শীতলখুচি গোপীনাথ হাইস্কুলে দূর শিক্ষায় বিএড প্রশিক্ষণের জন্য ৭ জন শিক্ষক শিক্ষিকার তালিকা জেলা শিক্ষা দফতরে জমা দিয়েছিলেন প্রধানশিক্ষক। তালিকায় তাঁদের নাম নেই। কোচবিহার মোয়ামারি তত্ত্বনাথ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ ৭ জনের তালিকা জমা দিয়েছিলেন। নাম রয়েছে মাত্র ২ জনের। বাণেশ্বরের সিদ্ধেশ্বরী কোকিলাদেবী হাইস্কুলের ৬ জনের মধ্যে তালিকায় রয়েছেন মাত্র ১ জন। দিনহাটার মাতালহাট হাইস্কুল, কোচবিহারের বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ বা মধুপুর হাইস্কুলের মতো বিভিন্ন স্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের, বৃত্তিমূলক শাখার শিক্ষকের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকদের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে।
শিক্ষা দফতরের তরফে ইন্টারনেটে প্রকাশিত দূরশিক্ষায় এই জেলায় বিএড প্রশিক্ষণহীন কর্মরত শিক্ষকদের ভুলে ভরা এক তালিকা প্রকাশের প্রতিবাদে সোমবারই আন্দোলনে নামে ডান বাম বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। কোচবিহারের ডিআই মাধ্যমিক মহাদেব শৈব বলেন, “জেলা শিক্ষা দফতরে তরফে পাঠানো তালিকা আর ইন্টারনেটে প্রকাশিত তালিকা এক নয়। নতুন করে তালিকা করা হচ্ছে।” কেন্দ্রীয় শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে সমস্ত প্রশিক্ষণহীন হাইস্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএড প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করতে হবে। জেলায় এমন শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা ১৮১৫ জন। তাঁদের মধ্যে ৫ বছর বা তার বেশি দিন চাকরি করছেন, এমন পাঁচ শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার বেতন বৃদ্ধিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সকল প্রশিক্ষণহীনদের বিএড করার সুযোগ দিতে চলতি বছর থেকে ওপেন অ্যান্ড ডিসট্যান্স লার্নিং বা ওডিএল মোডে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১২ জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষা দফতরের তালিকাভুক্তদের অনলাইনে আবেদন জানানোর সময়সীমাও চূড়ান্ত হয়েছে। এবিটিএ’র জেলা সম্পাদক সুজিত দাস বলেন, “ভুলে ভরা ওই তালিকায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের নামও রয়েছে। শিক্ষা দফতর এবং রাজ্য সরকার ভুলের দায় এড়াতে পারে না। সমস্যা সমাধানের দাবিতে এ দিন ডিআইকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।” জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির তরফে ডিআই অফিসেও বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সংগঠনের নেতা বাণীকান্ত ভট্টাচার্য এই দিন বলেন, “ভুলেভরা তালিকা প্রকাশ করে প্রশিক্ষণহীনদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে শিক্ষা দফতর।”
তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের তরফে এদিন ডিআই অফিসে বিক্ষোভ দেখান হয়। সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “প্রশিক্ষণহীন হাইস্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার দূরশিক্ষায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। যদিও সে ব্যবস্থা ভেস্তে দেওয়ার জম্য আমলাদের একাংশ ষড়যন্ত্র করছেন বলে মনে হয়। আমরা দ্রুত নির্ভুল তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছি।” |