তৃণমূল নেতারা যাই বলুক, এক বাড়িতেই সিপিএমের প্রার্থীর সঙ্গেই ওঠবোস করছেন তৃণমূলের প্রার্থী।
উপায়ই বা কী? দু’জনে যে একই বাড়ির বউ।
হুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নম্বর আসনে এ বার মুখোমুখি লড়ছেন তৃণমূলের ছন্দা কর ও সিপিএমের ববিরানি কর। ববিরানি বাড়ির বড় বউ আর ছন্দা ছোট বউ। দুই জায়ের নামে পাড়ার দেওয়াল ছয়লাপ। দুই বউয়ের নামে মাইকের প্রচারে পাড়া সরগরম। আর হেঁসেল সামলে দু’জনেই কোমর বেঁধে কয়েক দিন ধরে টানা প্রচারের কাজও সেরে ফেলেছেন। ভোটাররা দুই জায়ের দাবি-পাল্টা দাবি শুনেছেন, আর মুচকি হেসে বলেছেন নিশ্চই আপনাকেই ভোট দেব। পাড়ার দেওররা অবশ্য স্পষ্টত দু’দলে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। মুখে কিন্তু কুলুপ। কেউ কেউ আবার শেষ পর্যন্ত কাকে ভোট দেবেন, তা ঠিক করতেও পারেননি। বলছেন, “বুথে গিয়েই ঠিক করব।” |
লালপুর মোড়ের চায়ের দোকান কালীকিঙ্কর রক্ষিতের। তিনি বলেন, “আমাদের পাড়ার দুই বউয়ের ভোটের লড়াই এখন সবার আলোচনার বিষয়।” হুড়া নিমতলা মোড়ে পান বিক্রেতা সুধা কুণ্ডুও বললেন, “ভোটের প্রসঙ্গে উঠলে ওই দুই জায়ের কথা উঠছেই। একজন তৃণমূল, অন্য জন সিপিএমের কাজেই. লড়াই তো এখানে সেয়ানে-সেয়ানে।” ছন্দা যে এ বার প্রথম ভোটে দাঁড়ালেন তাই নয়, প্রথম ভোটও দেবেন। বললেন, “প্রথম বার ভোট দিচ্ছি, প্রথম বার প্রার্থী হয়েছি, আশা করছি জিতবও।” তাঁর দাবি, “ভোটারদের কাছ থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি।” আর ববিদেবী বলছেন, “আমাদের দলের কাছে মানুষই সম্বল। আগে রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যোগ না থাকলেও, এখন হেঁসেল সামলে তাই মানুষের কাছেই বেশি গিয়েছি।” এই আসনে আবার অন্য মাত্রা যোগ করে দিয়েছেন ছন্দার দিদি তপতী দত্ত। তিনি ওই আসনেই কংগ্রেসের প্রার্থী। তিনিও এই পাড়ারই বাসিন্দা। তপতীদেবীর কথায়, “আমি কিন্তু লড়াই দেব।” ভোটের লড়াইয়ের জেরে নিজেদের সম্পর্ক কি ভাল রয়েছে? তাঁদের জবাব একেবারে রাজনৈতিক নেত্রীর মতোই। বলছেন, “লড়াই তো ব্যালটে। একজন তো জিতবে। তাতে আমাদের পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি হবে কেন?”
তবে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন ওই তিন প্রার্থীর আত্মীয়েরা। তাঁদেরই একজন বলেন, “এ যে ঘরে ঘরে লড়াই! কাকে ছেড়ে কাকে ভোট দিই?” জবাব মিলবে ২৯ জুলাই, গণনার পরে।
|