গোপীবল্লভপুর, দাঁতনে সভা শুভেন্দুর
জঙ্গলমহলে শেষ বেলায় চষে বেড়ালেন মুকুল
ঙ্গলবার শেষ দিনে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়, দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়কে সঙ্গে নিয়ে গোয়ালতোড়, শালবনি, লালগড়, বেলপাহাড়ি ও জামবনি ব্লকের নানা এলাকা চষে বেড়ান। কয়েক জায়গায় পথসভাও করেন। জামবনির পড়িহাটির এক পথসভায় মাওবাদী-কংগ্রেস-সিপিএম সংস্রবের অভিযোগ করে মুকুলবাবু বলেন, “আমাদের উদারতাকে কেউ দুর্বলতা ভাবলে ভুল করবেন।” অন্যদিকে, রাজ্য যুব তৃণমূলের সভাপতি শুভেন্দু অধিকারী এ দিন বিকেলে প্রচারের শেষ বেলায় সভা করেন গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের রান্টুয়ায়।
গোপীবল্লভপুরের রান্টুয়ায় সভা তৃণমূল সাংসদের।
স্থানীয় ফুটবল মাঠে জনসভায় শুভেন্দু জঙ্গলমহলে শান্তি ও উন্নয়ন বজায় রাখার জন্য তৃণমূল প্রার্থীদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানান। সভায় হাজার তিনেক লোক হয়েছিল। ওই সভায় শুভেন্দু অভিযোগ করেন, “ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা সরকার মাওবাদীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। বেলপাহাড়ির সীমানা লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলা এলাকায় মাওবাদীরা যা খুশি করছে। এখন জঙ্গলমহলে কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি-ঝাড়খণ্ডী দলগুলি মাওবাদীদের সমর্থনে অশুভ আঁতাত করেছে। একটা অশুভ সঙ্কেত আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নিয়ে ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা থেকে রাতের অন্ধকারে মাওবাদীদের দু’একজন জঙ্গলমহলে এসে তৃণমূলকে ভোট দেওয়া যাবে না বলে ধমক দিয়ে যাচ্ছে।” জঙ্গলমহলের কয়েক জায়গায় ঝুমুর গান ও নাচের মাধ্যমে প্রচার করে তৃণমূল। সিপিএম পাড়া বৈঠক ও বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিয়েছিল।বিরোধীরাও এ দিন শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে দিনভর বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচার মিছিল ও পথসভা করলেন। নির্বাচন কমিশনের বিধি ভেঙে এ দিনই লালগড় ও ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাইক মিছিল করার অভিযোগ করেছে বিরোধীরা। নির্বাচন কমিশন বাইক মিছিলের উপর বিধি নিষেধ জারি করায় এ দিন বেলপাহাড়িতে পঞ্চায়েত সমিতির ১২ নম্বর আসনের কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত ভট্টাচার্য ও তাঁর অনুগামীরা সাইকেল মিছিল করেন। ঝাড়খণ্ড পার্টির (নরেন) নেত্রী চুনিবালা হাঁসদা এ দিন লালগড়, রামগড় ও কাঁটাপাহাড়িতে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে পথসভা করেন। চুনিবালার অভিযোগ, “শাসক দলের বাইক বাহিনী পুলিশের চোখের সামনেই এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিরোধী দলের সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে।” লালগড়ের কাঁটাপাহাড়িতে বড়সড় পদযাত্রা করে ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি।
দাঁতনের সাবড়ায় সভা তৃণমূল সাংসদের।
সোমবার থেকে জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল-সিপিএমের গোলমালও হচ্ছে। সোমবার দুপুরে জামবনি ব্লকের দুবড়া গ্রামে সিপিএম সমর্থক মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। ওই ঘটনার জেরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে দলীয় কর্মীদের সিপিএমের লোকেরা মারধর করে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের দলীয় পতাকা ও পোস্টার ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে জামবনি থানার সামনে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পথ অবরোধ করেন তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূলের অভিযোগ মোতাবেক স্থানীয় সিপিএম নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা রুজু করার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। সোমবার রাতে জামবনির পড়িহাটি গ্রামে সিপিএমের পড়িহাটি লোকাল কমিটির সদস্য শেখ সাবের আলিকে তৃণমূলের লোকেরা মারধোর করে বলে অভিযোগ। তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সিপিএমের দলীয় কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, সিপিএমের হামলায় তাঁদের দুই কর্মীও জখম হন। তৃণমূলেরও দু’টি কার্যালয়ে সিপিএমের লোকেরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে এক সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ডহরেশ্বর সেনের অভিযোগ, “ভোটের আগে শাসকদল তাদের পুলিশকে দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা অভিযোগে জেলে পুরে রাখতে চাইছে। তির-ধনুক নিয়ে তৃণমূলের বাইক বাহিনী ঝাড়গ্রামের চুবকা অঞ্চল-সহ জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকা দাপিয়ে বেড়িয়েছে।”
এ দিন ডহরেশ্বরবাবু আরও দাবি করেন, “মঙ্গলবার তৃণমূল নেতা মুকুলবাবুর নেতৃত্বে শাসক দলের লোকজন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় গিয়েও পথসভা করার মতোও লোক জোটাতে পারেননি। তাই তৃণমূলের লোকেরা ধমকে-চমকে ও টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।”

ছবি: দেবরাজ ঘোষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.