রথযাত্রা এল। কিন্তু এ বার ‘মহাধূমধাম’ হচ্ছে না উদয়নারায়ণপুর চট্টোপাধ্যায় পরিবারে। প্রতি বছরই চট্টোপাধ্যায় পরিবারে রথযাত্রা উপলক্ষে বিশাল মেলা বসে স্থানীয় স্কুল মাঠে। চলে দেদার কেনাকাটা। বসে ম্যাজিক শো, সার্কাস। কিন্তু এ বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন চলে আসায় মাঠ জুড়ে চলছে নির্বাচনী কাজ। মেলার পরিসর অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে। মেলা বসলেও এ বছর সেই জৌলুষ থাকছে না। এই অবস্থায় মনমরা স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২৮০ বছর আগে ২৭ ফুট লম্বা ও ১৫ ফুট চওড়া ও ১২টি চাকা যুক্ত রথযাত্রার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উদয়নারায়ণপুরের শিবপুরের গিরীশ ভট্টাচার্য। পরে সেই রথ এসে পড়ে উদয়নারায়ণপুরের জমিদার সারদাচরণ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে। সেই শুরু। তবে এখন সময় বদলছে। পরিবেশ বদলেছে। জমিদারি গিয়েছে কবেই। তবু রথের রশিতে টান পড়া বন্ধ হয়নি চট্টোপাধ্যায় পরিবারে। সাবেক আমলে চট্টোপাধ্যায় বাড়িতেই থাকত রথটি। কিন্তু বাড়ির সামনের রাস্তা সরু হয়ে যাওয়ায় রথ এখন ঠাঁই নিয়েছে বাড়ির সামনে বাজার এলাকায়।
রথের গায়ে নানা কারুকাজ। আছে দেবদেবীর ছবি। যুদ্ধ যাত্রা, হাতি-ঘোড়া, অপ্সরার ছবিও জায়গা করে নিয়েছে। পুরীর রথযাত্রার নিয়ম মানা হয় এখানে। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের বধূ গীতাদেবী বলেন, “আমাদের রথযাত্রায় সব সম্প্রদায়ের লোক যোগ দেয়।” গীতাদেবী জানান, পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য কলকাতায় থাকায় ২০০৫ সাল থেকে রথযাত্রায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ‘শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মাতৃ সঙ্ঘ’ নামে একটি সংস্থাকে। ওই সংস্থার সম্পাদক সন্ধ্যা দে ও স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম বাকুলি জানান, রথকে ছোট পুতুল দিয়ে সাজানো হয়। তাঁদের আপেক্ষ, “এ বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য পুরো মাঠ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অন্যান্য বারের মতো বড় মেলা বসছে না এ বার।” |