|
|
|
|
বেহাল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক • যাত্রী-দুর্ভোগে আন্দোলন শুরু |
সংস্কারে টানা অবরোধের ডাক
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
বেহাল জাতীয় সড়ক মেরামতির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করার কথা ঘোষণা করা হল। রবিবার উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং চেম্বার অফ কমার্স রায়গঞ্জের সুপার মার্কেট এলাকায় বৈঠকের পর যৌথভাবে ওই কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলাশাসককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনগুলির বক্তব্য, কাল, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে রায়গঞ্জের শিলিগুড়িমোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ শুরু হবে। প্রশাসনের লিখিত আশ্বাস না মেলা অবধি অবরোধ চলবে।
আন্দোলনের কথা মাইকেও প্রচার করা হচ্ছে। জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “গত দুমাসে একাধিকবার জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে ও বৈঠক করে সড়ক মেরামত করার অনুরোধ করা হয়েছে। কোনও লাভ হয়নি। অবরোধ হলে তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।” এই প্রসঙ্গে জাতীয় সড়কের মালদহ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা মহম্মদ সইফুল্লা জানান, চারলেন জন্য জমি অধিগ্রহণে ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এতে মেরামতির কাজ শুরু করতে সাময়িক দেরি হচ্ছে। সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।
গত এপ্রিল মাস থেকে জেলার রায়গঞ্জ থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে এক হাত অন্তর গর্তের সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি পিচের চাদর উঠে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। প্রতিদিনই গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটের জেরে দুর্ভোগে পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা। গত দুমাসে রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি রুটের ৭টি বাস, ৫টি ট্রেকার ও ১২টি ট্রাক উল্টে ১০০ জন জখম হয়েছেন। ১২ বাস বিকল হয়ে গিয়েছে বলে বাস মালিকদের দাবি। |
|
খানাখন্দে ভরা রাস্তা। তরুণ দেবনাথের তোলা ছবি। |
গত মে ও জুন মাসজুড়ে রায়গঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল, পরিবহণ ধর্মঘট হয়। প্রশাসন এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সাতটি চিঠি দিয়েও লাভ হয়নি বলে বাসমালিক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। বাস মালিকদের অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক চন্দ বলেন, “লোকসান ও যাত্রীদের দুর্ভোগ রুখতে মঙ্গলবার অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে। প্রশাসনের লিখিত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।” আর চেম্বার অব কমার্সের জেলা সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, “বেহাল জাতীয় সড়কে যানজট ও দুঘটনার জেরে পণ্য আমদানি-রফতানি আটকে যাচ্ছে। সকলের স্বার্থেই অনির্দিষ্ট কালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।”
বাস মালিক ও ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলিও। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের অভিযোগ, “রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কারণেই চারলেন রাস্তার তৈরির জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি রুখতে আমরা এই আন্দোলনকে সমর্থন করেছি।” তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কংগ্রেস নিজেদের দায় এড়াতে পারে না। আমরা বন্ধ, অবরোধের বিরোধী হলেও এই এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থে আন্দোলনকে সমর্থন করেছি।”
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল বলেন, “রাজ্য ও কেন্দ্র দুই সরকারকেই রাজনীতির উপরে ওঠে জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু করার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। আমরা বাস মালিক ও ব্যবসায়ীদের পাশে আছি।” |
|
|
|
|
|