জন্মলগ্নে জেতা দাসপুরই আজ ভাবনা তৃণমূলের
বামেরা যখন ক্ষমতায়, তখন দাসপুর ২ ব্লকের দখল ছিল বিরোধী তৃণমূলের। অথচ, রাজ্যে যখন সর্বত্র তৃণমূলের জয়জয়কার, তখন এই ব্লক নিয়েই উদ্বেগে দলীয় নেতৃত্ব। কারণ সেই গোষ্ঠী কোন্দল। পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়া নিয়ে যা চরমে উঠেছে। এ ছাড়াও গত পাঁচ বছর ধরে এই পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় থেকেও প্রতিশ্রুতির অধিকাংশই পূরণ করতে পারেনি তৃণমূল। ফলে মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ক্ষোভ রয়েছে। আর তা বিলক্ষণ জানেন তৃণমূলের নেতারা। অন্দরের খবর, দলের গোপন রিপোর্টে সেই আশঙ্কার কথা উল্লেখও রয়েছে। মুখে অবশ্য এমনটা মানছেন না কেউ। তবে, সিপিএমের নেতারা দাসপুর ২ ব্লকে ভাল ফল করার কথা এই বাজারেও জোর গলাতেই বলছেন।
১৯৯৮ সালজন্মলগ্নের সময়েও পঞ্চায়েত ভোটে দাসপুর ১ ও ২ দু’টি পঞ্চায়েত সমিতির দখল নিয়েছিল তৃণমূল। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল প্রার্থী অজিত ভুঁইয়া জয়ী হয়েছিলেন। ২০০৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ ব্লকে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের এগারোটি এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৩৮টি আসনের তিরিশটি নিজেদের দখলে রেখেছিল তৃণমূল। ওই নির্বাচনে জেলার মধ্যেই একমাত্র দাসপুর ২ ব্লকেই তৃণমূল একক ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু প্রতিশ্রুতি মতো তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি পানীয় জল, সেচ, মৌজাগুলিতে অগভীর নলকূপ তৈরি, বেকারদের জন্য মার্কেট কমপ্লেক্স, রাস্তার উন্নতি, মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে রোজগারের ব্যবস্থা-সহ একাধিক সমস্যারই সমাধান করতে পারেনি। তা ছাড়াও কারচুপির কারণে আয়লার টাকা এসে পড়ে থাকলেও তা বিলি হয়নি। সম্প্রতি তা বিলি হলেও নিরপেক্ষ ভাবে বিলি না করা এবং এখনও সব বিলি না হওয়া নিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। অন্য দিকে বিভিন্ন প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি-সহ ঠিকাদারদের আঁতাত নিয়ে বিরোধী সিপিএম একাধিকবার মুখর হয়েছে। তারা ব্লকে ব্লকে আন্দোলন থেকে ধর্না চালিয়ে গিয়েছে। এ সব ছাড়াও এই ব্লকে গোষ্ঠী কোন্দল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, সম্প্রতি বিধানসভার ভোটের উপ-নির্বাচনের সময় দলের ব্লক সভাপতি তপন দত্ত পদ থেকে ইস্তফাও দিয়েছিলেন। যদিও তা গ্রহণ না হওয়ায় তিনি ওই পদে থেকে গিয়েছেন। এ সবের সঙ্গে যোগ হয়েছিল পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ। এর জেরে অধিকাংশ বুথেই রয়েছেন বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা। ফলে চাঁইপাট, খেপুত, বেনাই, খুকুড়দহ, নিশ্চিন্দিপুর, বাসুদেবপুর, শিবরা, গৌরা প্রভৃতি পঞ্চায়েতগুলির হাওয়া তৃণমূলের খুব একটা অনুকূলে নয় বলেই রাজনৈতিক মহলের অভিমত। আর এটাই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলীয় নেতৃত্বদের।
দাসপুর ২ ব্লকে এ বার ত্রি-স্তরের সব আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে কোথাও দ্বিমুখী, কোথাওবা তারও বেশি। যদিও লড়াই হচ্ছে মূলত সিপিএমের সঙ্গে তৃণমূলেরই। পরিস্থিতি যে নিজেদের খুব একটা অনুকূলে নেই তা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের গোপন রিপোর্ট থেকেও। রিপোর্ট দেখে স্বাভাবিক ভাবেই কপালে ভাঁজ পড়েছে দলীয় নেতৃত্বের। যদিও এ কথা মানতে নারাজ দলের ব্লক সভাপতি তপন দত্ত বা জেলা সভাপতি দীনেন রায়। তবে ব্লকেরই প্রবীণ তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী অরুণ মুখোপাধ্যায় জানান কঠিন লড়াইয়ের কথা। তবে তাঁরও দাবি, “আমরাই ফের ক্ষমতায় আসব।” এ দিকে সিপিএমের দাসপুর ২ জোনাল কমিটির সম্পাদক ললিতকুমার সী জোর গলায় দাবি করেন, “গোটা জেলা এ বার ওরা পেলেও দাসপুর ২ ব্লকের অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত, সমিতি আমরাই দখল করব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.