জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের কলকাতা শাখা তৈরি নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে যথাযথ ভাবে পেশ হয়নি বলেই মনে করছেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্য। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে কলকাতা থেকে ওই আদালত গুয়াহাটি কিংবা রাঁচিতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় কিনা, মঙ্গলবার তা কেন্দ্রীয় সরকারকে খতিয়ে দেখতে বলেছে শীর্ষ আদালত। বুধবার চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “গত দিন আমাদের বক্তব্য যথাযথ ভাবে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হয়নি। ১৬ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে আমরা আমাদের বক্তব্য জানাব।” গ্রিন ট্রাইবুন্যালের বেঞ্চ তৈরির ব্যাপারে রাজ্য সরকার যা করার করেছে দাবি করে আইনমন্ত্রী জানান, কলকাতা থেকে ওই আদালত যাতে সরে না-যায় সে জন্য তাঁরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন।
তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জন্য এ দিন রাজ্য সরকারকেই দুষেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেন, “বহু চেষ্টাচরিত্র করে বামফ্রন্ট আমলে কলকাতায় গ্রিন ট্রাইব্যুনাল আনা গিয়েছিল। খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য ওই ট্রাইব্যুনাল রাঁচি বা গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রাজ্য সরকারের দিক থেকে কোনও বন্দোবস্তই করা হয়নি!” তাঁর দাবি, গ্রিন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ যাতে কলকাতা থেকে সরানো না-হয় সে জন্য রাজ্য সরকার নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিক।
ট্রাইব্যুনালের শাখা সরানোর নির্দেশ নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তও। “১৯৯৬ সালে গোটা দেশের মধ্যে কলকাতাতেই প্রথম হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চ চালু হয়। সেখান থেকে জাতীয় গ্রিন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ কলকাতা থেকে রাজধানী দিল্লি সরিয়ে নেয়ে যাওয়ার মতোই বেদনাদায়ক। ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ গড়ার জন্য রাজ্য সরকারকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেনি। এ রকম জরুরি একটা বিষয় যদি তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে না থাকে, তা হলে তার থেকে নিন্দনীয় আর কিছু হতে পারে না।” অবস্থানগত সুবিধার জন্যই কলকাতায় ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ হওয়া উচিত মন্তব্য করে সুভাষবাবু বলেন, “বেঞ্চ যদি গুয়াহাটি চলে যায়, তা হলে রাঁচি বা পটনার কারও সেখানে যেতে কি অনেক বেশি অসুবিধা হবে না?” ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি সত্যিই কলকাতায় না-হয় তা হলে মহাকরণের সামনে অনশনে বসারও হুমকি দিয়েছেন সুভাষবাবু।
|