|
|
|
|
ইটের ভারে ধসল হোটেল, মৃত ১৩ |
সংবাদসংস্থা • সেকেন্দরাবাদ |
সবে ভোরের আলো ফুটেছে। হঠাৎই প্রচণ্ড জোরে একটা আওয়াজ। মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে মিশে গেল তিন তলা হোটেলটা। সেকেন্দরাবাদের রাষ্ট্রপতি রোডের ঘটনা। ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে তখন ভেসে আসছে চাপা পড়া মানুষদের আর্তনাদ। কী ঘটেছে বুঝতেই কিছুটা সময় চলে গেল স্থানীয় বাসিন্দাদের। তার পরেই উদ্ধারকাজে নেমে পড়েন তাঁরা। চলে আসে পুলিশ, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলাবাহিনী, দমকল ও সিআইএসএফ।
সোমবার রাত পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে ১৩ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ১৮ জনকে স্থানীয় গাঁধী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্তত ৪০ জন এখনও চাপা পড়ে রয়েছেন বলে প্রশাসনের আশঙ্কা।
পুরসভা সূত্রের খবর, হোটেলটা অন্তত ৮০ বছরের পুরনো। যদিও বাইরে থেকে দেখে হোটেলটার অবস্থা তেমন খারাপ কিছু মনে না হওয়ায় পুরসভার তরফে কোনও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। রক্ষণাবেক্ষণের গাফিলতির অভিযোগে বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মহানকালি পুলিশ। এই দুর্ঘটনায় বাড়ির মালিকের ছেলেও মারা গিয়েছেন। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন বাড়ির মালিক। এখন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই দুর্ঘটনার জন্য বাড়ির মালিকের পাশাপাশি পুরসভাকেও দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই এলাকায় একের পর এক বেআইনি বাড়ি গজিয়ে উঠেছে। পুরসভার তরফে মাঝেমধ্যে নোটিসও পাঠানো হয়। পরে ঘুষ দিয়ে সব কিছু মিটমাট করে নেওয়া হয়। |
|
চলছে আটকদের উদ্ধারের কাজ। সোমবার। ছবি: পিটিআই। |
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, তিন তলা সিটি লাইট হোটেলটার ছাদে রমজান উপলক্ষে হালিম বানানোর জন্য একটা নতুন ওভেন বসানো হচ্ছিল। এর জন্য অনেক ইট এনে রাখা হয়েছিল। তার ভার সহ্য করতে না পেরে সোমবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ হঠাৎই ছাদটা ভেঙে যায়। এর পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে পুরো হোটেলটাই। এর একটা অংশে বেকারি ছিল। দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই হোটেলের কর্মচারী। বাকিরা হোটেলে প্রাতরাশ খেতে এসেছিলেন।
আগের দিন রাতেও যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তিন তলা হোটেলটা। আজ সেখানে শুধুই ইট আর বালির ধ্বংসস্তূপ। সকালে ঘুম ভেঙে উঠে এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন সেকেন্দরাবাদের আর পি রোডের বাসিন্দারা। প্রথমে তাঁরাই উদ্ধারকাজে এগিয়ে আসেন। পরে আহতদের দেখতে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কিরণ কুমার রেড্ডি হাসপাতালে যান। নগর পরিকল্পনা বিভাগের কমিশনার জানিয়েছেন, এর পর থেকে ৬০ বছরের বেশি পুরনো শহরে যত বাড়ি আছে সেগুলোর ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মালিকদের নোটিস পাঠানো হবে।
কিন্তু প্রশাসনের এই আশ্বাসই সার। শেষ পর্যন্ত ফের ঘটে দুর্ঘটনা। মারা যান সাধারণ মানুষেরাই। |
|
|
|
|
|