ভারত আরও একটা ওয়ান ডে খেতাবের দোড়গোড়ায়। ভারতীয়দের পক্ষে ব্যাপারটা আরও আনন্দের কারণ, পরপর দু’টো হার দিয়ে ওরা ত্রিদেশীয় সিরিজটা শুরু করেছিল। আর সিরিজের মাঝপথে ভারতের অপরিহার্য অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে চোটের জন্য হারাতে হয়েছে। তার পরেও ভারত রাউন্ড রবিন গ্রুপে শীর্ষে আছে। যা একটাও কোনও ইঙ্গিত হলে তা হল, ভারতীয় ক্রিকেটে প্রতিভার অভাব নেই।
টিম ইন্ডিয়া-র একঝাঁক সোনার ছেলের অবসরে নেতিবাচকেরা প্রায়ই দুশ্চিন্তায় পড়েছে, এর পর তা হলে কী হবে? খুব বেশি দিনের কথা নয়। অনেকেই ভয় পেয়েছিল, জাহির খানের বিকল্প পাওয়া নিয়ে। অথবা বীরেন্দ্র সহবাগ-গৌতম গম্ভীর জুটির পরে ভারতের ওপেনিং জুটির ভবিষ্যৎ কী তা নিয়ে। কিংবা রাহুল দ্রাবিড় আর ভিভিএস লক্ষ্মণ যে মিডল অর্ডারে বিশাল ফাঁকা করে গেল তার কী হবে? অনিল কুম্বলে আর হরভজন সিংহের হাত থেকেই বা কে বা কারা স্পিন বোলিংয়ের ব্যাটন নেবে? এ সব ভয় আর আশঙ্কা এখন অমূলক প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
তবে এটা আমি একবারের জন্যও বলছি না, ওই সব সোনার ছেলেদের মানের প্লেয়ার টুপি থেকে ঝুপ করে বার করে ফেলা যাবে। কিন্তু এক দল আত্মবিশ্বাসী, স্কিলড্ তরুণ প্লেয়ারের স্পষ্ট উপস্থিতি ভারতীয় দলে যে দেখা যাচ্ছে তা নিয়ে কোনও ভুল নেই। যদি একটাও পার্থক্য ঘটে থাকে সেটা হল, এই ভারতীয় দল ফিল্ডিংয়ে অতীতের যে কোনও ভারতীয় দলের চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে একটা মনোরম হাওয়া বইছে। সন্দীপ পাতিল অ্যান্ড কোং একটা ঝুঁকি নিয়েছিল। আর একঝাঁক ছটফটে তরুণ দারুণ ভাবে সাড়া দিয়ে সেই ঝুঁকিকে সফল করেছে।
|
সুতরাং আজ ভারতের আরও একটা ওয়ান ডে ফাইনাল। সিনিয়র ক্রিকেটাররা জানে এ দিনের পর আবার নীল জামা গায়ে দিতে কিছু দিন দেরি আছে। এর পর ভারতের পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক সিরিজ আবার বছরের শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায়। ফলে ওরা নিশ্চয়ই জানপ্রাণ দিয়ে খেলতে চাইবে। দীনেশ কার্তিক আর সুরেশ রায়না আশা করা যায় বাড়তি তেতে থাকবে। কারণ, ওরা ক্যারিবিয়ান্সে যতটা রান আশা করেছিল ততটা এখনও পায়নি। ভারতীয় ব্যাটিংকে থামাতে শ্রীলঙ্কাকে যথেষ্ট পরিশ্রম করতে হতেই পারে।
কাগজে-কলমে তিনটে দলই লিগে দু’পয়েন্ট করে পেয়েছে। তবে সাবাইনা পার্কে ভারতকে বিশাল রানে হারানোর ব্যাপারটা শ্রীলঙ্কাকেও সাহস জোগাবে ফাইনালে। টুর্নামেন্টে প্রথম তিনজন সর্বোচ্চ স্কোরারের দু’জনই শ্রীলঙ্কার উপুল থরঙ্গা আর মাহেলা জয়বর্ধনে। ভারতের বিরুদ্ধে বড় ম্যাচে শ্রীলঙ্কা যে ধাক্কাগুলো খেয়েছে, সেটা এই একটা ফাইনালেই ওরা আজ মুছে ফেলতে পারে।
ভারতের দুই ওপেনারের মতো শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটিও যথেষ্ট নজরকাড়া। ওদের বোলিংও বেশ গোছানো। তা সত্ত্বেও আমি আশা করছি, পোর্ট অব স্পেনে লড়াইটা দু’দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যেই হবে। দু’দলের বোলারদেরই নিজেদের কেরামতি দেখানোর জন্য কিন্তু বোর্ডে অনেক রান থাকা দরকার। |