পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে রাজনৈতিক অশান্তি চলছেই। তার মধ্যেই এ বার আরামবাগের সালেপুর-১ পঞ্চায়েতের রামনগর গ্রামে সিপিআইয়ের এক মহিলা প্রার্থীকে নিগ্রহ এবং ওই দলের এক নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে বলে মহকুমাশাসক, জেলাশাসক এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান ওই প্রার্থী এবং নেতা। আরামবাগ থানা অভিযোগ মানেনি। বিডিও প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সম্পূর্ণ রিপোর্ট পাঠানো হবে।”
রবিবার বিকেলে ওই গ্রামে সিপিআইয়ের জনা ১৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে তাদের পোস্টার ও পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া এবং কয়েক জন কর্মীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করে তৃণমূল। ওই রাতেই অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ গ্রামে হানা দেয়। চার জনকে গ্রেফতার করে। এর পরেই পুলিশ সিপিআইয়ের জেলা কমিটির সদস্য রঘুপতি বাড়ুইয়ের বাড়িতে হামলা চালায় এবং মহিলাদের কটূক্তি করে বলে অভিযোগ। রঘুপতিবাবুর বাড়ির পাশেই তাঁর দলের ওই পঞ্চায়েতের এ বারের প্রার্থী টিয়া পোড়েলের বাড়ি। পুলিশ সেখানে ঢুকেও তাঁকে নিগ্রহ করে প্রশাসনের কাছে অভিযোগে জানিয়েছেন টিয়াদেবী। রঘুপতিবাবুর দাবি, “তৃণমূল আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে গ্রামে পুলিশ পাঠাল। পুলিশ এসে গুণ্ডামি করল। আমাদের কয়েক জন কর্মীর বাড়িতেও ওরা হামলা চালায়।” টিয়াদেবী বলেন, “পুলিশ জোর করে ঘরে ঢুকে আমাকে নিগ্রহ করে।”
গোটা ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার সকাল আটটা থেকে তিন ঘণ্টা সিপিআইয়ের শ’দেড়েক মহিলা কর্মী-সমর্থক নানা গ্রামে মিছিল করেন। গ্রামে তদন্তের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই রাতে গ্রামে তল্লাশি চালানো হয়। সেই কাজে বাধা সৃষ্টি করে উল্টে পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।
অন্য দিকে, সোমবার সকালে পুড়শুড়ার চিলাডাঙ্গি পঞ্চায়েত এলাকার কংগ্রেসের জেলা পরিষদ প্রার্থী সুশান্ত মাইতি নিজের প্রচার সংক্রান্ত ব্যানার টাঙাতে গেলে ঘোলদিগরুই গ্রামে তৃণমূল সমর্থকদের হাতে প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় পুড়শুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি জয়দেব জানা-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। জয়দেববাবু অভিযোগ মানেননি। গত শনিবার রাজ্যের প্রাক্তন গ্রন্থাগার মন্ত্রী নিমাই মাল আরামবাগের কেশবপুরে নিজের বাড়িতে এসে তৃণমূলের হুমকির মধ্যে পড়েন বলে অভিযোগ তুলেছেন। যদিও এ কথা তিনি পুলিশকে জানাননি। তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনাটির কথা অস্বীকার করেছে। |