দুই ছেলে দুই দলের প্রার্থী, ভোটই দেবেন না ননীবালা
ক সময়ে তিনি ভোটে জিতে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়েছিলেন। পরেও একাধিকবার দলের হয়ে প্রচার চালিয়েছেন। পঞ্চায়েত হোক বা লোকসভা প্রতিবার নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার ভোট দেওয়া থেকে কখনও বিরত থাকেননি। এ বার বিড়ম্বনায়। একই আসনে প্রার্থী হয়েছেন দুই ছেলে। মেজো ছেলে তৃণমূল কংগ্রেসের এবং ছোট ছেলে আরএসপির প্রার্থী। কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে প্রায় ‘ধর্মসংকটে’ ভুগছেন আলিপুরদুয়ার পোরোরপাড় এলাকার ননীবালা রায়। সে কারণে ১৯৯৩ সালের পঞ্চায়েত সমিতির বিজয়ী আরএসপি সদস্যা ননীবালা আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবারে ভোট দিতেই যাবেন না।
আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের পোরোর পাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২/৯৩ ওই আসনের প্রার্থী দুই ভাইকে নিয়ে চর্চা চলছে এলাকাতেও। পেশায় ওষুধের দোকানের কর্মী উত্তম রায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন। তাঁর ছোট ভাই ব্যবসায়ী সুজিতবাবুও ওই আসনে আরএসপির প্রার্থী হয়েছে। দিনভর প্রচার সেরে বাড়ি ফিরে উঠোনে বসে নিজেদের মধ্যে আগের মতোই গল্প চলছে বলে দু’জনেই জানিয়েছেন।
দু’পাশে দুই ছেলেকে নিয়ে মা। নিজস্ব চিত্র।
উত্তমবাবু বলেন, “আমাদের পরিবার বরাবরই আরএসপি দলের সমর্থক। কিন্তু ওই দলের কিছু নীতি ও কাজ পছন্দ না হওয়ায় দেড়বছর আগে আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। এবারেও প্রার্থী হয়েছি। ভাই আরএসপির প্রার্থী। কিন্তু তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই।” ভোটে যুযুধান ভাই সুজিতবাবুও বলেন, “আমাদের দুজনের মধ্যেই একজন জিতবে। ভোটে লড়া মানেই ঝগড়া করা নয়। আমরা শান্তিতেই প্রচার চালাচ্ছি। উন্নয়ন নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি। কোনও রকম কুৎসা এড়িয়ে চলছি।”
ভোটে দাঁড়িয়ে দুই ভাই নিজেদের সম্পর্কের অবনতি হতে দেয়নি। কী বলছেন মা ননীবালা দেবী? তাঁর কথায়, “এক ছেলে তৃণমূল আর এক ছেলে আরএসপির প্রার্থী। কাকে ভোট দেব বলুন তো? দুজনেই তো আমার কাছে সমান। তাই ঠিক করেছি এবার ভোটই দেব না।” একই বাড়িতে মুখোমুখি ঘরে থাকেন উত্তমবাবু ও সুজিতবাবু। এদিন সকালে উঠোনে দুই ভাইকে পাশে বসিয়ে গম্ভীর গলায় মা জানালেন, “আমি নিজে ভোটে দাঁড়িয়েছি। আমি চাই না বাড়ির উঠোনে রাজনীতি ঢুকে পড়ুক। তাই ছেলেদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি বাইরে কে কী করছ করো কিন্তু বাড়িতে রাজনীতি চলবে না। দুই ভাইয়ের হেঁসেল আলাদা হলেও এক জন অন্যজনের মতামত ছাড়া চলতে পারে না। আমি চাই ওঁরা চির দিনই এ ভাবে মিলেমিশে থাকুক। যেই জিতুক তাঁকে অন্য ভাই এবং গ্রামের সকলের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করতে বলব।”
গ্রামের ‘রায় পরিবারের’ বড় দাদা বিধানবাবু এবং মা ননীবালা দেবী বহু বছর আগে পর পর পঞ্চায়েত সমিতির আসনে আরএসপির হয়ে জিতেছিলেন। ফলে ওই পরিবারের ভোটে লড়ার বিষয়টি নতুন কোনও ঘটনা নয়। এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পীযূষ কান্তি রায় বলেন, “পোরোরপাড়ে দুই ভাইয়ের লড়াই জমে উঠেছে। তবে ভোটে উত্তমই জিতবে। দলীয় ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিপক্ষের প্রার্থীর বিরুদ্ধে যাতে কুৎসা না করা হয়।”
আরএসপি নেতা সুব্রত রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “দুই ভাইয়ের সঙ্গেই আমার পরিচয় রয়েছে। এই লড়াইটা রাজনৈতিক। ব্যক্তিগত জীবনে যাতে এর কোনও প্রভাব না পড়ে সে দিকে নজর রেখেই প্রচার চালানো হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.