সারদা গোষ্ঠীর কেলেঙ্কারি বহু কোটি টাকার। লগ্নির টাকা ফেরত চেয়ে আমানতকারীদের আবেদনপত্রের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে! টাকা ফেরত তো পরের কথা, এত আবেদন কম্পিউটারে নথিভুক্ত করতেই মাথায় হাত সারদা কাণ্ডের তদন্তে গঠিত শ্যামল সেন কমিশনের। কমিশন সূত্রের খবর, বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীর নথি কম্পিউটারে তুলতেই বছর ঘুরবে। তাই নাম নথিভুক্তর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেসরকারি সংস্থাকে।
আবেদনকারীদের নাম তোলা নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই টাকা ফেরতের প্রস্তাব তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কমিশন। প্রথমে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ভাবা হয়েছে অতি-গরিব আমানতকারীদের কথা। তাঁদের নামের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। টাকা ফেরানোর প্রাথমিক প্রস্তাব খুব শীঘ্রই রাজ্য সরকারকে পেশ করতে চায় কমিশন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, টাকা আসবে কোথা থেকে?
সুদীপ্ত সেনের অর্থ লগ্নি সংস্থা সারদার ভরাডুবির পরে বিপন্ন আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য শ্যামল সেন কমিশন গঠন করা হয়েছে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আমানতকারীদের নথি সহ আবেদনপত্র জমা দিতে বলে কমিশন। তার পরেই আমানতকারীর ঢল নামে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কেন্দ্রগুলিতে। কমিশন সূত্রের খবর, মোট ১৭ লক্ষ ১০ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়েছে। ওই সব আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট নথি-সহ কম্পিউটারে তোলার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-কে দায়িত্ব দেয় কমিশন। সিট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ওই কাজ করতে বলা হয়েছিল সরকারি সংস্থা ওয়েবেলকে। কিন্তু তারা সিট-কে জানায়, এই বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীর নাম নথিভুক্ত করতে বছরখানেক সময় লাগবে।
শুধু নাম নথিভুক্তির জন্য অত সময় ব্যয় করতে রাজি নয় সরকার। সিট তাই দরপত্র ডেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেয়। মহাকরণ সূত্রের খবর, সিট যে-সংস্থাকে বরাত দিয়েছে, তারা ৪৫ দিনের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ করবে বলে জানিয়েছে। ইতিমধ্যে সেই কাজ শুরুও হয়ে গিয়েছে।
সরকারি সূত্রের খবর, কয়েক দিনের মধ্যেই আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব মহাকরণে জমা দেবে কমিশন। প্রথম পর্যায়ে তারা নিতান্তই গরিব আমানতকারীর একটি তালিকা তৈরি করছে। ওই তালিকায় যাঁদের আমানতের মেয়াদ ২০১৩ সালে শেষ হয়েছে, তাঁদেরই মূল টাকা (সুদ বাদ দিয়ে) ফেরত দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছে কমিশন। সিট সূত্রের খবর, আবেদনকারীরা আমানতের যে-সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, সারদার অফিস থেকে পাওয়া নথির সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
|