খেলার সময় বৃষ্টির জলভর্তি গভীর গর্তে পড়ে তিনটি শিশু’র মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে এক ভাইবোনও রয়েছে। অপর শিশুকন্যাটিও তাদের আত্মীয়। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়া থানার চিকনমাটির পেটকি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে বাসিন্দারা সাহায্যে পুলিশ দেহগুলি উদ্ধার করে। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম রেশমা মুর্মু (৭), রাহুল মুর্মু (৬) এবং সুনীতা মুর্মু (৮)। সকলেই স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়ত। এরমধ্যে রেশমা ও রাহুল ভাইবোন। সুনীতা তাদের আত্মীয়। মৃতদের অভিভাবকেরা সকলেই দিনমজুর। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিডিও বীরুপাক্ষ মৈত্র বলেন, “অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত শিশুদের পরিবার দুটির আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি সরকারি নিয়ম মেনে দেখা হবে।”
পুলিশ ও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটকি এলাকাটি আদিবাসী অধিষ্যুত এলাকা। দিনমজুরির পাশাপাশি লাগোয়া ছোট ছোট চা বাগানে পাতা তোলার কাজ করে বাসিন্দারা সংসার চালান। পেটকি গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি ফ্রান্সিস মুর্মু এবং কিশোর মুর্মু। দু’জনের মাটির বাড়ি। বর্ষার মরশুমে বাড়িতে জল জমে যাওয়ায় সম্প্রতি কিশোরবাবু বাড়ির পিছনে নিজের জমিতে মাটি কাটা শুরু করেন। সেখান থেকে মাটি এনে বাড়িতে এবং উঠানো ছড়ানো হয়। এতে তাঁর পিছনে প্রায় ১০ ফুটের একটি গভীর গর্ত তৈরি হয়। টানা বৃষ্টি গর্তটি জলে ভরে ডোবায় পরিণত হয়। এ দিন সকালে মৃতদের অভিভাবকেরা কাজে যাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় চটহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজেশ মণ্ডল জানান, ওই জলভর্তি গর্তে মুখটি বেশি চওড়া ছিল না। সেটিতে আড়াআড়ি একটি বাঁশ পড়েছিল। মৃত শিশুরা সম্ভবত বাঁশে ঝুলে জলের উপরে খেলছিল। কোনওভাবে তিনজন জলে পড়ে ডুবে যায়। এলাকার একটি শিশু বিষয়টি দেখে বাসিন্দাদের খবর দেয়। তা শুনেই তাঁরা সেখানে দৌঁড়ে যান। ততক্ষণে তিনজন জলে ডুবে গিয়েছিল। পরে দেহগুলি উদ্ধার হয়। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, দেহগুলি উদ্ধারের পর সেগুলির ময়নাতদন্ত করানো নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশ আপত্তি তোলেন। প্রায় তিনঘন্টা দেহগুলি বাড়িতে রাখা হয়। বিডিও বলেন, “সরকারি নিয়ম, ক্ষতিপূরণের বিষয়টি মৃতদের অভিভাবক এবং বাসিন্দাদের বোঝানোর পর সমস্যা মেটে।” |