সালানপুরে অস্বস্তি তৃণমূলে
টিকিট পাননি পছন্দের নেতারাই, ক্ষুব্ধ নিচুতলা
উঁচুতলা ঠিক করে দিয়েছে, প্রার্থী হবে কে। কিন্তু সব সিদ্ধান্তের সঙ্গে সহমত হতে পারছেন না নিচুতলার কর্মীরা। আর তাই তৃণমূলের ঊচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কর্মীদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসছে সালানপুর ব্লকে। আড়ালে-আবডালে তো বটেই, কখনও প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন কর্মীরা। অনেকে আবার দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ফলে যে আসনগুলিতে জয় আসত সহজে, সেখানেও লড়াই কঠিন হয়ে পড়ছে, মেনে নিচ্ছেন ব্লকের তৃণমূল নেতা-প্রার্থীরাও।
উত্তরামপুর জিৎপুর পঞ্চায়েতের কল্যাণগ্রাম এলাকায় নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন পীযূষ নাগ। তাঁর দাবি, প্রথমে তৃণমূল নেতারা তাঁকেই মনোনয়ন দিতে বলেছিলেন। অথচ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন তাঁরা তাঁকে প্রার্থিপদ তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর দাবি, কারণ জানতে চাইলে দলের নেতারা জানান, কলকাতা থেকে দলের উচ্চস্তরের নেতারা অন্য এক জনকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পীযূষবাবু বলেন, “কিন্তু আমি এই নির্দেশ মানিনি। মনোনয়ন না তুলে নৌকা চিহ্নে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছি।” প্রচারে বেরিয়ে অনেক ভোটারের কাছেও জেতার অভয় পাচ্ছেন পীযূষবাবু। তাঁর সঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচারে সঙ্গীও হচ্ছেন কিছু বাসিন্দা। পীযূষবাবুর দাবি, “দলের কিছু নেতা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তবে ভোটে জিতলে তৃণমূলকেই সমর্থন করব।” ভোটারদের কাছে গিয়েও নিজেকে ‘আসল তৃণমূল প্রার্থী’ বলে দাবি করছেন তিনি।
এই অবস্থায় যে লড়াইটা সহজ থাকছে না তা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের প্রার্থী তাপস চৌধুরী। তাঁর কথায়, “প্রচার হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু ঘরশত্রু বিভীষণ নির্দল প্রার্থীর ধাক্কা সামালাতে বেগ পাচ্ছি।” তাঁর আবার পাল্টা দাবি, দলের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন পীযূষবাবু। যদিও তৃণমূল ‘যে কোনও ভাবে’ জিতবে, নিশ্চিত তিনি।
সালানপুর ব্লকের রূপনারারায়ণপুরে পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনের প্রার্থিপদ নিয়েও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এলাকার নিচুতলার তৃণমূল কর্মীরা জানান, দলের নেতারা প্রথমে ওই আসনের জন্য স্থানীয় বাজার সমিতির সম্পাদক তথা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমানকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তাঁকে দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে এলাকার প্রাক্তন কংগ্রেস কর্মী নদেরচাঁদ সেনকে তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড় করানো হয়। মহম্মদ আরমান জানান, মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে প্রচারও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন সকালে হঠাৎ তাঁকে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। আরমান বলেন, “নেতাদের নিদের্শ তো আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু এলাকার কর্মীরা তো এই ঘটনা মানতে পারছেন না। দল যাকে প্রার্থী করেছে তিনি জিতবেন কি না, তা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে আমি দাঁড়ালে অবশ্যই জিততাম।” তবে এখনও দলের নির্দেশ অনুযায়ীই কাজ করে চলেছেন বলে দাবি তাঁর।
শুধু রূপনারায়ণপুর বা জিৎপুর নয়, সালানপুর, সামডিহি, বাসুদেবপুর জেমারি, কাল্লাতেও চিত্রটা প্রায় এক। সালানপুর ব্লকের দলের অন্যতম নির্বাচনী পরিদর্শক পাপ্পু উপাধ্যায়ও স্বীকার করেছেন, নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তবে পঞ্চায়েত সমিতিতে জিতবেন বলেই দাবি তাঁর। তিনি বলেন, “ভোট হোক। আগে পঞ্চায়েত সমিতি তৈরি করি। তার পরে সব ক্ষোভ কাটিয়ে দেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.