পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ এক যাত্রীকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। সেই নির্দেশে না মানায় ফের রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলায় দায়ের হয়েছে জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। সোমবার রেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী তথা জলপাইগুড়ি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা সমিতির উপদেষ্টা রবিন গুণ। রবিনবাবু বলেন, “আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমষি করছে. সে কারণেই ফের মামলা দায়ের হয়েছে।” রেলের আইনজীবী প্রণব বন্দোপাধ্যায় জানান, বিষয়টি নিয়ে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আবেদন করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
ক্রেতা সুরক্ষা আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি বধর্মান যাওয়ার জন্য দার্জিলিং মেলের বাতানুকূল কামরায় (থ্রি টায়ার) টিকিট সংরক্ষণ করেছিলেন জলপাইগুড়ির স্টেশন রোডের বাসিন্দা দিলীপ দত্ত। তাঁর পরিবারের সাত জনের সংরক্ষিত টিকিট ছিল। সংরক্ষিত টিকিটে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার কথা ছিল। সেদিন জলপাইগুড়িতে ওই বাতানুকূল কামরাটি পাঠানো হয়নি বলে অভিযোগ। তাই তাঁদের গাড়ি ভাড়া করে নিউ জলপাইগুড়ি যেতে হয় বলে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে জানানো হয়।
পাশাপাশি, রেলের টিকিট সংরক্ষণের সময়ে দিলীপবাবুর যোগাযোগের নম্বর রেল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া থাকলেও, সেদিন যে ট্রেনে এসি থ্রি টায়ার কামরাটি থাকবে না সেটি তাঁকে আগাম জানানো হয়নি। কোনও সংবাদপত্রেও রেলের তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়নি বলে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন। তিনি এবং তাঁর পরিবারের সদসদের মানসিক হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বলে দাবি করে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেন।
রেল কর্তৃপক্ষের তরফে জাননো হয়েছে, সেদিন একটি দুর্ঘটনায় দার্জিলিং মেলের এসি কামরাটি হলদিবাড়ি যেতে পারেনি। ট্রেনের কামরা যে সে দিন থাকবে না সেটিও জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে আগে থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল বলে রেলের দাবি। অভিযোগকারীদের জলপাইগুড়ি থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত ভাড়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলার শুনানির পরে গত ৬ জুন ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক বৃন্দাবন মণ্ডল এবং জেসি মৌলিক রেল কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে বলা হয়, সাড়ে ৯ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণে, ১ হাজার টাকা মামলার খরচ এবং দেড় হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া রয়েছে। এক মাসের মধ্যে এই ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। রেল কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ মানেননি বলে ফের মামলা দায়ের হয়েছে জলপাইগুড়ি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে। |