|
|
|
|
জ্বর সেরে উঠতেই তিন ভাই-বোন উৎসবের মেজাজে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
আজ রথযাত্রা। মাহেশ থেকে গুপ্তিপাড়া, চন্দননগর থেকে ধনেখালি সর্বত্রই চলছে তারই প্রস্তুতি। রসে টইটুম্বুর কড়াইতে জিলিপি ফেলতে শুরু করেছেন দোকানি। কারও পসারে পুতুল থেকে ঘরকন্নার নানা টুকিটাকি।
মাহেশের রথযাত্রা এ বার ৬১৭ বছরে পড়ল। পনেরো দিন আগে দেড় দুধ আর গঙ্গাজলে স্নান করে জ্বর এসেছিল জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার। এই ক’দিন মন্দিরে কবিরাজের সেবায় আর লেপ কম্বলের আশ্রয়েই কাটিয়েছেন তাঁরা। এ বার সুদৃশ্য রথে চেপে সখী পৌর্নমসীর বাড়িতে বেড়াতে যাবেন তাঁরা। কোথাও এই গন্তব্যকে বলা হয় গুণ্ডিচাবাড়ি। এই যাত্রার সাক্ষী হতে মাহেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। |
|
মাহেশের রথ। —নিজস্ব চিত্র। |
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রথযাত্রায় কোনও রকম বিঘ্ন যাতে না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন। জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তা জোরদার করতে সড়কের পাশাপাশি গঙ্গার ঘাটগুলিতেও কড়া নজর রাখবে পুলিশ। বাহিনীর নেতৃত্বে থাকবেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা। এ ছাড়াও রাস্তায় থাকবে দেড়শোর বেশি স্বেচ্ছ্বাসেবক। জগন্নাথ মন্দিরে প্রবেশপথে ‘ডোর ফ্রেম’ মেটাল ডিটেক্টর বসানো হবে। সকাল থেকেই হাতে মেটাল ডিটেক্টর নিয়েও উপস্থিত থাকবেন আইবি-র অফিসারেরা। জিটি রোড ধরে রথ টান হয়। সেই কারণে দুপুর থেকে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যানজট এড়াতে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেবে পুলিশ।
গুপ্তিপাড়াতেও রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে উৎসাহের অন্ত নেই। এ বার গুপ্তিপাড়ার রথের আমূল সংস্কার করা হয়েছে। রথটি জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। গত কয়েক বছর ধরেই রথের আমূল সংস্কার চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় মানুষ। এ বার তাঁদের দাবি পূরণ হল। শ্রী শ্রী বৃন্দাবনচন্দ্র জিউ মঠের মহারাজ গোবিন্দানন্দ পুরি জানান, রাজ্য সরকার এই কাজে ১০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে। রথের ৫টি কাঠের চাকা (মোট চাকা ১২টি) বদল করা হয়েছে। ৯ চূড়া রথের প্রধান চূড়া কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেটিও সারানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, এখানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসুর নেতৃত্বে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হবে।
চন্দননগরে গঞ্জের বাজার থেকে জিট্ রোড হয়ে তালডাঙা পর্যন্ত রথ যায়। এই এলাকাতেও তাই সাজো সাজো রব। নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে এখানে এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষের নেতৃত্বে এখানেও যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ বাহিনী রাস্তায় থাকবে। রথযাত্রা উপলক্ষে প্রতিবারেই জমজমাট হয়ে ওঠে ধনেখালির দশঘড়া। এখানকার বিশ্বাস পরিবারের প্রাচীন রথটান নিয়ে মেতে ওঠেন বহু মানুষ। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই সেখানেও মেলা বসেছে। |
|
|
|
|
|