সান ফ্রান্সিসকোয় মৃত দুই
রানওয়ে ছুঁল লেজ, পুড়ে গেল বিমান
ড়িতে বেলা সাড়ে ১১টা। শনিবার সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে পৌঁছেই গিয়েছিল আশিয়ানা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ২১৪। মাটির কাছাকাছি আসতেই চাকা নয়, নেমে এল লেজটা। ধাক্কা খেল সজোরে। আর উপড়ে বেরিয়ে গেল বিমান থেকে। থরথর করে কাঁপছে বিমানটি। যাত্রীরা তখনও টের পা ননি, বাইরে কী চলছে! টের পেলেন কিছু ক্ষণের মধ্যেই।
সোল থেকে ৩০৭ জন যাত্রীকে নিয়ে ফেরার পথে রানওয়েতে মুখ থুবড়ে পড়ল বোয়িং ৭৭৭। আহত প্রায় দু’শো। মৃত্যু হল দু’জনের। লেজ ভেঙে যাওয়ার পরেই ককপিট থেকে ডানা দু’টোর মাঝ বরাবর ঝলসে গেল ছাদটা। বিমানের মাথার ওপর থেকে অ্যালুমিনিয়ামের চাদরটা খসে পড়ল ভেতরে, যাত্রীদের ওপরই। সৌভাগ্যক্রমে ডানার কাছে আপৎকালীন দরজাগুলো খুলেছিল। জ্বলন্ত অগ্নিপিণ্ড থেকে হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে এলেন যাত্রীরা।
২০০১ সালে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দর থেকে ওড়ার পরেই ভেঙে পড়ে আমেরিকান এয়ারলাইন্সের এ-৩০০। ২৬০ জন যাত্রী মারা গিয়েছিলেন। সেই আতঙ্কটাই শনিবার উস্কে দিয়েছিল সান ফ্রান্সিসকো। প্রথমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না জনা ষাটেক যাত্রীকে। পরে অবশ্য সন্ধান মেলে তাঁদের। বিমানে ৩ জন ভারতীয় ছিলেন। এক জনের ঘাড়ের হাড় ভেঙেছে। বাকিরা সুস্থ। ১৮২ জন হাসপাতালের বিছানায় শয্যাশায়ী। ৫০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। বিমানবন্দরের তরফে ডাউগ ইয়াকেল বলেন, মৃত দু’জনেই চিনা কিশোরী। সন্দেহ, তারা বিমানের পিছন দিকে বসে ছিল।
আগুনে পোড়া বিমানটি। শনিবার সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরের ২৮ নম্বর রানওয়েতে। ছবি: রয়টার্স।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায়, বিমানের লেজটা হঠাৎই মাটিতে গুঁতো খেল। আর তার পরেই ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে পড়ল সেটা। লাট্টুর মতো ঘুরে গেল উড়োজাহাজটা। জ্বলে উঠল দাউদাউ করে। বিমানের ভিতরে চলছে প্রাণে বাঁচার লড়াই। অল্পবয়সী একটি ছেলে বলল, “বিমান মাটিতে গুঁতো খেতেই, ছাদটা ভেঙে পড়ল লোকের মাথার উপর।”
সান ফ্রান্সিসকোর ওই রানওয়ে শুরু একেবারে সাগরের ধার ঘেঁষে। বিমানবন্দরকে জল থেকে আলাদা করে রেখেছে একখানা পাথুরে দেওয়াল। পুরো রানওয়েতেই ছড়িয়ে পড়ে বিমানের ভাঙাচোরা অংশ। লেজ, চাকার অংশটা পড়ে রয়েছে পাথুরে দেওয়ালটার কাছে। বিমানের থেকে বহু দূরে।
তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। কেন এমন হল বিশ্বের সব চেয়ে বড়, দু’ইঞ্জিনে চলা জেট বিমানের! ক্ষমতার বিচারে বোয়িং ৭৭৭ প্রথম সারির যান। যাত্রী নেওয়ার ক্ষমতাও তিনশোর উপর। চালকরাও দারুণ দক্ষ। বিস্মিত বিমান নিরাপত্তা আধিকারিক জন কক্স, “এত অভিজ্ঞ পাইলট, কত শত বিমান চালিয়েছেন ওঁরা, কী ভাবে যে এটা হল!”
লেখক বেন নারাসিনও যাত্রী ছিলেন এই বিমানের। জানালেন, “খুব বেশি গতি ছিল না বিমানটির। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে ঝুলেছিল লেজটা। মাথাটা আকাশের দিকে। চাকার বদলে রানওয়ে ছুঁল লেজটাই।” প্রাথমিক তদন্তেও তেমনটাই ধরা পড়েছে। ২৮ নম্বর রানওয়েতে নামার কথা ছিল বিমানটির। কিন্তু কোণাকুনি নামার বদলে সোজা নামে সেটি। আর তাতেই বিমানটি লেজে ভর করে নামে।
কারণ খুঁজছে তদন্ত কমিটি। আর যাত্রীরা বলছেন, “যাক! এ যাত্রায় তো রক্ষা পাওয়া গেল!”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.