালে জখম মায়ের পাশে এ দিন সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুমি হাঁসদা। তিনিই স্বামীর বিরুদ্ধে বাবাকে খুন এবং মা’কে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন। সুমি বলেন, “গরমের জন্য মেয়েকে নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে বারান্দায় ছিলাম। মাঝরাতে চিৎকার শুনে জেগে গিয়ে দেখি ও বাবা-মা’কে কোপাচ্ছে। মেয়ে নিয়ে বাড়ির বাইরে পালিয়ে যাই।” |