জলা পরিষদের সভাধিপতির পদে থাকাকালীন লিয়েনে ছুটি নিয়েছিলেন উদয়শঙ্কর সরকার। সেই পদের মেয়াদ ফুরনোর পরে সোমবার স্কুলে গিয়েছিলেন সোমবার। কিন্তু তৃণমূলের লোকজনের বাধায় কাজে যোগ দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করলেন পুলিশে।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “উদয়বাবুকে গালিগালাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। কাজে যোগ দিতে গিয়ে এই পরিস্থিতির মুখে পড়ে তিনি ফিরে আসেন। তবে তাঁকে নিগ্রহ করা হয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছি।” তৃণমূলের যদিও দাবি, অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন পরে এলাকায় যাওয়া উদয়বাবুকে স্কুলে ঢুকতে দেননি স্থানীয় মানুষজনই। |
সিপিএমের বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা জেলা কৃষকসভার সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল জানান, দশ বছর জেলা সভাধিপতি থাকার পরে এ বার আর প্রার্থী হননি উদয়বাবু। রবিবার জেলা পরিষদের বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এ দিন তিনি নিজের স্কুল রায়নার রসুইখণ্ডে এমএপি ইনস্টিটিউটে যোগ দিতে যান। তিনি সেখানকার জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষক। আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, “এত দিন সভাধিপতি থাকার কারণে তিনি স্কুল থেকে ছুটি নিয়েছিলেন। এ দিন স্কুলে গেলে তৃণমূলের সমর্থকেরা তাঁকে আটকায়। আমরা পুলিশে অভিযোগ করেছি। পুলিশ কী পদক্ষেপ করে, তা দেখেই আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।”
তৃণমূলের জেলা নেতা শৈলেন্দ্রনাথ সাঁইয়ের দাবি, “উদয় সরকার এত দিন সভাধিপতি থেকেও রায়নার কোনও উন্নয়ন করেননি। অথচ তাঁর বাড়ি, কর্মস্থল এই রায়নাতেই। তাই স্থানীয় মানুষজন তাঁকে অপছন্দ করেন। সিপিএমের আমলে তাঁরা কোনও প্রতিবাদ জানাতে পারেননি। এ বার নানা অন্যায়-অবিচারের প্রতিশোধ নিতে তাঁরা উদয়বাবুকে স্কুলে ঢুকতে দেননি।” এলাকাবাসীর একাংশের থেকে অবশ্য জানা গিয়েছে, ওই স্কুলটিতে এক সময়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হত। সেটিকে মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা ও পাকা বাড়ি করার ব্যাপারে উদয়বাবুই উদ্যোগী হয়েছিলেন।
জেলা স্কুলসমূহের পরিদর্শক নীলিমা গিরি বলেন, “মন্ত্রী পদমর্যাদা সম্পন্নেরা পদে থাকাকালীন দীর্ঘ ছুটি নিতে পারেনি।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি মন্ত্রী পদমর্যাদা পান। তাই উদয়বাবুর ছুটি নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক কিছু নয় বলেই স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিনের ঘটনায় তিনি ‘ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত’ জানিয়ে উদয়বাবু বলেন, “গ্রামের মানুষ জানেন, ওই এলাকায় আমি উন্নয়নের কী কী কাজ করেছি। এ সব নিয়ে আর আমার কিছু বলার নেই।” |