বোমার আঘাতে আহত হলেন এক সিপিএম কর্মী। মঙ্গলবার সকালে তাপস প্রামাণিক নামে ওই প্রার্থীকে লক্ষ করে বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, তাপসবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ দিন গলসির তাহেরপুরের বাসিন্দা তাপসবাবু গ্রামের কাছে দামোদরে প্রকৃতির দাকে সাড়া দিয়ে ফিরছিলেন। তখনই কেউ তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। বোমা লাগে তাঁর পেটের ডান দিকে। হাসপাতালে আহত সিপিএম কর্মীর ভাই স্বপন প্রামানিক বলেন, “দাদা বরাবরই সিপিএম করেন। সোমবার বিকেলে তিনি গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য আঙুরবালা দেবীর সমর্থনে তাহেরপুরে দলীয় পতাকা টাঙাতে গিয়েছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের লোকেরা তাঁকে বাধা দেয় এবং পতাকা খুলে দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁকে ও অন্যান্যদের মারধর করা হয়।” পরে সোমবার রাতে দলীয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের একদল লোক শাসিয়ে যায় বলেও তাঁর অভিযোগ। স্বপনবাবুর দাবি, “এ দিন সকালে গ্রামে ফেরার সময় ওই লোকেরাই দাদাকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ে।” |
তাপসবাবুকে অন্য সিপিএম কর্মীরা উদ্ধার করতে গেলে তৃণমূলের লোকেরা তাঁদেরও বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তাহেরপুরের স্থানীয় বাসিন্দা অজয় দাসের বক্তব্য, “দলের মহিলা প্রার্থীর হয়ে প্রচার করতে নামার পরেই সিপিএমের সমর্থকদের উপর নানা ধরনের আক্রমণ চালাচ্ছিল তৃণমূলের লোকেরা। শেষ পর্যন্ত তারা বোমা নিয়ে হামলা চালিয়েছে।”
সিপিএমের গলসি-বুদবুদ জোনাল কমিটির সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “ওই গ্রামে আমাদের মহিলা প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাবার জন্য প্রচুর চাপ দিয়েছিল তৃণমূল। বাধ্য হয়ে তিনি গ্রাম ছাড়া হয়েছিলেন। ফলে গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের ওই আসনে কার্যত কোনও প্রচারই করতে পারিনি আমরা। গতকালই প্রথম প্রচারের জন্য গ্রামে দলীয় পতাকা টাঙানো হচ্ছিল। তাতেই ওরা হুমকি দেয়, সকালের মধ্যে পতাকা না খুলে নিলে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হবে। সকাল হতেই গ্রামে ঢুকে ৩০-৪০ জন তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থক বোমাবাজি শুরু করে। বোমায় আহত হয়েছেন আমাদের ওই কর্মী। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।” হামলায় মোট তিনজন দলীয় কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল।
তবে তৃণমূলের গলসি ২ ব্লকের সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী সিপিএম কর্মীদের উপর আক্রমণের ঘটনা অস্বীকার করে বলেছেন, “ওই জায়গাটাই সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি। গতকাল থেকেই ওরা আমাদের প্রার্থী ও অন্যান্য সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছিল। এ দিন সকালে আমাদের উপরে হামলা করতে ওরাই বোমা বানাতে গিয়েছিল। কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় বোমা বানাতে গিয়ে সেই বোমা ফেটেই ওদের লোকেরা আহত হয়েছে।”
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “ওই গ্রামে বোমার আঘাতে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে পুলিশ খবর পেয়েছে। তবে সিপিএম ও তৃণমূল দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। গলসি থানাকে বলা হয়েছে, অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে।” |