|
|
|
|
দূরে থেকে কাছে থাকা |
দু’জনে দু’দেশে। দীর্ঘ শারীরিক অনুপস্থিতি। দেখা বলতে স্কাইপ।
তবু থোড়াই কেয়ার করে তরুণ-তরুণীরা দিব্যি বিয়ে করে ফেলছেন।
লং ডিসট্যান্স ম্যারেজের রমরমা নিয়ে লিখছেন পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায় |
‘লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ।’ কী বাংলা করব এর? দীর্ঘ দূরত্বের সম্পর্ক?
ভৌগোলিক দূরত্বে সেই সম্পর্ক ছিন্ন। দু’জনের দু’প্রান্তে ছিটকে থাকা। দীর্ঘ শারীরিক অনুপস্থিতি। অদেখা। তবুও বাঁধা থাকে মনের গ্রন্থি। ভাবনায়, স্বপ্নে, ভালবাসায়, দায়িত্বে, আনুগত্য, স্মৃতিতে, অপেক্ষায়, অভিমানে থেকে যায় ‘সম্পর্ক’-এর অস্তিত্ব।
মহাভারতেও দ্রৌপদীকে বাদ দিয়ে অর্জুনের সঙ্গে তাঁর বাদবাকি স্ত্রী-র সম্পর্ক বা কৃষ্ণের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীদের সম্পর্ক কি ‘লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ’ নয়?
কেন এই দূরে থাকা
আগে বৌ থাকত গ্রামে। স্বামী কাজের সুবাদে থাকত কলকাতা। তার পর এল একটা সময় বৌ থাকে কলকাতায়, স্বামী কর্মক্ষেত্রে মুম্বই বা দিল্লি। এখন এই দূরত্ব টেনে নিয়ে গিয়েছে সাগর পারে। বৌ নৈহাটি তো স্বামী নিউ ইয়র্ক। স্বামী মাসকট তো বৌ মুম্বই।
এক দিকে বিশ্বায়ন অন্য দিকে কর্পোরেট সংস্কৃতি। উচ্চাকাঙ্ক্ষা, কেরিয়ারে তুঙ্গ প্রতিষ্ঠা লাভের ইঁদুর দৌড় স্বামী-স্ত্রীকে টেনে হিঁচড়ে ভাগ করে দিচ্ছে দূর দেশ-দেশান্তে।
দূর দেশে দূরে থাকা সম্পর্কে সুখে যেমন আছেন কেউ কেউ, কেউ কেউ আছেন টানাপোড়েনেও।
ইদানীং এই লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ প্রেম আর বিয়ে, দুই ধরনের সম্পর্কেই জায়গা করে নিচ্ছে। বৌ যদি থাকে দিল্লিতে, স্বামী থাকছে নিউ ইয়র্কে। দিনান্তে ফোনে কথা, স্কাইপে আড্ডা, মেল, চ্যাট এই সব দিয়েই বিনি সুতোর মালায় গাঁথা রয়েছে আজকের বহু দাম্পত্য।
অন্য ভাবে এটাও বলা যায় যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় অনেকেই দূরে থাকার ঝুঁকি নিচ্ছেন। রোজই তো কথা বলা যাবে কোনও না কোনও ভাবে এই সান্ত্বনাটা মাথায় থাকছে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই।
দূরে দূরে থাকতে হবে অনেক দিন, হয়তো কোনও একটা সময়ে গিয়ে এক সঙ্গে থাকা হবে এই ধরনের ভাবনা চিন্তাতেই দিব্যি টিকে আছে লাখ লাখ সম্পর্ক। মাঝে মাঝে বৌটি বিদেশে স্বামীর কাছে ছুটি কাটাতে যাচ্ছে। আর কখনও বা স্বামীটি ফিরছে দেশে। সান্নিধ্য বলতে এইটুকুই। তাতেই সন্তান, সম্পর্ক, লোক-লৌকিকতা লতায় পাতায় বেড়ে গাছ হয়ে উঠছে।
দূরে থেকে ভাল থাকা
বিপ্রতীপ দোহায় চাকরি করেন, স্ত্রী পত্রালি কলকাতায় বিউটি থেরাপিস্ট। পছন্দমতো কাজ না-পেলে দোহায় যাবেন না বলে ঠিক করেছিলেন। আড়াই বছর দু’জনে এই ভাবে পৃথিবীর দু’প্রান্তে ছিলেন। যোগসূত্র মূলত ছিল স্কাইপ, “তা-ও মানুষ তো। মাঝেমাঝে খুব কষ্ট হত। মনে হত, দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরি। বিপ্রতীপের ‘ফিজিক্যাল অ্যাবসেন্স’টা এক এক সময় অসহনীয় ছিল। ওর গায়ের গন্ধ পেতে ইচ্ছা করত।” বলছিলেন পত্রালি। শেষ পর্যন্ত ভাল কাজ নিয়ে তিনিও দোহায় শিফট করেছেন। দীর্ঘ বিরহ পার করে এখনও বিশ্বাস করেন, “দূরত্বের একটা আলাদা আঠা আছে। সব সময় কাছে না-থেকে একটু চোখের আড়াল হলে টানটা বেঁচে থাকে,” বললেন পত্রালি।
কস্তুরী চক্রবর্তী প্রবাসী বাঙালি। হায়দরাবাদে থাকেন। হিন্দির অধ্যাপিকা। তিন ছেলেমেয়ে। ফিনল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে কাজের দুর্দান্ত অফার পেয়েছিলেন। বড় দুই ছেলেমেয়ে তখন হায়দরাবাদে বেশ উঁচু ক্লাসে পড়ে। তারা রয়ে গেল বাবা আর অবিবাহিত পিসি-র সঙ্গে হায়দরাবাদে, কস্তুরী তিন বছরের ছোট মেয়েকে নিয়ে চলে গেলেন ফিনল্যান্ড, ছয় বছরের জন্য। কস্তুরীর কথায়, “আমার স্বামী ছেলেমেয়েদের দেখবেন বলে তাড়াতাড়ি ভিআরএস নিয়েছিলেন। আমার ননদ-ও আমার বড় সাপোর্ট ছিল। আর ছেলেমেয়েরা ছিল সম্পর্কের বড় সেতু। তাই হয়তো এত দিনের দূরত্বেও বিয়েটা টিঁকে গিয়েছে।” |
|
ঝুঁকিও আছে
সম্পর্ক-বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিদ অজিত দাস মহাপাত্র বলছিলেন, “এই ধরনের সম্পর্কে যতক্ষণ না কোনও এক জনের মানসিক সমস্যা-অবহেলাবোধ-ইগো-একাকীত্ব-যৌন অপ্রাপ্তিবোধ-সন্দেহ-আসছে তত ক্ষণ সেটা টিঁকে থাকবে।’’ অজিতবাবুর কাছে কাউন্সেলিংয়ের জন্য এমন অনেক মহিলা আসেন যাঁদের স্বামীরা বিদেশে কাজ করেন। বাড়ির যাবতীয় দায়িত্ব এবং বাচ্চাদের সামলানোর ভার এসে পড়ে মায়েদের ঘাড়ে। এক দিকে দায়িত্ব, অন্য দিকে আবেগগত ভাবে কারও উপর নির্ভর করতে না-পারা, দুইয়ের মাঝখানে দিশেহারা হয়ে যান এই মহিলাদের অনেকেই।
এক মহিলার যেমন অভিযোগ ছিল, “আমার স্বামী কাজের জন্য আমেরিকায় আছেন। ওঁর সঙ্গে এখন সম্পর্ক বলতে রোজ রাত ১০টা নাগাদ ওঁর একটা ৫-৭ মিনিটের ফোন। সেটা জুড়ে থাকে শুকনো কেজো কথা। ‘বাচ্চা স্কুলে গিয়েছে? গ্যাসটা এনেছ? ব্যাঙ্কে গিয়েছিলে?’ ইত্যাদি ইত্যাদি। তার পর খানিকটা ও কেমন আছে সেটা জানায়। ওখানে কতটা ঠান্ডা বা গরম সেটা বলে। পুরোটাই প্রেমহীন-প্রাণহীন-খটখটে রুটিন দায়িত্বপূরণ। শারীরিক চাহিদা দূরে থাক, আমার একটা ন্যূনতম মানসিক চাহিদা তো আছে। কী ভাবে আমার মন পাবে তার খোরাক? এই ভাবে থাকতে-থাকতে যদি আমার পা পিছলোয় তা হলে সবাই তেড়েফুঁড়ে আমাকেই দোষ দেবেন।’’ ঠিক এমনটাই তো দেখানো হয়েছিল মহেশ মঞ্জরেকরের ‘অস্তিত্ব’ ছবিতে। উচ্চাভিলাষী শ্রীকান্ত ব্যবসার কাজে মাসের পর মাস ঘরছাড়া। একাকীত্ব গ্রাস করে স্ত্রী অদিতিকে। তাঁকে গান শেখাতে আসতেন মল্লার। শারীরিক-মানসিক আশ্রয় খোঁজা অদিতি দুর্বল মুহূর্তে তাঁর সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন।
লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে শারীরিক চাহিদার কিছুটা আদৌ কি মেটানো সম্ভব। স্কাইপের মাধ্যমে যখন দেখাশোনা হয় তখন কি হতে পারে কোনও শরীরী ভাবের আদানপ্রদান? সাইবার ল বলছে এমনটা না হওয়া বাঞ্ছনীয়। ধরা পড়লে লাখ খানেক টাকা জরিমানা দিতে হবে সাইবার ক্রাইমের দণ্ড হিসেবে।
আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড নয়তো
মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম মূলত দু’ধরনের সমস্যার কথা বলছিলেন। প্রথমত, লং ডিসট্যান্ট রিলেশনশিপ চলতে থাকে ফোন, টেক্সট, ই-মেল, চ্যাট, স্কাইপ মারফত। কিন্তু সব সময় এই যান্ত্রিক মাধ্যমগুলোয় নিজেকে মেলে ধরা বা অনুভূতিগুলো ঠিকঠাক প্রকাশ করা সম্ভব হয় না। অনেক কিছু না-বলা থেকে যায়, অনেক কিছু বলতে গিয়ে তার ভুল ব্যাখ্যা হয়, আবার অনেক সময় সম্পর্কটা বড্ড গভীরতাহীন, ওপর-ওপর হয়ে যায়। সেই যে বলে না, ‘আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড।’
জয়রঞ্জনবাবুর সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে অনিরুদ্ধ আর আত্রেয়ী-র সম্পর্কের কথা উঠেছিল। অনিরুদ্ধ স্কলারশিপ পেয়ে আট মাসের জন্য লন্ডনে ছিলেন, আত্রেয়ী-ও অসম্ভব ভাল ছাত্রী, কলকাতায় তত দিনে দারুণ চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। দু’জনের নিবিড় প্রেম। চোখে হারানো। শারীরিক সম্পর্কও ছিল। বিয়ে করবেন একেবারে ঠিকঠাক। অনিরুদ্ধ লন্ডন যাওয়ার পর নিয়মিত মেল, চ্যাট, ফোনও চলছিল।
তবুও হয়তো একাকীত্বের কোনও দুর্বল মুহূর্তে অনিরুদ্ধ শারীরিক ভাবে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন লন্ডনের এক সহপাঠিনীর সঙ্গে। কলকাতায় ফেরার আগে সেই সম্পর্ক ভেঙেও যায়। আত্রেয়ীকে লুকিয়ে যান সব কিছু। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে স্কলারশিপ পেয়ে এ বার আত্রেয়ী এক বছরের জন্য চলে যান ইউরোপ। ফেরার পর বছর দেড়েকের বেশি টেকেনি ওঁদের সম্পর্কটা। কোথায়-কখন যেন তার ছিঁড়ে গিয়েছিল। আত্রেয়ী তার জন্য দায়ী করেন দূরত্বকেই। বলেন, “ভালবাসার মানুষকে বেশি দিনের জন্য চোখের আড়াল করতে নেই। ভালবাসা হারিয়ে যেতে পারে, মানুষটাও।”
হাজার মাইল দূরেও ভালবাসা বেঁচে থাকছে
কুণাল বসুর গল্প অবলম্বনে তৈরি অপর্ণা সেনের ‘জাপানিজ ওয়াইফ’-এ আমরা দেখেছি কোনও দিন কেউ কাউকে চোখের দেখা না-দেখেই হাজার-হাজার কিলোমিটার দূরত্বে থেকে ভালবাসার প্রতি অনুগত থাকে দুই নর-নারী। হয়তো বাস্তবে এতটা সব সময় সম্ভব নয়, তবু কিছুটা যে হয় তার অনেক উদাহরণ আছে।
যেমন সায়ন্তিকা আর রাজদীপ। দু’জনেই পদার্থবিজ্ঞানী। কলকাতায় একই সংস্থায় গবেষণা করতে গিয়ে আলাপ। সেখান থেকে প্রেম এবং বিয়ে। তার পর গবেষণার আরও ভাল সুযোগ পেয়ে রাজদীপ গেলেন প্যারিসে। এখানে গবেষণা ছাড়লে সায়ন্তিকার কেরিয়ারের ক্ষতি হয়ে যেত। তাই তিনি রয়ে গেলেন কলকাতায়। এই ভাবে চার বছর কেটে গেছে। মাঝে দু’বার এক মাসের জন্য সায়ন্তিকা প্যারিস ঘুরে এসেছেন। দূরত্ব তাঁদের ভালবাসায় ছাপ ফেলেনি।
লং ডিসট্যান্স সম্পর্ক আর বাঙালি
সেই কবে থেকে বাঙালি পুরুষ গ্রামের বাড়িতে বৌ-ছেলেমেয়ে রেখে কলকাতায় পড়তে বা চাকরি করতে আসত। মেসে থাকত। সপ্তাহান্তে বা দু’মাসে কিছু দিনের জন্য বাড়ি যেত। প্রতীক্ষায় দু’জনের বুক ঢিপঢিপ। আতরমাখানো চিঠিতে মনের হালের ব্যাখ্যান। তার পর যখন দেখা সে রাতে হাতে পানের থালা নিয়ে ঘোমটা পরা বৌটি সলজ্জ ভাবে খাটের পাশে এসে দাঁড়াত। কলকাতার মেসবাড়িগুলো বেঁচেই ছিল এই লং ডিসট্যান্স রিলেশনের দৌলতে। কুলীন বাঙালিবাবুটি ৩০-৩৫টি বিয়ে করতেন। সারা বছর ৩০-৩৫টি শ্বশুরবাড়িতে ঘুরে-ঘুরে কাটাতেন। এক বৌয়ের সঙ্গে একবার দেখা হওয়ার তিন-চার বছর পর হয়তো আবার দেখা হত।
সেই ট্র্যাডিশনই কিছুটা উল্টে-পাল্টে এখনও চলেছে। এখন কানাডা-প্রবাসী স্বামীটি বিদেশে আসার আগে তাঁর স্পার্ম প্রিজার্ভ করে রেখে আসছেন কলকাতার চিকিৎসকের ল্যাবরেটরিতে। সেখানেই নিজের ডিম্বাণু সংরক্ষণ করে চিন-এ ভাস্কর্য নিয়ে গবেষণা করতে চলে যাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁরা দু’জনে বিদেশে থাকাকালীন কলকাতার ল্যাবরেটরিতে তাঁদের শুক্রাণু-ডিম্বাণু মিলিয়ে ভ্রূণ তৈরি করছেন চিকিৎসক। সেই ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে কোনও সারোগেট মায়ের গর্ভে। নির্দিষ্ট সময়ে জন্ম নিচ্ছে সন্তান, তত দিনে কাজ শেষ করে ঘরে ফিরছেন বাবা বা মা। দূরত্বে থেকেও সম্পর্ক গড়ার এমন মুন্সিয়ানাকে বলতেই হয় ছিন্ন তবু ছিন্ন নয়!
|
কী করা উচিত নয় |
সুখে থাকার টোটকা |
• রেগে বা টেনশনে থাকলে, খুব বেশি অবসাদে থাকলে সেই মূহূর্তে ফোন, চ্যাট বা মেল না-করাই ভাল। একটা ভুল শব্দ সম্পর্কে ধাক্কা দিতে পারে।
• কথাবার্তা বা মেল অভিযোগ দিয়ে শুরু করা উচিত নয়। এককথা বেশি ঘ্যানঘ্যান করাও অনুচিত
• শুধু শুকনো কেজো কথা বলা উচিত নয়। নিজেরটা কম বলে উল্টো দিকে থাকা লোকটির কথা বেশি শোনা উচিত
• এমন কিছু বলবেন না যাতে আপনার সঙ্গীর সন্দেহ বা ঈর্ষার উদ্রেক হয়
• দূরে থাকা এবং দেখা না-হওয়া নিয়ে লাগাতার আফশোস বা হতাশা প্রকাশ করা উচিত নয় |
• দীর্ঘ, ঘনিষ্ঠ মেল লিখুন। মাঝেমাঝে হাতে লেখা চিঠি পাঠাতে পারেন। ওয়েবক্যাম রাখা জরুরি
• কথা বা চ্যাটের সময় দু’জনে ভবিষ্যৎ জীবন একসঙ্গে কী ভাবে কাটাবেন তা নিয়ে মাঝেমাঝে প্ল্যান করুন
• মাঝেমধ্যে দেখা করে কিছু দিন একসঙ্গে সময় কাটান
• ৭ দিনের মধ্যে ৬ দিন নিয়মিত ফোনে কথা, স্কাইপ বা মেল হোক। একটা দিন রাখুন যেদিন দু’জনের কোনও যোগাযোগ হবে না
• দিনে একাধিকবার মোবাইলে ছোট ছোট টেক্সট করুন। যেমন ‘লাভ ইউ’, ‘মিসিং ইউ’, ‘ক্লোজ ইওর আইজ অ্যান্ড আই অ্যাম দেয়ার’ ইত্যাদি |
পরামর্শ মনোবিদ জয়রঞ্জন রাম |
পরামর্শ মনোবিদ মলয় ঘোষাল |
|
|
|
|
|
|