ভোট দুয়ারে। এ দিকে বোর্ডের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার অধিকারও চলে গিয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানের। ফলে পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের ওই শংসাপত্র পেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ওই সমস্যার মধ্যেই বুধবার বহরমপুর ব্লকের রাজধরপাড়ার এক বাসিন্দা বাড়িতেই মারা যান। কিন্তু মৃত্যুর শংসাপত্র পাওয়া নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বহরমপুরের রাজধরপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা জোটবদ্ধ হয়ে এ দিন সকালে বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন। পরে ব্লক প্রশাসনের আশ্বাস পেলে অবরোধ ওঠে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরও বিজ্ঞপ্তি জারি করে পঞ্চায়েতের সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘সেকেন্ড মেডিক্যাল অফিসার’-কে ওই শংসাপত্র দিতে বলেছে।
বুধবার সকালে রাজধরপুর পঞ্চায়েতের কাঁটাবাগানের বুধুনি পারিহার (৫৩) নামে এক মহিলা বাড়িতেই মারা যান। দীর্ঘদিন তিনি অসুস্থ ছিলেন। এর পরেই ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য পরিবারের লোকজন স্থানীয় পঞ্চায়েত দফতরে গিয়ে জানতে পারেন, এখন প্রধানের পক্ষে ওই শংসাপত্র দেওয়া সম্ভব নয়। তখন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বিডিও বলেন, “এত দিন বাড়িতে কারও মৃত্যু হলে প্রধানের কাছ গেলেই শংসাপত্র মিলত। জন্ম বা মৃত্যুর জন্য শংসাপত্র পেতে গ্রামবাসীদের কোনও অসুবিধার মুখে পড়তে হত না। কিন্তু এখন বোর্ডের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় পঞ্চায়েত প্রধানরা ওই শংসাপত্র দেওয়ার অধিকার হারিয়েছেন। তাই ওই শংসাপত্র পেতে কিছুটা সময় লাগছে। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসীরা সামান্য সময়ের জন্য পথ অবরোধ করেন। পরে গ্রামবাসীদের বিষয়টি বুঝিয়ে বলার পরেই ওই অবরোধ উঠে যায়।” বহরমপুরের বিডিও কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল বলেন, “মুর্শিদাবাদ জেলার ২৫৪টি পঞ্চায়েত বোর্ডের ক্ষমতা চলে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। বহরমপুর ব্লকে রয়েছে ১৭টি পঞ্চায়েত। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে পঞ্চায়েত প্রধান জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে পারেন। প্রধানের অনুপস্থিতিতে এখন ওই শংসাপত্র দেবেন সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেকেন্ড মেডিক্যাল অফিসার।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অজয়কুমার চক্রবর্তী বলেন, “কোনও মৃত্যুর পরে ডেথ সার্টিফিকেট আর সার্টিফিকেট অফ ডেথদুটো সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। মৃতদেহ পর্যবেক্ষণ করার পরে ডেথ সার্টিফিকেট যে কোনও চিকিৎসক দিতে পারেন। সেখানে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ লেখা থাকে। অন্য দিকে পঞ্চায়েত প্রধান ‘সার্টিফিকেট অফ ডেথ’ দিয়ে থাকেন। সেখানে মৃতের নাম এবং সময় ও তারিখ উল্লেখ থাকে। এখন প্রধানের অনুপস্থিতিতে ওই শংসাপত্র দেবেন সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেকেন্ড মেডিক্যাল অফিসার। ফলে ওই শংসাপত্র যে কোনও চিকিৎসক দিতে পারবেন না।” সিএমওএইচ বলেন, “‘সার্টিফিকেট অফ ডেথ’ দেওয়ার আগে মৃতের পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে লিখিত বয়ান নিয়ে তার ভিত্তিতেই শংসাপত্র দেবেন ওই মেডিক্যাল অফিসার।” |