|
|
|
|
নর্দমায় যুবকের ক্ষতবিক্ষত দেহ, আতঙ্ক লিলুয়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাস্তার পাশে নর্দমার ধারে পড়ে ছিল একটি দেশি রিভলভার ও গাড়ির কাগজপত্র। নর্দমার উপর থেকে দেখা যাচ্ছিল শুধু একটা হাত। বাকি জায়গাটা ঢাকা ছিল প্রচুর ইট আর পাথরকুচিতে। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় সেই ইট আর পাথরকুচি সরাতেই বেরিয়ে পড়ে এক যুবকের মুখ থেঁতলানো, রক্তাক্ত মৃতদেহ। পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে ওখানেই খুন করে ইট ও পাথরকুচি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বালি-জগাছা ব্লকের লিলুয়া চকপাড়া পঞ্চায়েতের কালীতলায়। পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম রিঙ্কু ওরফে উজ্জ্বল বল (৩৫)।
|
উজ্জ্বল বল |
বাড়ি কাছেই, ভট্টনগর এসটিসি রোডে। পুলিশের অভিযোগ, রিঙ্কু এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী। আগে সিপিএমের হয়ে কাজ করত। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে তাদের সমর্থক হয়ে ওঠে। পুলিশ জানায়, এর আগে অপু দে নামে স্থানীয় এক ইমারত দ্রব্যের ব্যবসায়ীকে খুনের অভিযোগ উঠেছিল উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে। পরে জামিনে ছাড়া পায় সে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি উজ্জ্বল কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে জমি-বাড়ির দালালির কাজ করছিল। দলের মধ্যে টাকা-পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে গণ্ডগোল শুরু হয়। তদন্তকারীদের ধারণা, উজ্জ্বলকে খুনের পিছনে রয়েছে এই সমস্যাই। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত উজ্জ্বলকে তার এক সঙ্গী নবীন সরকার-সহ কয়েক জনের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে মদ্যপান করতে দেখা গিয়েছিল। সেখানে টাকা-পয়সা নিয়ে তাদের মধ্যে গোলমাল হয়। গভীর রাতে নবীনকে গুরুতর আহত অবস্থায় লিলুয়ার আর একটি জায়গা থেকে তার বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু উজ্জ্বলের খোঁজ মেলেনি। মঙ্গলবার সকালে উজ্জ্বলের মৃতদেহ উদ্ধার হয় ভট্টনগরে রাস্তার পাশে একটি দু’ফুট চওড়া নর্দমা থেকে। পুলিশের ধারণা, রাতে বাড়ির ফেরার সময়ে সঙ্গীদের হাতেই আক্রান্ত হয় উজ্জ্বল এবং নবীন। উজ্জ্বলকে বাঁশ, ইট দিয়ে থেঁতলে মারা হয়।
এ দিন ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে এলাকার পরিবেশ থমথমে হয়ে ওঠে। দোকানপাট, এমনকী স্থানীয় একটি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলও বন্ধ হয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দা কনক দেবনাথ বলেন, “গোটা এলাকা দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য। পুলিশকে বলেও লাভ হচ্ছে না। আমরা ভীষণ আতঙ্কিত।” হাওড়ার ডিসি সদর নিশাত পারভেজ বলেন, “ওই যুবকের বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা দুষ্কৃতীমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। সম্ভবত টাকা-পয়সা নিয়ে গোলমালের জেরে এই খুন বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি।” |
|
|
|
|
|