বানভাসি পরিস্থিতির জের ভোটকেন্দ্র সরাতে উদ্যোগ
কোচবিহার সদরের টাকাগছ প্রাইমারি স্কুল চত্বরে প্রায় এক হাঁটু জল। তুফানগঞ্জের চিলাখানা হাইস্কুলে জলবন্দি বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতির জেরে কোচবিহারের এমনই শতাধিক বুথে ভোটগ্রহণ করা যাবে কি না তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কোচবিহার জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতির জেরে ওই সব বুথের বদলে বিকল্প জায়গায় ভোট গ্রহণ কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক প্র স্তুতি শুরু করেছে প্রশাসন। জলবন্দি হয়ে থাকা বুথগুলির পাশাপাশি দুর্গত বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন, এমন বুথের তালিকা তৈরির জন্য বিডিওদের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “বন্যা পরিস্থিতির জেরে কিছু নির্দিষ্ট বুথের ভোট নেওয়া সমস্যা হতে পারে। ওই আশঙ্কা এড়াতে বিকল্প বুথের বন্দোবস্ত করার বিষয়ে বিডিওদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অবশ্য এখনও হাতে কিছুদিন সময় রয়েছে। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
বুধবার কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার তুফানগঞ্জে রায়ডাক নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। কোচবিহারে মাথাভাঙায় মানসাই নদীতে হলুদ সংকেত জারি রয়েছে। গদাধর কালজানি তোর্সা ও তিস্তা নদীও ফুঁসছে। তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের সবকটি গ্রাম পঞ্চায়েতই জলবন্দি হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে দেওচড়াই, চিলাখানা, নাককাটিগছ, নাটাবাড়ির পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা ১০টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০টি। সেখানে ১২ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বলে প্রশাসন জানিয়েছে। তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাও নতুন করে জলবন্দি হয়ে পড়েছে, একই পরিস্থিতি কোচবিহার সদরের টাকাগছ মধুপুরেরও।
জলমগ্ন কোচবিহারের টাকাগছ প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এখানে নির্বাচন হওয়ার কথা। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ দিনাজপুরে পুনর্ভবা ও টাঙ্গন নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। বালুরঘাটে আত্রেয়ীর জলও বিপদসীমার খুব কাছ দিয়ে বইছে। বালুরঘাট ব্লকের পরাণপুর, পতিরাম, মাহিনগর, কাশীপুর এলাকার নীচু এলাকা ও চাষের জমি ডুবে গিয়েছে। গঙ্গারামপুর ও তপন ব্লক সংলগ্ন বজ্রাপুকুর এবং টেপড়িদহ এলাকায় নদীবাঁধে ফাটল দিয়ে জল ঢুকে নীচু এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। চাষ জমির ফসল ডুবেছে। ইতিমধ্যে বালুরঘাটের পরাণপুর, মাহিনগরের বিস্তীর্ণ এলাকার পাট ও সবজির জমি ডুবে গিয়েছে। জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিডিওদের সর্তক থাকতে বলা হয়েছে।”
রায়ডাক, সংকোশ ও ধারসি নদী ফুলে ফেঁপে ওঠায় নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের পানবাড়ি, সিমলাবাড়ি, শামুকতলায়। কুমারগ্রামের বিত্তিবাড়ি, ধনতলি, বালাপাড়া ও ভূটিয়াবস্তি এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জয়ন্তী, ফাঁসখোয়া ও রায়ডাক নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এলাকাগুলির প্রায় ৪০০ পরিবার। বাসিন্দাদের অভিযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকলেও, এলাকায় কোন ত্রাণ পৌঁছোয়নি।
মালবাজার ব্লকের চাপাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌয়ামারি এলাকায় তিস্তার জল গ্রামে ঢুকে প্রায় ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও আরও বেশ কিছু পরিবার এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নাগরাকাটা ব্লকের আংরাভাসা গ্রাম পঞ্চায়েতের খয়েরকাটা গ্রামে কুচি ডায়নার জল ঢুকে গ্রাম প্লাবিত করেছে।
মঙ্গলবার রাতে জলপাইগুড়ি সদরের দক্ষিণ বেরুবাড়ি এলাকায় যমুনা এবং পাঙ্গা নদীর জল নলজোয়াপাড়া এবং সেনপাড়া এলাকায় ঢুকে যায়। উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির রসখোয়া ২, আলতাপুর ১, লাহুতারা সহ করণদিঘি এলাকার বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে প্রাশাসনের পক্ষ থেকে সেই এলাকার বাসিন্দাদের উচু এলাকাতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চাকুলিয়ার কানকি ফাঁড়ির ভিতরেও জল ঢুকে পড়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে পুলিশ কর্মী-আধিকারিকদের। ইসলামপুর ও চোপড়ার বেশ কিছু এলাকাও জলমগ্ন। ইসলামপুর পুর এলাকার কলেজ পাড়া ও মেলার মাঠ এলাকাতে বৃষ্টির জল আটকে পড়ায় দুর্ভোগে বাসিন্দারা। উত্তর দিনাজপুরে নাগর নদীর জল ঢুকে পড়ে জলবন্দি হয়ে পড়েছে লাগোয়া গ্রামের প্রায় ৬ হাজার পরিবার। এলাকার ধান ও সবজি চাষ জলের তলে চলে গিয়েছে। জেলার সব দলের নেতারাই উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়ার অনুরোধ করেছেন। দুর্গতদের ত্রাণ বিলির প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.