|
|
|
|
কাল ভোট পশ্চিমে |
দুই জেলাতেই ভোটের সন্ত্রাস |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
দিন যত এগোচ্ছে, ততই ভোট প্রচার নিয়ে অশান্তি বাড়ছে দুই মেদিনীপুরে। এতদিন সিপিএম, কংগ্রেসের লোকেরাই মূলত আক্রান্ত হচ্ছিল। শেষবেলায় তৃণমূলের এক কর্মীর মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠল সিপিএমের বিরুদ্ধে। ঘাটালের সুলতানপুর ও দেওয়ানচক ১ পঞ্চায়েতেও সিপিএমের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেছে তৃণমূল। নন্দীগ্রামে আবার কংগ্রেসের মিছিলে হামলা, খেজুরিতে কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে হুমকির অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কাল ভোট পশ্চিম মেদিনীপুরে। শেষবেলার প্রচার ঘিরে মঙ্গলবার নানা জায়গায় অশান্তি হয়। চন্দ্রকোনার চাঁদুরে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে ৮-১০ জন জখম হন।
নৃশংসতম ঘটনাটি ঘটে পটাশপুরে। সোমবার রাতে খড়াই মোড়ে তৃণমূল কর্মী গঙ্গাধর মাইতির মুখে অ্যাসিড ভর্তি বোতল ছুড়ে পালায় তিন বাইক আরোহী। তৃণমূল সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও সিপিএমের দাবি এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের।
প্রচারে বেরিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের হাতে নন্দীগ্রামে আক্রান্ত হন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। কংগ্রেসের সোমবার সন্ধ্যায় গোকুলনগরের গারুপাড়া বুথে মিছিলের সময় স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী সুদর্শন প্রামাণিকের নেতৃত্বে একদল লোক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস প্রার্থী অনুপ মণ্ডল-সহ চার সমর্থক আহত হন। আহত গৌরহরি মণ্ডল, দেবাশিস মণ্ডল ও দ্বিজেন মণ্ডলকে নন্দীগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। গৌরহরি নন্দীগ্রামের প্রতিরোধ কমিটির সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরে মাওবাদী সন্দেহে তাঁকে কাকদ্বীপ থেকে ধরেছিল পুলিশ। প্রায় পাঁচ বছর জেল হেফাজতে থাকার পর কয়েকমাস আগে জামিন পান। সুদর্শন প্রামাণিক-সহ ছয় তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস।
খেজুরি-২ ব্লকের হলুদবাড়ি অঞ্চলের মহিলা কংগ্রেস প্রার্থী কুহেলি প্রধানের বাড়িতে তৃণমূলে দুষ্কৃতীরা সোমবার রাতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। খেজুরি বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি সোমশঙ্কর মণ্ডল বলেন, “দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে তৃণমূলের লোকেরা। চলে গালিগালাজ। কুহেলিদেবী ও তাঁর স্বামী অবশ্য বাইরে বেরোননি।” উল্লেখ্য, এর আগে তৃণমূলের ভয়ে গ্রাম ছেড়েছিলেন কুহেলীদেবী। পরে খেজুরি থানার পুলিশ গাড়ি করে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেয়।
সোমবার রাতে চন্দ্রকোনার চাঁদুরে আবার সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ বাধে। দুই দলের জনা দশেক জখম হন। চন্দ্রকোনার জাড়া, মনোহরপুর প্রভৃতি এলাকায় হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে সোমবার রাতে ঘাটাল ব্লকের সুলতানপুর পঞ্চায়েতের কোমরা বুথের তৃণমূল সভাপতি নিমাই হাজরাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস ও সিপিএমের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ওই রাতেই ঘাটাল ব্লকেরই দেওয়ানচক-১ পঞ্চায়েতের কুঠিকোনারপুরের বুথ সভাপতি কার্তিক লাঠুয়াকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএমের লোকেদের বিরুদ্ধে। দু’জনই ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। এর জেরে এদিন কোমরা সংলগ্ন লক্ষ্মণপুর-ঘাটাল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূলের লোকজন। কুটিকোনারপুরে প্রতিবাদ সভা হয়। মঙ্গলবারই কোমরা সংলগ্ন সোয়াই গ্রামে কংগ্রেস কর্মী বিকাশ ঘোষের অস্ত্র দিয়ে হাতে আঘাত ও আজবনগরে কর্মী তপন বসুকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
সবংয়ে তৃণমূলের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, শিমুলতলা, চাউলকুড়ি প্রভৃতি এলাকায় কংগ্রেস তৃণমূলের উপর হামলা চালাচ্ছে। সবং তৃণমূল ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি প্রভাত মাইতির অভিযোগ, “সবংয়ের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে কংগ্রেস। উল্টে আমাদের উপরে অভিযোগ করছে।” কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অমল পাণ্ডার অভিযোগ, “তৃণমূল সর্বত্রই সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুলিশও ওদের সঙ্গে রয়েছে। এমন চললে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কতটা হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।” |
|
|
|
|
|