আর পারা যাচ্ছে না। এ বার নামতেই হবে। আর কেউ ভিতরে নেই তো? কিন্তু না। পারলেন না। প্রচণ্ড ধোঁয়া আর শ্বাসকষ্টের চোটে বিমানের বাইরে নেমে পড়তে বাধ্য হলেন। তিনি লি ইয়ুন হে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত আশিয়ানা বোয়িং ৭৭৭-এর কেবিন ম্যানেজার। তবে তাঁর চেষ্টা সফল। তিনিই শেষ যাত্রী যিনি বিমান থেকে বাইরে আসেন।
আর তার আগে?
|
লি ইয়ুন হে |
কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মৃত্যুকে প্রায় আহ্বান করে ফেলেছিলেন লি। আজ এক সাক্ষাৎকারে সেই হাড় হিম করা অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন তিনি। জানালেন, বিমান মাটিতে ছোঁয়ার এক মুহূর্ত আগে পর্যন্ত কিছু বোঝা যায়নি।
রানওয়েতে নামার সময়েই হঠাৎই খুব জোরে একটা ঝাঁকুনি হল। “তখনই বুঝলাম কিছু একটি গণ্ডগোল। কারণ এত জোরে ঝাঁকুনি তো অন্য দিন হয় না।” তার পরেই ককপিট থেকে ক্যাপ্টেনের গলা ভেসে এল। জরুরি অবতরণ করতে হবে। লির কথায়, “আমার মাথায় তখন একটাই চিন্তা, কী ভাবে যাত্রীদের নিরাপদে নামাব।”
শেষ যাত্রী নিরাপদে নামা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন লি। বিমানটি রানওয়েতে ধাক্কা খাওয়ার পরেই আগুন ধরে যায়। সেই আগুনে লির দেহের বেশ কিছুটা ঝলসে গিয়েছে। আঘাত লেগেছে মেরুদণ্ডেও।
কিন্তু কর্তব্য পালন থেকে পিছু হটেননি। লির এই সাহসিকতার প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত সান ফ্রান্সিসকোর দমকল প্রধান জোয়ান হেস হোয়াইট।
“ও এত শান্ত ছিল দেখে মনে হল টার্মিনাল থেকে আসছে। কোনও দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ভিতর থেকে নয়। ওই তো আমাদের হিরো”, মন্তব্য জোয়ানের। আর লির মতে, “যতক্ষণ না চিকিৎসক পরীক্ষা করছিলেন বুঝতেই পারিনি আমার এতটা লেগেছে। এত বড় দুর্ঘটনা কী ভাবে ঘটল তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে একটা বিষয়ে সবাই একমত, দুর্ঘটনার দিন অর্থাৎ শনিবার আবহাওয়া যথেষ্ট ভাল ছিল। রানওয়েতে পর্যাপ্ত আলোও ছিল।
|