হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টারের পদ রয়েছে ৮ টি। রয়েছেন সাকুল্যে একজন। তাতে কার্যত রোগী পরিষেবার বিভিন্ন কাজে সমস্যা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী এবং তাঁর লোকদের।
সম্প্রতি সরঞ্জাম রাখার ঘর সময় মতো না খোলায় চক্ষু বিভাগে সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে থাকতে হয় রোগীর পরিবারের লোকদের। ওই বিভাগে ঘর খুলে সরঞ্জাম বার করার দায়িত্ব যে নার্সদের উপর ছিল তাঁরা দু জনের কেউই ছিলেন না। একজন ছুটিতে ছিলেন এবং অপর জন অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি। অথচ সেই জায়গায় কাউকে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়নি।
মূলত ওয়ার্ড মাস্টাররাই এই কাজ করে থাকেন। সে কারণেই চিকিৎসা করাতে আসা রোগী এবং তার পরিবারের লোকদের বিপাকে পড়তে হয়। সমস্যার কথা স্বীকার করেন হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাসও। তিনি বলেন, “গত কয়েক বছরে ৩ জন ওয়ার্ড মাস্টার অবসর নিয়েছেন। বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন দুই একজন। সেই জায়গায় নতুন ওয়ার্ড মাস্টার কেউ নিয়োগ হননি। সহকারি সুপার পদে রয়েছেন ২ জন। ওয়ার্ড মাস্টারের অভাবে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সহকারি সুপাররাই তা দেখছেন। এমনকী কখনও আমাকেও সে সব কাজ দেখতে হচ্ছে।”
হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কর্মীদের দিয়ে চাবি পাঠিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে বহির্বিভাগ খোলা, বিভিন্ন ওয়ার্ডে কোথায় কোন স্বাস্থ্য কর্মী, সাফাই কর্মীদের দায়িত্ব তা ঠিক করেন ওয়ার্ড মাস্টারই। তা ছাড়া ওয়ার্ডে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, তুলা, গজ, ব্যান্ডেজ স্টোর থেকে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ওয়ার্ড মাস্টারকেই নিতে হয়। রোগীদের খাবার সঠিক সময়ে পৌঁছচ্ছে কি না এ ধরনের অনেক কাজও রয়েছে তাঁদের। কোনও রোগী পালিয়ে গেলে বা না জানিয়ে চলে গেলে পুলিশে জানান, দুর্ঘটনা বা জখম বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে তা পুলিশে নথিভুক্ত করানোর কাজ ওয়ার্ড মাস্টাররাই করে থাকেন। বাস্তবে সুপার বা সহকারি সুপারদের পক্ষে সেই সমস্ত ঠিক ভাবে দেখভাল করা যে সম্ভব নয় তা তারা বুঝতে পারছেন। তার উপর যেখানে ৮ জন ওয়ার্ড মাস্টার থাকার কথা সেখানে ১ জনের পক্ষে তা সামলানো সম্ভব নয়। ওয়ার্ড মাস্টার নজরুলবাবু বলেন, “আমি সকালের দিকে দায়িত্ব থাকি। বাকি ২টি সিফট-এ কোনও ওয়ার্ড মস্টার থাকেন না। সহকারি সুপাররাই কোনও রকমে সামলাচ্ছেন। কিন্তু সুষ্ঠু পরিষেবার জন্য ওয়ার্ড মাস্টার নিয়োগ করা প্রয়োজন।” |